মনিপুরি রাসলীলা বুধবার

মনিপুরি সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব রাসলীলা বুধবার। এ উপলক্ষে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

মৌলভীবাজার প্রতিনিধিকামরুল আম্বিয়া, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Nov 2015, 02:05 AM
Updated : 25 Nov 2015, 02:52 AM

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ও আদমপুরে এই উৎসব সাড়ম্বরে উদযাপিত হবে।

‘মনিপুরি মহারাসলীলা সেবাসংঘের’ সভাপতি অ্যাডভোকেট চাঁদ মুরারী সিংহ স্বপন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিষ্ণুপ্রিয়া মনিপুরি সম্প্রদায় এ বছর মাধবপুর জোড়া মণ্ডপ প্রাঙ্গণে ১৭৩তম উৎসব উদযাপন করবে।

“শ্রীকৃষ্ণের মহারাসলীলা অনুসরণে এই উৎসব উদযাপন করা হয়।”

উৎসবের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বেলা ১১টা থেকে গোধূলিলগ্ন পর্যন্ত রাখাল নৃত্য; সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত গুণীজন সংবর্ধনা, আলোচনা সভা ও  সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান; রাত সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত নটসংকীর্তন; রাত ১১টা থেকে পরদিন বৃহস্পতিবার ঊষালগ্ন পর্যন্ত ‘শ্রীকৃষ্ণের মহারাসলীলানুসরণ’ অনুষ্ঠান।

চাঁদ মুরারী জানান, অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেননের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

এছাড়া সাবেক চিফ হুইপ মো. আব্দুস শহীদ, জেলা পরিষদ প্রশাসক আজিজুর রহমান, জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহ জালাল, কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রফিকুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম প্রমুখ থাকবেন বলে আশা করছেন চাঁদ মুরারী।

উৎসব উদযাপন কমিটি ২০১৫-এর আহ্বায়ক বীরেন্দ্র সিংহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, মৈতৈ মনিপুরি সম্প্রদায় এ বছর ৩০তম উৎসব করবে আদমপুরের তেতইগাঁও উন্মুক্ত মঞ্চে।

এখানেও একই ধরনের কর্মসূচি রয়েছে।

বীরেন্দ্র সিংহ জানান, এখানে প্রধান অতিথি হিসেবে হুইপ শাহাব উদ্দিনের থাকার কথা রয়েছে।

অন্যদের মধ্যে মৌলভীবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. আব্দুল মতিন, জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসানসহ জেলার শীর্ষস্থানীয় সরকারি কর্মকর্তারা অনেকেই উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করছেন বীরেন্দ্র সিংহ।

এছাড়া এ বছর প্রথমবারের মতো মৈতৈ মনিপুরিরা আদমপুরের মনিপুরি কালচারাল কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে একটি উৎসব আয়োজন করেছে বলে জানান ওই আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব রানাবাবু সিংহ।

প্রতিবছর এই উৎসবে সারাদেশ থেকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার হাজার হাজার মানুষ যোগ দেয়।

মহারাসলীলা সেবাসংঘের সাধারণ সম্পাদক নৃপেন্দ্র কুমার সিংহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অনেক বছর ধরেই রাস উৎসব উপলক্ষে নানা সম্প্রদায়ের হাজার হাজার লোকজন আসে।

“নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর, কবি-সাহিত্যিক, সাংবাদিক, দেশি-বিদেশি পর্যটক, বরেণ্য জ্ঞানী-গুণী লোকসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা উৎসব প্রাঙ্গণ।”

ইতোমধ্যেই ‘মনিপুরি সম্প্রদায়ের পুণ্যস্থান মাধবপুর ও আদমপুরের’ মণ্ডপগুলো সাদা কাগজের নকশায় সেজে উঠেছে উৎসব উপলক্ষে।

অ্যাডভোকেট চাঁদ মুরারী সিংহ স্বপন রাস উৎসবের গোড়াপত্তনের ইতিহাস পর্যালোচনা করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ১৭৭৯ সালে  মনিপুরের মহারাজা ভাগ্যচন্দ্র স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে এক ধরনের নৃত্যগীত প্রর্বতন করেন। তা-ই মনিপুরি নৃত্য, যা রাস-উৎসবের প্রধান আকর্ষণ।

তিনি আরও বলেন, ১৮৪২ সাল থেকে কমলগঞ্জের মনিপুরি অধ্যুষিত মাধবপুর জোড়া মণ্ডপে উদযাপিত হয়ে আসছে মনিপুরিদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব এই রাসলীলা বা রাস-উৎসব।