অবসরের পর রায় লেখার ভুল আর নয়: প্রধান বিচারপতি

অবসরের পর রায় লেখা সংবিধান পরিপন্থি- এ বক্তব্য নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার মধ্যে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা জোর দিয়ে বলেছেন, ওই ভুল আর করতে দেবেন না তিনি।

সিলেট প্রতিনিধিমৌলভীবাজার ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Jan 2016, 03:35 PM
Updated : 22 Jan 2016, 03:35 PM

বৃহস্পতিবার রাতে মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির বার্ষিক নৈশভোজে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “রিটায়ারমেন্টের পরে আপনাকে আমি কোনো পাবলিক ডকুমেন্টে হাত দিতে দেব না। সেইটিতেই প্রশ্ন। আর এই বিচারক …  রিটায়ারমেন্টের পরে তার ব্যক্তিগত কী ইন্টারেস্ট? কেন রায় লেখার জন্য ইন্টারেস্ট থাকবে?

“এটা কোর্ট দেখবে। … এখানে ভুল একটা নীতি চলে আসছে। একজন চুরি করেছে বলে আমিও চুরি করবো? এ অন্যায় করেছে বলে আমিও কি অ্যালাউ করবো অন্যায়টা ইয়ে করার? নো। আই উইল নট অ্যালাউ টু পারপেচুয়েট দিজ রংস।”

মঙ্গলবার দেশের ২১তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে একবছর পূর্তি উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে রায় লিখতে কোনো কোনো সহকর্মীর দেরিতে উষ্মা প্রকাশ করেন বিচারপতি সিনহা।

তিনি বলেন, “কোনো কোনো বিচারপতি রায় লিখতে অস্বাভাবিক বিলম্ব করেন। আবার কেউ কেউ অবসর গ্রহণের দীর্ঘদিন পর পর্যন্ত রায় লেখা অব্যাহত রাখেন, যা আইন ও সংবিধান পরিপন্থি।”

তার এ বক্তব্যে বিএনপি নেতাদের পাশাপাশি তাদের সমর্থক আইনজীবীরা জোর সমর্থন দিয়ে বলছেন, এর মধ্য দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক বাতিলের রায় ‘অবৈধ’ প্রমাণিত হয়েছে।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম মনে করেন, ন্যায়বিচার পাওয়ার উপর গুরুত্ব দিতে গিয়ে এই বক্তব্য এসেছে প্রধান বিচারপতির। তবে ঘোষিত রায় পরে লেখা বেআইনি মনে করছেন না তিনি। সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদও বিচারপতিদের অবসরের পর রায় লেখার দীর্ঘদিনের এই চর্চায় কোনো সমস্যা দেখছেন না।

মৌলভীবাজার পৌর জনমিলন কেন্দ্রে নৈশভোজে নিজেদের ‘অনেক ভুল ও অজ্ঞতার’ কথা তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আমাদের সংশোধিত হতে হবে। আমাদের অনেক ভুল; আমরা অনেক জানি না। আমাদের আইন-সংবিধান রক্ষা করতে হলে তাদেরকে … সম্মান দেখাতে হবে।”

</div>  </p><p>জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আব্দুল মোছাব্বিরের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা ও দায়রা জজ মো. শফিকুল ইসলাম, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের জেলা জজ মোতাহির আলী, জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহ জালাল।</p><p>সভায় জেলা বারের নবীন-প্রবীন পাঁচ শতাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। </p><p><strong>‘ঈর্ষণীয় সাফল্যের পথে বাংলাদেশ’</strong></p><p>বাংলাদেশ জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিক্ষা, প্রযুক্তি ও অর্থনীতির ক্ষেত্রে ঈর্ষণীয় সাফল্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে এ সাফল্যকে সুদৃঢ় করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা।</p><p>শুক্রবার দুপুরে সিলেটে মদনমোহন কলেজের ৭৫ বছর পূর্তি উৎসবের দ্বিতীয়দিনে কীর্তিমান শিক্ষক ও কৃতি শিক্ষার্থীদের সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।</p><p>অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে প্রধান বিচারপতি বলেন, “তাকে বিশ্বের সেরা ১০ জন সফল রাষ্ট্রনায়কের একজন বলে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।”</p><p>মানসম্পন্ন শিক্ষাই বুদ্ধিভিত্তিক উন্নয়ন, অসাম্প্রদায়িক জীবনবোধ ও গভীর দেশপ্রেম জাগ্রত করতে পারে মন্তব্য করে এস এক সিনহা বলেন, “আমরা ছাত্রবান্ধব শিক্ষক চাই। শিক্ষকরা হবেন ছাত্রদের আদর্শ। ছাত্র-শিক্ষক সুসম্পর্ক আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঈর্ষণীয় পর্যায়ে পৌঁছাবে।”</p><p>মদন মোহন কলেজের অধ্যক্ষ ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদে সরকার দলীয় হুইপ শাহাব উদ্দিন, সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেছা হক, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার সৈয়দ আমিরুল ইসলাম, জেলা ও দায়রা জজ মনির আহমদ পাটোয়ারি ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ই ইউ শহিদুল ইসলাম শাহিন।</p>