চোটের ধাক্কায় তিন জনকে হারিয়ে দলের আকার হয়ে পড়েছিল ছোট। শক্তি বাড়াতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলে যুক্ত করা হয়েছে অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ ও পেসার তাসকিন আহমেদকে।
গত দুই বছরের বাস্তবতায় তিন সংস্করণ মিলিয়ে বাংলাদেশের সেরা পেসার নিঃসন্দেহে তাসকিন আহমেদ। তবে এই সীমানায় তৃপ্ত থাকার মানসিকতা তার নেই। অনেক দিন থেকেই বলছেন, নিজেকে তিনি দেখতে চান বিশ্বসেরাদের উচ্চতায়। নতুন করে সেই স্বপ্নের পিছু ছুটতে প্রস্তুত তিনি চোট কাটিয়ে পুরো ফিট হয়ে।
“প্যাট কামিন্স ফাস্ট বোলার হয়ে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক, আপনি…”, প্রশ্নটা শেষ করতেও দিলেন না তাসকিন আহমেদ, চওড়া হাসিতে কৌতুকের সুরে বললেন, “মার খাওয়াতে চান নাকি?” টেস্ট অধিনায়কত্ব এখন দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে আলোচিত প্রসঙ্গ। সেখানে নিজের নাম শুনে মজাটুকুই খুঁজে পেলেন তিনি। হাসতে হাসতে আরেকটি কথাও তিনি বললেন বটে। তবে হাসিমুখে বললেও সেখানে মজা নেই, বরং আছে স্বপ্ন সত্যি করার প্রতিজ্ঞা!
কাঁধের চোটে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের মাঝপথে দেশে ফেরার পর থেকে মাঠের বাইরে আছেন তাসকিন আহমেদ। গতি, আগ্রাসন আর কার্যকারিতার জন্য এই পেসারের কথা খুব মনে পড়ছে অ্যালান ডোনাল্ডের।
নিজেকে নতুন করে গড়ে নেওয়া তাসকিন আহমেদই যে এখন বাংলাদেশের পেস আক্রমণের নেতা, তা নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ নেই। গতিময় এই পেসারের অনুপস্থিতি তাই দলের জন্য বড় এক ধাক্কা। আঙুলের চোটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে খেলা হবে না পরিপূর্ণ অলরাউন্ডার হয়ে ওঠার পথে থাকা মেহেদী হাসান মিরাজেরও। তাদের অভাব অনুভব করলেও অধিনায়ক মুমিনুল হক আশাবাদী, যারা সুযোগ পাবেন তারাও ভালো করবেন।
রান আপে ছন্দময় ছুটে চলা আর শেষ দিকে একটু লাফ। সাবলীল বোলিং অ্যাকশনে আগ্রাসী সব ডেলিভারি। গতিময় গোলায় একসময় কত বিস্ময় জন্ম দিয়েছেন অ্যালান ডোনাল্ড! তার নতুন বলের সফল জুটি শন পোলক, তার নানা সময়ের সতীর্থ মাখায়া এনটিনি, ফ্যানি ডি ভিলিয়ার্সের মতো পেসারদের কত কীর্তির স্বাক্ষীও তিনি। সেই ডোনাল্ডকেই কিনা বড় বিস্ময় উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশের দুই পেসার ইবাদত হোসেন ও সৈয়দ খালেদ আহমেদ!
