শিবগঞ্জ থানার ওসি আহসান হাবিব জানান, হামলার ঘটনার পর বৃহস্পতিবার রাতে মসজিদের কোষাধ্যক্ষ সোনা মিয়া থানায় ওই মামলা দায়ের করেন।
“মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে,” বলেন ওসি।
এদিকে পুলিশ শুক্রবার ভোরের দিকে ওই এলাকা থেকে দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
এরা হলেন - সৈয়দ জামগড়া গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে আনোয়ার হোসেন (৪৮) ও হরিপুরের আব্দুল মান্নানের ছেলে জুয়েল (২৫)।
“তাদের আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করছি। এখনও গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি,” বলেন ওসি।
বৃহস্পতিবার মাগরিবের নামাজের সময় কিচক হরিপুর গ্রামের আল মস্তেফা মসজিদে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলায় নিহত হন ওই মসজিদের মুয়াজ্জিন মোয়াজ্জেম হোসেন (৭০)। আহত হন ইমাম শাহিনুর রহমান (৬০) ও নামাজ পড়তে আসা স্থানীয় বাসিন্দা তাহের মিস্ত্রি (৫০) ও আফতাব আলী (৪০)।
মুসল্লিরা যখন সিজদায়, তখনই তিন যুবক গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে জানিয়েছেন।
ওসি জানান, মসজিদের ভেতরে পয়েন্ট ২২ বোরের আটটি গুলির খোসা পেয়েছেন তারা। মসজিদের একটি স্তম্ভে দেখা গেছে তিনটি গুলির চিহ্ন।
নিহত মোয়াজ্জেম হোসেনের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেজাউল করিম শুক্রবার দুপুরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাঁ হাত থেকে একটি গুলি বের করা হয়েছে। আরেকটি গুলি তার ডান চোখ দিয়ে ঢুকে অন্য দিক দিয়ে বেরিয়ে গেছে।”
মোয়াজ্জেমের লাশ দুপুরেই তার চাচা এনামুল হকের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
আগের সন্ধ্যার গুলির ঘটনার পর থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে শিবগঞ্জে। ওই মসজিদের আশেপাশে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হলেও এমন ঘটনায় হতবাক হরিপুরের বাসিন্দারা।
হামলাকারী কারা, তা পুলিশ কিংবা স্থানীয়দের কেউ তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করতে পারেনি। স্থানীয়রা বলছেন, ওই এলাকায় শিয়াদের সঙ্গে সুন্নিদের কোনো ধরনের বিরোধ ছিল না।
এক মাস আগে পুরান ঢাকার হোসাইনী দালানে শিয়া সমাবেশে হামলার মতোই বগুড়ার ঘটনার দায় স্বীকার করে মধ্যপ্রাচ্যের উগ্রপন্থি দল আইএস বার্তা দিয়েছে বলে খবর এসেছে। অবশ্য বাংলাদেশে আইএসের কোনো তৎপরতা নেই বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।