বরিশাল মেডিকেলে ত্রিমুখী সংঘর্ষ, শিক্ষানবিস ডাক্তারদের কর্মবিরতি

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ‘রোগী দেখতে যাওয়ার’ ঘটনা নিয়ে স্বজন, শিক্ষানবিস চিকিৎসক ও পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে।

বরিশাল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 May 2016, 05:37 AM
Updated : 18 May 2016, 05:59 AM

এ ঘটনায় বুধবার সকাল থেকে শিক্ষানবিস চিকিৎসকরা কাজ থেকে বিরত রয়েছেন। তবে অপর চিকিৎসকসহ অন্যরা সেবা অব্যাহত রেখেছেন। 

মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনায় পুলিশসহ অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন বলে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার সহকারী কমিশনার আজাদ রহমান জানান।

এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানার এক এএসআই মহিউদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

আহতরা হলেন- কোতোয়ালি থানার এসআই মোস্তফা, এএসআই মহিউদ্দিন, কনস্টেবল কাওসার, কনস্টেবল ফিরোজ, হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. পলাশ ও ডা. শাহে আলম এবং রোগীর ভাই এনামুল হক পান্নু।

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে এসি আজাদ রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বাকেরগঞ্জের সিরাজুল ইসলাম চুন্নু শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৪ নম্বর সার্জারী ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। রাতে সিরাজুলকে দেখতে তার ১০/১২ জন আত্মীয় হাসপাতালে আসেন।

“এ সময় ওয়ার্ডের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. পলাশ অতিরিক্ত লোক দেখে তাদের বেরিয়ে যেতে বললে স্বজনদের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সিরাজুলের স্বজনরা পলাশের শার্টের কলার ধরে টানা-হেঁচড়া ও মারধর করে।”    

খবর পেয়ে একদল ইন্টার্ন চিকিৎসক সিরাজুলের স্বজনদের ওয়ার্ডে আটকে পাল্টা মারধর করে বলে জানান তিনি।

আজাদ আরও বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে  ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় ইন্টার চিকিৎসকরা এএসআই মহিউদ্দিনের বিচার চেয়ে শ্লোগান দেয়।

পরে এএসআই মহিউদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় বলে জানান ‍তিনি।

এ বিষয়ে এএসআই মহিউদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হাসপাতালে আটকে রেখে রোগীর স্বজনদের মারধরের খবর পেয়ে আমি সেখানে যাই। আমি তাদের রক্ষার চেষ্টা করলে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা আমার উপর হামলা চালান।”

সিরাজুলের ছোট ভাই এনামুল হক পান্নু বলেন, “বড় ভাই গুরুতর আহত হলেও তার চিকিৎসা ঠিকমত হচ্ছিল না। আমি এর প্রতিবাদ করায় ইন্টার্ন চিকিৎসকরা আমাকে মারধর করেন ।”

অভিযোগ অস্বীকার করে ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের আহবায়ক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, অতিরিক্ত ভিজিটর বের হয়ে যেতে বললে রোগীর স্বজনরা চিকিৎসকদের মারধর ও লাঞ্ছিত করেন।এ নিয়ে ঝামেলা শুরু হলে পুলিশের এক এএসআই পরিস্থিতি শান্ত করার পরিবর্তে এক চিকিৎসকে লাঞ্ছিত করেন।

এএসআই মহিউদ্দিনকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া এবং শিক্ষানবিস চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে বুধবার সকাল থেকে শিক্ষানবিস চিকিৎসকরা কর্মবিরতি করছেন বলে জানান তিনি।