দিন দুয়েক আগে ফেইসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। আড়াই বছর বয়সী সন্তানকে কোলে নিয়ে তিনি লঞ্চের সারেংয়ের কক্ষে। পরের দিন পোস্ট করেছেন আরও দুটি ছবি। নদীর পাড়ে তিনি দাঁড়িয়ে, পরনে লুঙ্গি, মাথায় বাঁধা গামছা। ছবির সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন নিজের মনের কথা, “আমার দেশ, আমার গ্রাম, আমার শান্তির নীড়।”
সিরিজের প্রথম টেস্টে ডান কাঁধে সমস্যা নিয়েও হাল ছাড়েননি তাসকিন আহমেদ। বোলিং চালিয়ে যান স্ট্র্যাপ পেচিয়ে। তখন তার কতটা কষ্ট হচ্ছিল, সেটা খুব ভালোভাবে বুঝতে পারছিলেন অ্যালান ডোনাল্ড। তাই তাসকিনের প্রশংসায় কোনো শব্দই যেন যথেষ্ট মনে হচ্ছে না বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচের।
বোলিংয়ে ‘৩’ সংখ্যাটি বাংলাদেশের জন্য বয়ে এনেছিল স্বস্তির পরশ। ইবাদত হোসেন চৌধুরি ও মেহেদী হাসান মিরাজ দুর্দান্ত বোলিংয়ে নেন ৩টি করে উইকেট। কিন্তু দিন শেষে সেই সংখ্যাটিই এখন বিভীষিকার প্রতিশব্দ। ব্যাটিংয়ে নেমে যে ৩ উইকেট উধাও টপাটপ! ইতিহাস গড়ার রোমাঞ্চও তাই আপাতত বিলীন। বরং সঙ্গী এখন হারের শঙ্কা আর চাপা আর্তনাদ।
কিংসমিড টেস্টের চতুর্থ দিন টিভি পর্দায় দেখা গেল তাসকিন আহমেদের ডান কাঁধে টেপ প্যাচানো। শঙ্কাটা তখনই জাগে। পরে যদিও বোলিং করেন তিনি। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট থেকে ঠিকই ছিটকে গেলেন গতিময় এই পেসার।
দক্ষিণ আফ্রিকায় ওয়ানডেতে প্রথম ম্যাচ জয়ের পর ধরা দিয়েছে সিরিজও। এবার টেস্টে ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙার পালা। লক্ষ্য পূরণে প্রক্রিয়া ঠিক রেখে করতে হবে পরিকল্পনার বাস্তবায়ন। আর সেজন্য পেসারদের বাড়তি দায়িত্ব নেওয়ার তাগিদ দিলেন বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক।
বল হাতে ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের ছাপ পড়ছে তাসকিন আহমেদের র্যাঙ্কিংয়ে। আইসিসি ওয়ানডে বোলারদের তালিকায় লম্বা পদক্ষেপে ছুটে চলেছেন বাংলাদেশের এই পেসার। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শেষ ওয়ানডেতে দুর্দান্ত বোলিং করে তার উন্নতি ১৫ ধাপ।
অনেক ঘাম ঝরিয়ে তাসকিন আহমেদ হয়ে উঠছেন বাংলাদেশের পেস বোলিং বিভাগের মূল অস্ত্র। তিন সংস্করণের দলেই এখন তিনি নিয়মিত। তবে এতে আত্মতুষ্টিতে ভুগছেন না এই পেসার। উন্নতির যে শেষ নেই, বেশ ভালো করেই জানা তার। সেই পথে আরও এগিয়ে যাওয়ার তাড়না অনুভব করছেন তিনি।
২০১৯ সালের ৭ জুন। বিশ্বকাপ দলে জায়গা না পাওয়া তাসকিন আহমেদ মিরপুর একাডেমি ভবনের সামনে মুখোমুখি হন সংবাদমাধ্যমের। কথা বলতে পারেন সামান্যই। কান্নার দমকে থমকে যান বারবার। সেই তাসকিনের চোখে আবার দেখা গেল জল। এবার মাঠের ভেতরেই। ৫ উইকেট নেওয়ার পর সিজদা দিলেন মাঠে। যখন উঠলেন, চোখের কোণে তখন চিকচিক করছে অশ্রু!
