মঙ্গলবার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত থেকে মামলাটি শিশু আদালতে পাঠানো হয়।
এপিপি রাশেদ উন নবী আহসান জানান, মঙ্গলবার সকালে রাজশাহীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত-১ এ মামলাটি তোলা হলে নির্যাতিতদের বয়স ১৩ ও ১৪ বছর দেখে বিচারক একরামুল কবীর অভিযোগটি শুনানির জন্য গ্রহণ না করে ‘শিশু আদালতে’ পাঠিয়ে দেন।
এর আগে বিচারিক হাকিম আদালত থেকে সোমবার আজিজুল ইসলাম ও উজ্জ্বল নামের দুইজন জামিন পেয়ে যান বলে জানান তিনি।
আইনজীবী আহসান বলেন, শিশু নির্যাতনের ঘটনা উল্লেখ না করে মামলাটি সোমবার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে পাঠানো হয়।
পুলিশ ও আদালত সংশ্লিষ্ট একটি চক্রের যোগসাজসে মামলাটি শিশু আদালতে না পাঠিয়ে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে পাঠানো হয়েছিল বলে জানান তিনি।
শিশু আদালত পুলিশের পরিদর্শক রোবেকা খাতুন বলেন, ভিকটিম দুজনের বয়স ১৮ বছরের নিচে হওয়ায় মামলাটি তার কাছে জমা দেওয়ার কথা। কিন্তু মামলাটি সাধারণ আদালত পুলিশ পদিদর্শকের কাছে দেওয়া হয়েছিল।
“এছাড়া অভিযোগে শিশু আইনের কোনো ধারা না থাকায় সাধারণ আদালত পুলিশ পদিদর্শক মামলাটি জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত- ১ এ তোলেন।”
মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী এনামুল হক বলেন, নির্যাতিতদের বসয় ১৩ ও ১৪ হলেও মামলায় শিশু নির্যাতন আইনের কোনো ধারা দেওয়া হয়নি। সাধারণ মারপিটের ধারা দিয়ে মামলা আদালতে পাঠানো হয়েছে, যা ‘রহস্যজনক’।
আসামিপক্ষের আরেক আইনজীবী শাহীন শাহ বলেন, এটি ছিল একটি সাধারণ মারপিটের ঘটনা। সে অনুযায়ী মামলাটি সাধারণ আদালতে যায়। সাধারণ মারপিটের মামলা হিসেবে গ্রেপ্তার হওয়া আজিজুল ইসলাম ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী হিসেবে উজ্জ্বলকে আদালত জামিন দিয়েছে।
নির্যাতনের শিকার জাহিদ হাসান ও ইমন রাজশাহীর পবা উপজেলার বাগসারা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।
একটি মোবাইল ফোন চুরির ঘটনায় শুক্রবার সকালে ইমনকে ধরে নিয়ে যায় রাকিব নামের একজন। এরপর তারা কয়েকজন মিলে ইমনকে মারধর করলে সে মোবাইল চুরির দায় জাহিদের উপর চাপিয়ে দেয়।
দুপুরে জাহিদকে ধরে নিয়ে যায় নাসির, সাগর, পলাশ, জামাল, রাজ্জাক, অনিক ও তুহিনসহ কয়েকজন। পরে হাত-পা বেঁধে রাত ১০টা পর্যন্ত মারধর করে। পরে সে দৃশ্যের ভিডিও ধারণ করে।
ওই ঘটনায় শনিবার রাতে পবা থানায় এক সেনা ও একজন র্যাব সদস্যসহ ১৩ জনকে আসামি করে মামলা করেন জাহিদের বাবা ইমরান আলী।
মামলায় রোববার ভোরে চৌবাড়িয়া গ্রাম থেকে আজিজুর রহমান (৩০) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আসামিদের মধ্যে নাসির উদ্দিন সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট। তিনি বগুড়া ক্যানটনমেন্টে দায়িত্বরত। আর পুলিশ কনস্টেবল সাগর বর্তমানে র্যাব সদর দপ্তরে আছেন।
দুজনই ছুটিতে চৌবাড়িয়ায় গ্রামের বাড়ি গিয়ে এ কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা থানার এসআই আবু তাহের জানিয়েছেন।