এরাও কি ‘বৃক্ষমানব’?

হাত-পায়ে গাছের শেকড়ের মতো বড় নখের দুজনের সন্ধান মিলেছে রংপুরে, তারা খুলনার পাইকগাছার আলোচিত ‘বৃক্ষমানব’ আবুল হোসেন বাজনদারের মতো একই রোগে আক্রান্ত কি না, তার পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

রংপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 March 2016, 11:17 AM
Updated : 10 March 2016, 11:36 AM

রংপুরের এই দুজন হলেন তাজুল ইসলাম (৪৮) ও তার ছেলে রুহুল আমীন (১০)। তারা চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছিলেন।

হাসপাতালের চর্ম ও যৌন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক নুরুন্নবী লাইজু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তাজুল ও রুহুল আমীন খুলনার সেই বৃক্ষমানব আবুল হোসেন বাজনদারের মতো ‘সিনড্রোমে’ আক্রান্ত কি না, সেটা আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের বুধবার বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”

চিকিৎসক জীবনে এমন রোগী প্রথম দেখার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, তাজুল ও রুহুলের হাত-পায়ের আঙুলের নখ স্বাভাবিকের চেয়ে বড় এবং তা গাছের শেকড়ের মত দেখতে। পায়ের তলার মাংসপেশী অনেক মোটা এবং তা ফেটে গেছে।

রংপুরের জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এপিএস-১ জাহাঙ্গীর আলমের নির্দেশে বিরল রোগে আক্রান্ত ওই পরিবারটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

 

পীরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের আব্দুল্লাহপুর গ্রামে তাজুলের বাড়ি।

বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার আগে তাজুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাবার কাছে শুনছি আমার জন্মের দুই মাস পর থাকি হাত-পায়ের নখগুলা বড় হওয়া শুরু হয়। ধীরে ধীরে তা গাছের শেকড়ের মতো হয়া গেইছে। ওষুধ খায়া কোনো উপকার হয় নাই।

“আমরা নিজের হাতে খাবার পাই না। আমার বউ (স্ত্রী) খাবার তুলি খোয়ায়। কাজ করব্যার না পায়া বাপ-বেটা ভিক্ষা করি সংসার চালাই।”

তিনি জানান, তার দুই ছেলে রুবেল মিয়া (১২) ও রুহুল আমিন (১০)। রুবেল সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে জন্ম নেয়। তবে রুহুল হাত-পায়ে বড় বড় নখ নিয়ে জন্মায়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে রুহুলের নখগুলা আরও বড় হতে থাকে।

শুধু পিতা-পুত্রই নন। তাদের পরিবারে এমন রোগে আক্রান্ত আরও রোগী রয়েছে। তার বড় ভাই বাছেদ আলীর (৫৫) অবস্থাও একই রকম। কিছুদিন আগে তার দুপা কেটে ফেলা হয়েছে। তার হাতের অবস্থাও তাদের মতোই।

এছাড়া তার বাবা আফাজ মুন্সিও ও তার দাদা এনায়েত উল্লাহ মুন্সিও এই রোগে আক্রান্ত ছিল বলে দাবি করেন তিনি।

পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিত্সক জিয়াউর রহমান জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই পরিবারটির স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ দিলে মঙ্গলবার সকালে তাদেরকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়েছিল। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাজুল ও তার ছেলে রুহুল আমীনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।