প্রথমবার আইপিএল খেলার সুযোগ পেয়েও ফিরিয়ে দিতে হয়েছে। তাসকিন আহমেদের মনে বিষাদের মেঘের আনাগোনা থাকাটা অস্বাভাবিক ছিল না। তবে দেশের জার্সি গায়ে চাপিয়ে তিনি উড়িয়ে দিলেন সেই কালো মেঘ। বল হাতে জ্বলে উঠে এনে দিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটে ঝলমলে এক দিন। ম্যাচে ও সিরিজে অসাধারণ পারফরম্যান্সে দলকে জেতানোর পর এই ফাস্ট বোলার দারুণ প্রশংসা আদায় করে নিলেন অধিনায়ক তামিম ইকবালের কাছ থেকেও।
বছর দুয়েক ধরে তাসকিন আহমেদের বোলিংয়ে দেখা মিলছিল উন্নতির ছাপ। দলে অবদানও রাখছিলেন নিয়মিত। কিন্তু দুর্দান্ত কোনো পারফরম্যান্সে জয়ের মূল নায়ক হতে পারছিলেন না। অবশেষে সব প্রাপ্তি যেন ধরা দিল একসঙ্গে। বাংলাদেশকে স্মরণীয় এক জয় এনে দিয়ে ম্যাচ সেরার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথমবার পেলেন সিরিজ সেরার পুরস্কার। এমন অর্জনে খুবই গর্বিত এই পেসার।
গতিময় ও বাউন্সি উইকেট, সহায়ক কন্ডিশন। সব মিলিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে মনে করা হয় পেসারদের চারণভূমি। তবে সফরকারী পেসারদের জন্য সবসময় সাফল্যপ্রসবা নয় এই দেশ। এবার তাসকিন আহমেদের ৫ উইকেট দিয়ে যেমন কাটল লম্বা এক খরা। ১০ বছরেরও বেশি সময় পর দক্ষিণ আফ্রিকায় ওয়ানডেতে ৫ উইকেটের স্বাদ পেলেন কোনো সফরকারী পেসার।
এবারের আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় কখনও ওয়ানডে জেতেনি বাংলাদেশ। এবার হয়ে গেল প্রথম ম্যাচেই। এই সফরের আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় ৫ উইকেট ছিল না বাংলাদেশের কোনো বোলারের, তাদের মাঠে শতরানের উদ্বোধনী জুটি ছিল না একটিও। এবার শেষ ওয়ানডেতে কেটে গেল সেই খরাও। শুরু আর শেষ ম্যাচের প্রাপ্তির সম্মিলনে দল পৌঁছে গেল এমন ঠিকানায়, কদিন আগেও যা ছিল অচেনা এক জগৎ। দক্ষিণ আফ্রিকায় সিরিজ জয়!
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশ স্রেফ ৩৪ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর ক্রিজে গিয়ে প্রতিরোধ গড়েন আফিফ হোসেন। দলের বিপর্যয়ে উপহার দেন দারুণ এক ফিফটি। যার ছাপ পড়েছে তার র্যাঙ্কিংয়ে। আইসিসি ওয়ানডে ব্যাটসম্যানদের তালিকায় বড় লাফ দিয়েছেন তিনি।
লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের হয়ে খেলতে হলে বাদ দিতে হতো দেশের হয়ে টেস্ট সিরিজ। বিসিবি থেকে বলার পর পরিস্থিতি বুঝতে পেরেছেন তাসকিন আহমেদ। তাই গতিময় এই পেসার সাড়া দেননি আইপিএলে খেলার ডাকে।
জোহানেসবার্গের নিউ ওয়ান্ডারার্সে কোনো রানই যেন নিরাপদ নয়। ৪৩৪ রান করেও একবার হারতে হয়েছিল অস্ট্রেলিয়াকে, সেই পাহাড় টপকে জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। নতুন পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছেন, এই মাঠে রান হবেই, তা নিয়ে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। অবশ্য রান যে হবেই, এমনটা মাথায় আনছেন না তাসকিন আহমেদ। গতিময় এই পেসার খুঁজছেন উইকেট নেওয়ার পথ।
খেলোয়াড়ি জীবনে অনেক বোলিং কোচের সঙ্গেই কাজ করার অভিজ্ঞতা হয়েছে তাসকিন আহমেদের। এবার পেলেন আরও একজন, দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি পেসার অ্যালান ডোনাল্ডকে। একদিন কাজ করে সব কিছু বোঝা সম্ভব নয়। মূল্যায়ন করতে সময় লাগবে। কিন্তু যেভাবে শুরুটা হয়েছে তাতে নতুন কোচের কাজে মুগ্ধ গতিময় পেসার তাসকিন।
