বজ্রপাতে এক দিনে ৩৩ মৃত্যু

কালবৈশাখীর মওসুমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঝড়-বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাতে অন্তত ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 May 2016, 02:53 PM
Updated : 12 May 2016, 07:16 PM

বৈশাখের শেষ ভাগে এক সপ্তাহ গরমের পর বৃহস্পতিবার রাজধানীসহ দেশের অনেক জেলায় বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায়। এর সঙ্গে হয় বজ্রপাতও, এতে ১২টি জেলায় প্রাণহানি ঘটে।

বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটেছে সিরাজগঞ্জ ও রাজশাহী জেলায়। উত্তরাঞ্চলের এই দুই জেলায় পাঁচজন করে মোট ১০ জন মারা যান। ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে মারা গেছেন দুই শিক্ষার্থী।

এছাড়া পাবনায় ৪, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৪ জন, গাজীপুরে ২, বগুড়ায় ২, হবিগঞ্জে ১, কিশোরগঞ্জে ৪, নাটোরে ২, নওগাঁয় ১, নীলফামারীতে ১ জন মারা গেছেন।

বিলুপ্ত সার্ক আবহাওয়া গবেষণা কেন্দ্রের সাবেক পরিচালক সুজিত কুমার দেবশর্মা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, কালবৈশাখী মৌসুমে বজ্রঝড় বেশি হয়। সাধারণত মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত বজ্রঝড় হয়ে থাকে। বর্ষাকালের পর কখনও কখনও অক্টোবর-নভেম্বর মাসেও তা দেখা যায়।

বাংলাদেশে প্রতি বছর বজ্রপাতে গড়ে দুই থেকে তিনশ’ মানুষের প্রাণহানি ঘটে বলে জানান তিনি।

আবহাওয়ার এই প্রপঞ্চের কারণ ব্যাখ্যা করে সুজিত দেবশর্মা বলেন, যখন কিউমুলোনিম্বাস মেঘ তৈরি হয়, তখনই বজ্রঝড় হয়ে থাকে।

“কিউমুলোনিম্বাস মেঘ হচ্ছে খাড়াভাবে সৃষ্টি হওয়া বিশাল আকৃতির পরিচালন মেঘ; যা থেকে শুধু বিদ্যুৎ চমকানো নয়, বজ্রপাত-ভারি বর্ষণ-শিলাবৃষ্টি-দমকা-ঝড়ো হাওয়া এমনকি টর্নেডোও হতে পারে।”

বায়ুমণ্ডলে বাতাসের তাপমাত্রা ভূভাগের উপরিভাগের তুলনায় কম থাকে। এ অবস্থায় বেশ গরম আবহাওয়া দ্রুত উপরে উঠে গেলে আর্দ্র বায়ুর সংস্পর্শ পায়, তখন গরম আবহাওয়া দ্রুত ঠাণ্ডা হওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি হয়ে বজ্রমেঘের সৃষ্টি হয়।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইলে ৩৭ মিলিমিটার সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এছাড়া নেত্রকোনা, কুমিল্লা, সিলেট, শ্রীমঙ্গল, রাজশাহী, ঈশ্বরদী, বগুড়া, বদলগাছী, তাড়াশ, রংপুর, দিনাজপুর, রাজাহাট, ভোলা ও পটুয়াখালীতে বৃষ্টি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে মংলা ও যশোরে ৩৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস,  ঢাকায় তাপপাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছিল।

শুক্রবারের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।

সিরাজগঞ্জ: রায়গঞ্জ ও উল্লাপাড়া উপজেলায় বজ্রপাতে নারী ও শিশুসহ পাঁচজন মারা গেছেন।

নিহতরা হলেন- রায়গঞ্জের চকপুর গ্রামের নূর নবীর মেয়ে নূপুর খাতুন (৮), বৈকণ্ঠপুর গ্রামের দারুজ্জামানের ছেলে কৃষক আব্দুল মোতালেব (৪২) ও হাসিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক আনোয়ার হোসেন (৪৫)।

