আদেশ না আসায় ১৩ বছর জেলে

উচ্চ আদালতের আদেশ কারাগারে না আসায় সাতক্ষীরার এক ব্যক্তি ১৩ বছর জেল খেটেছেন।

শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন সাতক্ষীরা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 March 2016, 06:49 PM
Updated : 2 March 2016, 06:49 PM

বুধবার বিকেল সোয়া ৫টায় সাতক্ষীরা জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান জোবেদ আলী (৭০)। তিনি কলারোয়া উপজেলার কয়লা গ্রামের কৃষক।

জেলা জজ আদালতের অতিরিক্ত পিপি ফাহিমুল হক কিসলু জানান, জোবেদ আলী ১৯৯৪ সালে তালা উপজেলার মানিকহার গ্রামে শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে গিয়ে মেয়ে লিলিকে (৮) বিষ খাইয়ে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তর হন। থানায় মামলা করেছিলেন তার শ্যালক কাশেম সরদার।

জোবেদ আলীর স্ত্রী ফরিদা খাতুন আত্মহত্যা করায় তাদের দুই মেয়ে লিলি ও রেক্সোনা নানাবাড়ি থাকত।

পিপি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ২০০১ সালে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জোবেদ আলীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

জোবেদ আলী উচ্চ আদালতে আপিল করে ২০০৩ সালে খালাস পান। কিন্তু কাগজপত্র নিম্ন আদালতে পৌঁছালেও ১৩ বছরেও তা কারাগারে পৌঁছায়নি।

জোবেদ আলী জানান, উচ্চ আদালতের রায়ের খবর তিনি জানতেন। তবু কেন ছাড়া পাচ্ছেন না এ বিষয়টা জানার চেষ্টা করেছেন কিন্তু কোনো জায়গা থেকে সাড়া পাননি।

সাতক্ষীরার আদালতে জোবেদের আইনজীবী ছিলেন জিল্লুর রহমান।

জোবেদ আলী তার এই আইনজীবীকেও অনেকবার খবর দিয়েছিলেন কিন্তু আইনজীবী মাত্র একবারই খবরটা পান; প্রায় ১৩ বছর পরে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি।

এরপর জিল্লুর রহমান তার মুক্তির দাবিতে আদালতে আবেদন করেন। বুধবার দুপুরে আদালতে শুনানি শেষে জোবেদ আলীকে মুক্তির নির্দেশ দেন অতিরিক্ত জেলা জজ আশরাফুল হক।

কারাগার ফটকে জোবেদের স্বজনরা তাকে গ্রহণ করেন।

এ সময় জোবেদ আলী সাংবাদিকদের বলেন, “আমি কাউকে দোষারোপ করব না। বিচারের ভার আল্লাহর উপর ছেড়ে দিলাম।”

ঘটনাটি তদন্তের জন্য কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন জেলা জজ আদালতের পিপি ওসমান গনি।