সোনারগাঁয়ে বাবা-মায়ের পাশে শায়িত হলেন দিতি

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে নিজ গ্রামে বাবা-মার কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে চিত্র নায়িকা পারভীন সুলতানা দিতিকে।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 March 2016, 10:31 AM
Updated : 21 March 2016, 10:47 AM

সোমবার জোহরের নামাজের পর সোনারগাঁ পৌরসভার দত্তপাড়া গ্রামে নিজ বাড়ির পাশের মসজিদে তার শেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

জানাজায় উপস্থিত সোনারগাঁ থানার ওসি মো. মঞ্জুর কাদের বলেন, পারিবারিক কবরস্থানে বাবা আবুল হোসেন ও মা নুরজাহান বেগমের কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে দিতিকে।

এর আগে বেলা ১১টার দিকে দিতির মরদেহ দত্তপাড়ায় নিয়ে আসা হয়। এ সময় তার পরিবার, গ্রামবাসী ও ভক্তরা একনজর দেখার জন্য লোকজন ভিড় করেন। অনেকে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

জানাজায় পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজন ছাড়াও বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য শেখ মারুফ, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সারসহ প্রশানের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

দীর্ঘ দিন ক্যান্সারের সঙ্গে লড়ে রোববার ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান দিতি।

রোববার এশার নামাজের পর গুলশান আজাদ মসজিদে অনুষ্ঠিত হয় তার প্রথম জানাজা।  আর বিএফডিসিতে সোমবার সকালে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় জানাজা।

দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থতা বোধ করছিলেন মধ্য বয়সী অভিনেত্রী দিতি। দেশের বেশ কয়েকটি হাসপাতালেই চিকিৎসা নিয়ে সন্তুষ্ট হতে না পেরে মাদ্রাজ ইন্সটিটিউট অব অর্থোপেডিকস অ্যান্ড ট্রমাটোলজি হাসপাতালে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ভর্তি হন। সেখানকার চিকিৎসকরা জানান, তার মস্তিষ্কে টিউমার জন্ম নিয়েছে। ২৫ জুলাই ভর্তির পর সেখানেই সফলভাবে অস্ত্রোপচার হয় তার।

পরবর্তীতে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে আবারও মাদ্রাজ যান। টিউমার অপসারণ করা হলেও যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাননি। অস্ত্রোপচারের পর কেমোথেরাপি দেয়া হচ্ছিল তাকে। পরে দেশে ফিরে এসে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

দিতি দেশে ফেরার পরই তার চিকিৎসার্থে তার মেয়ের হাতে ১০ লাখ টাকার চেক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ইউনাইটেড হাসপাতালেই শেষ পর্যয়ন্ত চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

১৯৮৪ সালে নতুন মুখের সন্ধানেকার্যক্রমের মাধ্যমে ঢাকাই সিনেমাতে পা রাখেন দিতি। উদয়ন চৌধুরী পরিচালিত ডাক দিয়ে যাইছিল তার ক্যারিয়ারের প্রথম সিনেমা। দিতি অভিনীত মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র আমিই ওস্তাদ। ১৯৮৭ সালে সুভাষ দত্ত পরিচালিত ‘স্বামী-স্ত্রী’ ছবিতে অভিনয়ের সুবাদে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয় করেন দিতি। তার অভিনীত সিনেমাগুলোর মধ্যে ‘দুই জীবন’, ‘উছিলা’, ‘লেডি ইন্সপেক্টর’, ‘খুনের বদলা’,  ‘আজকের হাঙ্গামা’, ‘স্নেহের প্রতিদান’, ‘শেষ উপহার’, ‘অপরাধী’, ‘কালিয়া’, ‘কাল সকালেইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। তার শেষ মুক্তি পাওয়া সিনেমা 'সুইটহাটর্' চলচ্চিত্রের পাশাপাশি টিভি নাটকেও জনপ্রিয় মুখ ছিলেন দিতি। বেশ কয়েকটি টিভি সিরিয়ালেও অভিনয় করেছেন। রান্না বিষয়ক অনুষ্ঠানও উপস্থাপনা করেছেন। দিতি এক মেয়ে লামিয়া চৌধুরী এবং এক ছেলে দীপ্ত চৌধুরীকে রেখে গেছেন।