রবি-নজরুলে তালগোল

রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উদযাপনে শিশুদের জন্য আবৃত্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে গিয়ে নাম বিভ্রাট ঘটিয়ে সমালোচনায় পড়েছে ঝালকাঠি জেলা শিশু একাডেমী।

পলাশ রায় ঝালকাঠি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 May 2016, 02:54 PM
Updated : 7 May 2016, 04:57 PM

প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত তিনটি গ্রুপে তিনটি কবিতা ঠিক করে গত বুধবার একাডেমীর পক্ষ থেকে শিক্ষার্থী পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে বিভিন্ন স্কুলে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে, তাতে কাজী নজরুল ইসলামের দুটি কবিতায় বসিয়ে দেওয়া হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম।

চিঠিতে কর্মসূচির বিবরণে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের জন্য ‘ক’ বিভাগে ‘খুকী ও কাঠবিড়ালী’; চতুর্থ থেকে ষষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের জন্য ‘খ’ বিভাগে ‘বীর পুরুষ’ এবং সপ্তম থেকে দশম শ্রেণি পড়ুয়াদের ‘গ’ বিভাগে ‘মানুষ’ কবিতায় কবির নামের জায়গায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম লেখা দেখা যায়। 

এর মধ্যে কেবল ‘বীর পুরুষ’ কবিতাটি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা, বাকি দুটো নজরুলের।

ঝালকাঠি জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় শনিবার অনুষ্ঠেয় এই প্রতিযোগিতার জন্য ওই চিঠি পাঠানো হয় জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তার স্বাক্ষরে।

এ ঘটনায় শিশু একাডেমীর ‘দায়িত্বহীনতা আর জ্ঞানের পরিধি’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ঝালকাঠি শহরের বিশিষ্টজনরা। ঝালকাঠি কবিতা চক্রের সাধারণ সম্পাদক মু. আল আমীন বাকলাই বিষয়টিকে ‘নিছক ভুল’ বলে মানতে নারাজ।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটা চরম দায়িত্বহীনতার প্রমাণ, বিষয়টিকে ভুল বলে মেনে নেওয়া যায় না।

“ভুল হলে কবির নামের বানান লেখায় কম্পিউটার টাইপে অক্ষরগত ভুল হতে পারত। কিন্তু নজরুল ইসলামের কবিতা রবীন্দ্রনাথের নামে লিখে প্রতিযোগিতার আহ্বান করার মতো বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”

‘ভুল নয়, জ্ঞানের অভাব’ থেকেই এমন ঘটনা ঘটেছে বলে মন্তব্য করেন ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক মনোয়ার হোসেন খান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “চিঠিটা পেয়ে আমি চরমভাবে হতাশ। ভুলের একটা সীমা থাকা দরকার। এটা ভুল নয়, জ্ঞানের অভাব।”

শিশু একাডেমীর মত সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে শিশুরা ‘এ ধরনের ভুল’ শিখবে- তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মনোয়ার।

শহরের বাসিন্দা রিয়াজুল হকের মেয়ে ওই অনুষ্ঠানের প্রতিযোগী।

বিয়াজুল ক্ষোভ প্রকাশ করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিষয়টি খুবই লজ্জার। শেখার জন্য মেয়েকে শিশু একাডেমীতে পাঠাই, কিন্তু তাদের শিক্ষা এমন হলে কীভাবে চলবে?”

ঝালকাঠির জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মো. জাহেদুল ইসলাম বলছেন, ‘তাড়াহুড়োয়’ এই বিভ্রাট ঘটেছে তাদের। 

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আসলে বিষয়টি একদম ভুলবশত হয়ে গেছে। ভুল চোখে পড়ার পরে চিঠিটা নতুন করে লিখে দিতে অফিস করণিককে বলা হয়েছিল।

“তাছাড়া নজরুল ও রবীন্দ্র জয়ন্তী একসাথে উদযাপনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল একবার। তাড়াহুড়োর মধ্যে তাই হয়তো নজরুলের কবিতায় ভুল করে কবির নাম রবীন্দ্রনাথ লেখা হয়েছে।”