উল্লাপাড়া উপজেলার শিমলা গ্রামের আব্দুল লতিফ (৩৫) ও বেতুয়া গ্রামের গৃহবধূ শাহিনুর বেগমের (৩০) মৃত্যুও হয়েছে বজ্রপাতে।

উল্লাপাড়া থানার ওসি দেওয়ান কৌশিক আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম বলেন, “বিকালে বৃষ্টির সময় বজ্রপাত হলে শিমলা গ্রামের লতিফ ও বেতুয়া গ্রামের শহিনুর ঘটনাস্থলেই মারা যাণ।”

রায়গঞ্জ উপজেলার পাঙ্গাসী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মাহে আলম বলেন, বিকালে শিশু নূপুর বাড়ির পাশে ইটভাটার কাছে খড়ি কুড়াচ্ছিল। বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু।

মোতালেব গ্রামের মাঠে গরু আনতে গেলে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় তার দুটি গরুও মারা পড়ে।

সদর উপজেলার বাগবাটি ইউনিয়নের বেজগাতি গ্রামের বাসিন্দা ও রায়গঞ্জের হাসিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বজ্রপাতে নিজ মাদ্রাসার মাঠে মারা যান বলেও মাহে আলম জানান।

ঢাকা: যাত্রাবাড়ীর কোনাপাড়ায় ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে মারা যান দুই শিক্ষার্থী।

তারা হলেন- রুম্মান হাসান লিঙ্কন (২১) ও সাহেদ ওরফে সোহাগ (২১)। সোহাগ আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন, লিঙ্কন  পলিটেকনিক্যালে পড়তেন।

নিহতদের বন্ধু মাজহারুল ইসলাম ঢাকা মেডিকলে কলেজ হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, বিকাল ৫টার দিকে তারা কয়েক বন্ধু কোনাপাড়ার কাঠেরপুল এলাকার কনকর্ড বালুর মাঠে ফুটবল খেলতে যান।

“সন্ধ্যার আগে বৃষ্টি শুরু হয়। সে সময় প্রচণ্ড শব্দে বজ্রপাত হলে লিংঙ্কন আর সোহাগ অচেতন হয়ে যায়।”

দুই শিক্ষার্থীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন বলে যাত্রাবাড়ী থানার ওসি মো. আনিসুর রহমান জানিয়েছেন।

কিশোরগঞ্জ: জেলার তিন স্থানে বজ্রপাতে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন- হোসেনপুর উপজেলার আড়াইবাড়িয়া গ্রামের কৃষক রহমত আলীর ছেলে ও হোসেনপুর ডিগ্রি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র শরীফুল ইসলাম শুভ (১৮), তাড়াইল উপজেলার বেলংকা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুছের স্ত্রী মমতা বেগম (৪০), বাজিতপুর উপজেলার কৈকুরি গ্রামের আবু বকরের স্ত্রী রেজিয়া খাতুন (৫৬) ও বাহের নগর গ্রামের মঞ্জিল মিয়ার ছেলে স্বপন (১৭)।

স্থানীয়রা জানায়, বিকালে বাড়ি থেকে হোসেনপুরের চর বিশ্বনাথপুর এলাকায় নিজেদের ধানের জমিতে ধান কাটা শ্রমিকদের জন্য খাবার পানি নিয়ে যায় শুভ। হঠাৎ বজ্রপাতে গুরুতর আহত হয়। হোসেনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে হোসেনপুর থানার ওসি মো. নান্নু মোল্লা জানিয়েছেন।

অন্যদিকে তাড়াইলের জাওয়ার ইউনিয়নের ইচা পশর গ্রামে নিজ বাড়ির সামনে ধান মাড়াই করার সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান মমতা। মমতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুছের স্ত্রী বলে জাওয়ার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম অংকুর জানান।

বাজিতপরের পিরোজপুর ইউনিয়নের কৈকুরি গ্রামে মাঠ থেকে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান রেজিয়া খাতুন। দিলালপুর ইউনিয়নের বাহের নগর গ্রামে জমিতে ধান কাটার কাজ করার সময় স্বপনের মৃত্যু হয়। পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাফর ইকবাল জুয়েল এবং দিলালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া নবেল এই দুটি মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: সরাইল ও বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় বজ্রপাতে জাহানারা বেগম (৪৮), শফিকুল ইসলাম (২৮), কবির হোসেন (৪০) ও শামছুল ইসলাম (৪০) মারা গেছেন।

