‘কারও করুণা নয়, বাবার হত্যার বিচার চাই’

একুশ অগাস্টের গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও অনেকে হারিয়েছেন ছেলে, স্বামী ও প্রিয়তম বাবা।

চাঁদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 August 2015, 02:46 PM
Updated : 21 August 2015, 02:46 PM

২০০৪ সালে ওই হামলার পর ১১ বছর পেরিয়ে গেলেও অপরাধীরা শাস্তি না পাওয়ায় এখনও বিচারের অপেক্ষায় রয়েছেন তারা।

ওই ঘটনায় নিহত ২৪ জনের মধ্যে ছিলেন চাঁদপুরের আওয়ামী লীগ কর্মী আতিকুল ইসলাম ও কুদ্দুছ পাটোয়ারী। হামলার একাদশ বর্ষপূর্তিতে একটাই দাবি-হামলাকারীদের বিচারের কথা বলেন তাদের স্বজনরা।

জনসভায় গ্রেনেড হামলার মতো অপরাধের শাস্তিতে এত বিলম্ব হলে তা জঙ্গি ও দুষ্কৃতিকারীদের উৎসাহিত করবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।

শুক্রবার চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার পাঁচআনি গ্রামের আতিকুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে কথা হয় তার স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে।

এখনও খুনিদের শাস্তি না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন আতিকের স্ত্রী লাইলী বেগম ও বড় ছেলে মিথন সরকার।

মিথন বলেন, “আমরা কারও করুণা চাই না, পিতা হত্যার বিচার চাই।”

নিহত আতিকের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে তানিয়া আক্তারও দ্রুত বাবার হত্যাকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান।

মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মনজুর আহমদ মঞ্জু বলেন, সরকারি সহায়তায় আতিকের পরিবারে এখন স্বচ্ছলতা ফিরেছে। তাদের এখন একটাই দাবি- গ্রেনেড হামলার বিচার।

ওই হামলার দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “যত দিন পর্যন্ত গ্রেনেড হামলাকারীদের বিচার না হচ্ছে ততদিন জঙ্গিদের এই ধরনের আরও কর্মকাণ্ডের আশঙ্কা রয়ে যাবে।”

এদিকে ছেলে হত্যার বিচার না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়েই পৃথিবী ছেড়েছেন ওই হামলায় নিহত হাইমচর উপজেলার পূর্ব চরকৃষ্ণপুর গ্রামের কুদ্দুছ পাটোয়ারীর মা আমেনা বেগম।

ওই হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি জানিয়ে আসা এই বৃদ্ধা ২০১৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বার্ধক্যজনিত রোগে মারা যান।

কুদ্দুছের বড় ভাই হুমায়ুন কবির পাটোয়ারী আক্ষেপ করে বলেন, “গ্রেনেড হামলায় আমার ভাইসহ আরও যারা নিহত হয়েছেন তাদের হত্যার ন্যায়বিচার হলে মায়ের আত্মা শান্তি পাবে। বেঁচে থাকতে তিনি বার বার সে কথাটিই বলতেন।”

হাইমচর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নূর হোসেন পাটোয়ারী জানান, গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে ২১ অগাস্ট হাইমচরে দিনব্যাপী কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

নিহতদের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন, শোক র‌্যালি, কালো ব্যাজ ধারণ, আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেছিলেন তারা।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে ২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী জনসভায় ওই হামলায় দলের কেন্দ্রীয় নেত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। তখনকার বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনার শ্রবণেন্দ্রীয় ওই হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

গ্রেনেডের স্প্লিন্টারবিদ্ধ হয়ে পঙ্গু হন অনেকে। বিভিন্নভাবে আহত হন বহু ব্যক্তি, যাদের অনেকেরই স্বাভাবিক জীবনে ফেরা হয়নি।