ধর্ম অবমাননার অভিযোগে ভোলায় ফের হামলা-সংঘর্ষ

ফেইসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে আবারও হামলা এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে ভোলায়।

ভোলা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 May 2020, 06:30 PM
Updated : 15 May 2020, 06:40 PM

শুক্রবার জুমার নামাজের পর মনপুরার চৌমুহনী বাজারে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষের এ ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

পরে পুলিশ ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে বলে মনপুরা থানার ওসি সাখাওয়াত হোসেন জানান।

তিনি বলেন, যে যুবকের বিরুদ্ধে অবমাননাকর ফেইসবুক পোস্ট দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

হিন্দু সম্প্রদায়ের ওই যুবক স্থানীয় চৌমুহনী বাজারে মাছের ব্যবসা করেন। তিনি রামনেওয়াজ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের একজন সাবেক ইউপি সদস্যের ছেলে।

স্থানীয়দের অভিযোগের বরাত দিয়ে ওসি বলেন, বৃহস্পতিবার ওই যুবকের ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ‘মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে’ একটি পোস্ট দেওয়া হয়।

“এর জের ধরে আজ জুমার নামাজের পর উপজেলার রামনেওয়াজ জামে মসজিদ, কাউয়ারটেক কিল্লার পাড় জামে মসজিদ ও চৌমুহনী জামে মসজিদের মানুষ মিছিল করে রামনেওয়াজ চৌমুহনী বাজারে জমায়েত হয়।

“মিছিলের কিছু লোক বাজারে ওই যুবকের দোকানে হামলা চালালে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে বাধা দেয়, তাতে সংঘর্ষ শুরু হয়। ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে।”

পরে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেলিনা আকতার চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস ও রামনেওয়াজ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমানত উল্লা আলমগীর ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন।

সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে জহির, সাইফুল, করিম, আল আমিন, রাহাত ও ছোট করিমের নাম জানা গেছে। তারা সবাই উপজেলার মনপুরা ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দা বলে ওসি জানান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস বলেন, “ফেইসবুকে মন্তব্য করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মনপুরায় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। জুমার নামাজের পর চারিদিক থেকে মিছিল করে এসে মানুষ উত্তেজিত হয়ে প্রতিবাদ করে। কিছু উশৃঙ্খল মানুষ পরিস্থিতিকে উত্তেজিত করে। সবাইকে সাথে নিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে।”

এর আগে গত বছরের ২০ অক্টোবর ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় এক হিন্দু তরুণের ফেইসবুক আইডি ‘হ্যাক করে অবমাননাকর’ বক্তব্য ছড়ানোর পর ‘মুসলিম তাওহিদী জনতা’র ব্যানারে সমাবেশ থেকে পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছিল কয়েকশ মানুষ।

ওইদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে এক মাদ্রাসাছাত্রসহ আন্তত চারজন নিহত হন, আহত হন ১০ পুলিশ সদস্যসহ শতাধিক।

আরও খবর