বাঞ্ছারামপুর থানার ওসি অংশু কুমার দেব বলেন, দুপুর থেকে বিকালের মধ্যে বিভিন্ন সময় সোনারামপুর ইউনিয়নের চরশিবপুর গ্রামে জমিতে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে মজিবুর রহমানের ছেলে শফিকুল ইসলাম এবং কানাইনগর গ্রামে নদীতে গোসল করে বাড়ি ফেরার পথে সুলতান মিয়ার ছেলে কবির হোসেন মারা যান।

সরাইল থানার ওসি রূপক কুমার সাহা বলেন, দুপুর ১২টার দিকে নিজ বাড়ির উঠোনে কাজ করার সময় জাহানারা এবং ইছাপুর গ্রামের জোনাব আলীর ছেলে শামছুল ইসলাম জমিতে ধান কাটার সময় মারা যান।

রাজশাহী: এই জেলার তিন উপজেলায় মারা যান পাঁচজন।

তারা হলেন মোহনপুর উপজেলার গোছা গ্রামের রহমত আলী (২৮), হাটরা গ্রামের আব্দুল হাকিম (৫০), ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের সত্যেন কুমার সত্য (৩৫), দুর্গাপুর উপজেলার পালশা গ্রামের মর্জিনা বেগম (৩৫) ও গোদাগাড়ী উপজেলার গুশিরা গ্রামের লাইলী বেগম (৪০)।

মোহনপুর থানার ওসি বলেন, পুল্লাকুড়ি গ্রামে ঝড়-বৃষ্টির সময় মাঠে কর্মরত অবস্থায় সাতজন বজ্রপাতে আহত হন। তাদের উদ্ধার করে মোহনপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

দুর্গাপুর উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আজাদ রেজাউল করিম রেজা বলেন, বিকালে পালশা গ্রামের মর্জিনা বেগম বাড়ির পাশেই একটি আমবাগানে আম কুড়াতে যান।

“এ সময় বিকট শব্দে বজ্রপাত হলে মর্জিনার পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়।”

এ ঘটনার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আক্তারুন্নাহার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন লাশ দাফনের খরচ হিসেবে নগদ ১০ হাজার টাকা সহায়তা দেন বলে চেয়ারম্যান জানান।

অপরদিকে গোদাগাড়ী থানার ওসি এসএম ফরহাদ হোসেন বলেন, লাইলী বেগম মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতে আহত হন। তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

লাইলী পাকড়ী ইউনিয়নের গুশিরা গ্রামের মোয়াজ্জেম আলীর স্ত্রী বলে তিনি জানান।

পাবনা: সুজানগর ও বেড়া উপজেলায় বজ্রপাতে নানা-নাতনিসহ চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

নিহতরা হলেন- সুজানগর উপজেলার বাঘলপুর গ্রামের ময়েন উদ্দিন প্রাং (৬৭) ও তার নাতনি শিখা খাতুন (১২), দক্ষিণচর গ্রামের রইচ উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে শহিদুর রহমান মণ্ডল (৩৫) এবং বেড়া উপজেলার অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি।

সুজানগর উপজেলার রানীনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জিএম তৌফিকুল আলম পীযূষ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ঝড়বৃষ্টির সময় নানা-নাতনি ঘরের বারান্দায় বসে ছিলেন। বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।

আহমেদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন বিশ্বাস বলেন, শহিদুর রহমান বৃষ্টির মধ্যে পাটক্ষেতে নিড়ানির কাজ করছিলেন। তখন বজ্রপাতে তিনি মারা যান।

অন্যদিকে বেড়া উপজেলার মাসুমদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিরোজ হোসেন বলেন, বজ্রপাতে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। তবে তার নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

গাজীপুর: কাপাসিয়া উপজেলায় বজ্রপাতে এক কৃষিশ্রমিক ও এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন মো. সাত্তার আলী (২৬) ও রুবিনা (৪০)।

