সাংবাদিক উৎস হত্যা: ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

রংপুরের স্থানীয় দৈনিক যুগের আলো পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক মশিউর রহমান উৎস হত্যার প্রায় তিন বছর পর আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।

রংপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Sept 2018, 02:49 PM
Updated : 17 Sept 2018, 02:49 PM

সোমবার বিকালে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আরিফা ইয়াসমিন মুক্তার আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয় বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (দক্ষিণ) এসআই আবু হোসেন জানিয়েছেন।

অভিযোগপত্রে আসামিদের সবাইকে মাদক ব্যবসায়ী বলে দাবি করা হয়।

এরা হলেন জহিরুন্নেছা জুঁই ওরফে গেদি, তার সহযোগী রংপুর নগরীর খামার এলাকার এলিন, রিপন, তার ভাই রুপম, শুভ কুমার, মিঠাপুকুরের বলদিপুকুরের রুবেল হেমরম, গেদির ননদ মিঠাপুকুরের বৈরাগীগঞ্জের রোখসানা ও তার ছেলে রুবেল।

আট আসামির মধ্যে ছয়জন জামিনে রয়েছেন। 

অভিযোগপত্রের বরাত দিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবু হোসেন বলেন, রংপুর নগরীর চারতলা মোড়ের বাসিন্দা ও পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী জহিরুন্নেছা গেদির সঙ্গে সাংবাদিক মশিউর রহমান উৎসের পরিচয় ছিল। গেদির সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে অন্য আসামিদের সহযোগিতায় তারা উৎসকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

“পরিকল্পনা অনুযায়ী উৎসকে হত্যার জন্য জহিরুন্নেছা জুঁই ওরফে গেদি ৩ লাখ ৬০ হাজার চুক্তি করেন বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়।”

অভিযোগপত্রে বলা হয়, গেদির ননদ মিঠাপুকুরের বৈরাগীগঞ্জের মাদক ব্যবসায়ী রোখসানা ২০১৫ সালের ২৩ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১০টায় মোবাইল ফোনে উৎসকে তার বাড়িতে ডেকে নেন। উৎস রাত ১১টা পর্যন্ত রোখসানার বাড়িতেই ছিলেন। স্থানীয় চুহড় উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ব্যাডমিন্টন খেলছিল রোখসানার ছেলে রুবেল। রাত সাড়ে ১১টায় উৎসকে সেখানে নিয়ে যান রোখসানা।

কিছুক্ষণ পর সেখানে আসেন এলিন, রুবেল হেমরোম, রিপন, রূপম ও শুভ যান। সেখানে সকলে গল্পগুজব করে রাত দেড়টার দিকে এলিন ও উৎস ছাড়া রুবেল হেমরোম, রিপন, রূপম ও শুভ হেঁটে নগরীর দিকে রওনা হয়, বলেন তদন্ত কর্মকর্তা আবু হোসেন। তারা হেঁটে সিটি করপোরেশনের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে ধর্মদাস এলাকায় আঞ্চলিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের কাছে পৌঁছার পর এলিনকে ফোন করেন।

এরপর এলিনকে নিয়ে উৎস মোটসাইকেলে করে নগরীর দিকে রওনা দেন।

আবু হোসেন বলেন, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের কাছে পৌঁছলে এলিন মোটরসাইকেল থামাতে বলেন। মোটরসাইকেল থামানোর সঙ্গে সঙ্গে রুবেল হেমরোম ধারালো অস্ত্র দিয়ে উৎসর মাথায় উপর্যুপরি কোপ মারেন। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর উৎসর লাশ একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে তারা চলে যান।

তিন আসামি আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন বলে জানান এসআই আবু হোসেন।

এ ঘটনায় উৎসর মা নুরজাহান বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

তদন্ত কর্মকর্তা জানান, তদন্তকালে রূপম, রিপন, শুভ কুমার, এলিন, রুবেল হেমরোম, গেদি ও রোখসানাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বেশ কিছুদিন পর তারা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে বেরিয়ে আসেন।

খুনিরা উৎসর মোটরসাইকেলের যন্ত্রাংশ খুলে বিভিন্ন মোটরসাইকেল মেকারের কাছে বিক্রি করে দেন। তদন্তে তা উদ্ধারও করা হয়েছে বলে জানান এস আই আবু হোসেন।