কাপাসিয়া থানার এসআই মো. শাহজাহান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সাত্তার আলী কাপাসিয়া উপজেলার উত্তরখামের গ্রামে আব্দুর রশীদের জমিতে ধান কাটছিলেন। বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু ঘটে।

সাত্তারের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার সাতান্না গ্রামে।

প্রায় একই সময় খিরাটি গ্রামের কাজল মিয়ার স্ত্রী গৃহবধূ রুবিনা মাঠ থেকে গরু নিয়ে ফেরার পথে বজ্রপাতে মারা যান।

নাটোর: লালপুর উপজেলার চারটি পৃথক স্থানে বজ্রপাতে এক নারীসহ দুজন নিহত ও দুইজন আহত হয়েছেন।

আম কুড়াতে গিয়ে উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের মোবারক হোসেন (২৪) এবং উত্তর লালপুর গ্রামের সাহারা বানু নিহত হন বলে লালপুর থানার ওসি আব্দুল হাই তালুকদার জানিয়েছেন।

এছাড়া কাজিপাড়া গ্রামের সাজেদুর রহমান ও মহরকয়া গ্রামের পাপিয়া খাতুন আহত হন। তাদের লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

বগুড়া: শেরপুর উপজেলায় বজ্রপাতে দুই ভাই মারা গেছেন। তারা হলেন সীমাবাড়ী ইউনিয়নের বেতগাড়ী গ্রামের হাদু সরকারের বড় ছেলে আনোয়ার হোসেন (৩৭) ও ছোট ছেলে আরিফুল ইসলাম (২৫)।

মো. হারেজ নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, দুই ভাই মাঠে ধান কাটছিলেন। বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই আনোয়ার মারা যান। হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরিফুলেরও মৃত্যু হয়।

নওগাঁ: আত্রাই উপজেলায় মারা যান এক বৃদ্ধ।

আত্রাই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শামসুল আলম বলেন, বিশিয়া গ্রামের আজাহার আলী (৬০) সন্ধ্যায় উঠোন থেকে ধান তুলছিলেন। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

হবিগঞ্জ: বানিয়াচং উপজেলার প্রতাপপুর গ্রামে বজ্রপাতে হাবিব মিয়া (২৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছে একই উপজেলার আরও ৮ জন।

স্থানীয়রা জানায়, হাবিব তার বাড়ির পাশের হাওরে বোরো ধান কাটছিলেন। বজ্রপাত হলে তিনি আহত হন। হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা বজলুর রহমান কৃষক হাবিবের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নীলফামারী: কিশোরগঞ্জ উপজেলায় মারা যান এক গৃহবধূ। তিনি হলেন ফুলেরঘাট গ্রামের কৃষিশ্রমিক আলম হোসেনের স্ত্রী লাল বিবি (৪০)।

মাগুড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদুল হোসেন সিহাব বলেন, দুপুরে ভারী বর্ষণের সময় লাল বিবি নিজের ঘরে সাংসারিক কাজ করছিলেন। হঠাৎ তার ঘরের উপর বিকট শব্দে বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়।

ঝালকাঠি: কাঁঠালিয়া উপজেলার বিশখালী নদীতে ইলিশ মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতের কবলে পড়ে এক জেলে নিখোঁজ হয়েছেন। নিখোঁজ ইব্রাহীম সরদার (৩২) আমুয়া ইউনিয়নের সরদার পাড়ার আশ্রাব আলীর ছেলে।

কাঁঠালিয়া থানার পরিদর্শক মো. জাহিদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রতিদিনের মতো  ওই যুবক নদীতে ইলিশ মাছ ধরতে যান। বজ্রাঘাতের পর তিনি নদীতে পড়ে যান।

বরিশাল থেকে ডুবরি দল এলেও ইব্রাহীমের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা জাহিদ।

[এই প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন নিজস্ব প্রতিবেদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বগুড়া, গাজীপুর, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নাটোর, পাবনা, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, ঝালকাঠী, নওগাঁ, নীলফামারী প্রতিনিধি]