অনুশীলন শেষে বাড়ি ফেরার তাড়া তাসকিন আহমেদের। পরদিনই দক্ষিণ আফ্রিকার ফ্লাইট, লম্বা সময়ের জন্য দেশ ছাড়ার আগে পরিবারের সঙ্গে যতটা সময় কাটানো যায়। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বোলিং সেশন শেষে গাড়ীতে ওঠার আগে বলছিলেন, “ছেলেটা বেড়ে উঠছে, ওর নানা কাণ্ড-কীর্তি দেখতে ভালো লাগে। ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করে না।” পেশাদারীত্বের দাবি মেটাতে তবু সেই মায়ার টান ছেড়ে যেতেই হয়। পরিবারের প্রতি যেমন ভালোবাসা আছে, দলের প্রতি দায়িত্বও তো আছে। তাসকিন যেমন দক্ষিণ আফ্রিকা যাচ্ছেন, একটি স্বপ্ন বুকে পুষে।
অপেক্ষার অবসান হলো হতাশাময় সমাপ্তিতে। মাঠে ফেরা নয়, বরং মাঠের বাইরে ছিটকে গেলেন তাসকিন আহমেদ। এবারের বিপিএলে আর খেলতে পারছেন না সিলেট সানরাইজার্সের ফাস্ট বোলার।
আইপিএলের মেগা নিলামের জন্য ক্রিকেটারদের চূড়ান্ত তালিকায় প্রত্যাশিতভাবে আছেন সাকিব আল হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমান। ভারতের ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে নিয়মিত খেলা এই দুই ক্রিকেটার ছাড়া বাংলাদেশ থেকে জায়গা হয়েছে আরও তিন জনের।
নিউ জিল্যান্ডে লম্বা সফরের রেশ শেষ হয়নি এখনও। দলের সঙ্গে যোগ দেওয়া হয়নি এখনও। টি-টোয়েন্টির অনুশীলনও শুরু হয়নি। তবে এসবকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করাতে চান না তাসকিন আহমেদ। বিপিএলে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলারদের মধ্যে থাকতে চান তিনি দলের জয়ে অবদান রেখে।
গতি সব সময়ই ছিল কিন্তু ছিল না নিয়ন্ত্রণ। বিচ্ছিন্নভাবে দুয়েকটা স্পেলে ঝলক দেখালেও বেশিরভাগ সময় ছিলেন অকার্যকর। উইকেট নেওয়ায় ব্যর্থতার সঙ্গে ছিল রান বিলানোর প্রবণতা। সব মিলিয়ে ১০ উইকেট নেওয়া বোলারদের মধ্য টেস্ট ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে গড় ছিল তার। স্বাভাবিকভাবেই তাকে খেলানো নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। রেকর্ড রাঙা বোলিংয়ে সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন ইবাদত হোসেন চৌধুরি।
একটিই তো ম্যাচ, অথচ কত অর্জনের হাতছানি। এমন পরিস্থিতিতে অতি রোমাঞ্চে তালগোল পাকিয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে তেমন কিছু ঘটতে দেয়নি বাংলাদেশ। কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য ছুঁয়ে তাসকিন আহমেদ বললেন, আগেভাগে জয় নিয়ে ভাবেননি তারা। কেবল প্রক্রিয়া ঠিক রেখে খেলে গেছেন সামর্থ্যের বেশি দিয়ে।
বাংলাদেশে সবে ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে। ঠিক সেই সময়টায় ১২ হাজার কিলোমিটার দূরে মাউন্ট মঙ্গানুইতে যা হলো, তাতে কেটে গেল বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাম্প্রতিক আঁধার। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চ্যাম্পিয়ন, দেশের মাঠে অপ্রতিরোধ্য দল, যাদেরকে তাদের মাঠে কখনোই কোনো সংস্করণে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ, এতদিনের সেই অধরা ভুবন নিউ জিল্যান্ডে ধরা দিল বহুকাঙ্ক্ষিত এক স্বপ্নময় জয়।
নিউ জিল্যান্ড দল ঘোষণার মধ্যেই ছিল বিপদের বার্তা। আগের টেস্টে এক ইনিংসে ১০ উইকেট নেওয়া বাঁহাতি স্পিনার এজাজ প্যাটেল যেখানে দলে নেই, সেখানে আছেন পাঁচ পেসার। তাদের চার জনই হয়তো খেলবেন প্রথম টেস্টে। বাড়তি বাউন্স ও সুইং আছে এমন উইকেটে কিউইদের পেস চতুষ্টয় নিয়ে দুর্ভাবনা থাকাই স্বাভাবিক। তবে এই চ্যালেঞ্জ জিততে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক।
অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে দুই বছর আগে নিউ জিল্যান্ড সফরের অভিজ্ঞতা আছে মাহমুদুল হাসানের। সেবার যুব ওয়ানডে সিরিজে এক ম্যাচে করেছিলেন সেঞ্চুরি, আরেকটি ৯৯। এবার জাতীয় দলের হয়ে প্রথম সফরের শুরুটাও খারাপ হলো না তার। প্রস্তুতি ম্যাচে তরুণ ব্যাটসম্যান করলেন ফিফটি। টেস্ট সিরিজের আগে ব্যাটিং অনুশীলন ভালোভাবে সেরে নিলেন মুশফিকুর রহিমও।
বৃষ্টি আর ভেজা মাঠ মিলিয়ে খেলা শুরু হতে দেরি। খেলা শুরুর পরও দফায় দফায় বৃষ্টির হানা। তাতে প্রস্তুতি ম্যাচের প্রথম দিনের অনেকটাই গেল ভেস্তে। খেলা যেটুকু হলো, সেখানে দারুণ বোলিং উপহার দিলেন তাসকিন আহমেদ ও আবু জায়েদ চৌধুরি।
আলো ঝলমলে কিছু সংখ্যা। কিন্তু সেই আলোর গভীরে আঁধার। রেকর্ড ফুটিয়ে তুলছে উজ্জ্বল কিছু পরিসংখ্যান। কিন্তু সেসবের আড়ালে কেবলই অমানিশা। ২০২১ সালে হাতছানি ছিল অনেক অর্জন ও প্রাপ্তির, প্রতি বছরের মতোই সুযোগ ছিল সামনে এগিয়ে চলার। কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেট এ বছর ছিল উল্টো রথের যাত্রী।
দুই হাতে টেপ পেঁচানো এখনও। ক্ষত তাই মুছে যায়নি বলেই ধারণা করে নেওয়া যায়। তাসকিন আহমেদের বোলিং দেখে অবশ্য তা বোঝার উপায় নেই। মিরপুরে ইনডোরের পাশের নেটে আগুন ঝরালেন তিনি। নাজমুল হোসেন শান্তকে অস্বস্তিতে ফেললেন বারবার। তবে নেট আর ম্যাচের বাস্তবতা তো এক নয়। এজন্যই প্রশ্নটি উঠছে, মিরপুর টেস্টে খেলতে কতটা তৈরি তাসকিন।
চট্টগ্রামে প্রথম নতুন বলে কোনো ইনিংসেই উইকেট পায়নি বাংলাদেশ। দুবারই পাকিস্তানের উদ্বোধনী জুটি দলকে এনে দেয় ভালো শুরু। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন ফিল্ডিং কোচ মিজানুর রহমান বাবুলের ধারণা, মিরপুর টেস্টে তাসকিন আহমেদ ফিরলে বাংলাদেশ কাজে লাগাতে পারবে নতুন বল। এই কোচ মুখিয়ে আছেন দুই গতিময় পেসার তাসকিন ও ইবাদত হোসেনের জুটি দেখতে।
চট্টগ্রাম টেস্ট হারার দিনে পরের টেস্টের জন্য সুখবর পেল বাংলাদেশ দল। চোট কাটিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে দলে ফিরলেন সাকিব আল হাসান ও তাসকিন আহমেদ। এই সংস্করণে দলে প্রথমবার ডাক পেলেন টি-টোয়েন্টি দলের নিয়মিত ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখ।
চোট সমস্যায় দলে নেই এক ঝাঁক ক্রিকেটার। সবার অভাবই অনুভূত হবে। তবে সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের শূন্যতাই হয়ত বেশি ভোগাবে বাংলাদেশকে। অভিজ্ঞ এই দুই ক্রিকেটারের অনুপস্থিতিতে নিজের ও মুশফিকুর রহিমের বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক।
নিয়মরক্ষার শেষ টি-টোয়েন্টি খেলতে গিয়ে টেস্ট ম্যাচ থেকে ছিটকে গেলেন তাসকিন আহমেদ। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে খেলতে পারছেন না এই ফাস্ট বোলার, অনিশ্চিত দ্বিতীয় টেস্টে খেলা নিয়েও।
জাতীয় লিগে ভালো খেলার পুরস্কার খুব দ্রুতই পেয়ে গেলেন মাহমুদুল হাসান জয়। ২১ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান প্রথমবার সুযোগ পেলেন বাংলাদেশের টেস্ট দলে। অনেকটাই চমক উপহার দিয়ে প্রথমবার ডাক পেলেন ২২ বছর বয়সী পেসার রেজাউর রহমান রাজাও।
শেষ ৩ ওভারে প্রয়োজন ১৯ রান, হাতে ৮ উইকেট। একটি ওভার আবার করবেন অনিয়মিত কোনো বোলার। ম্যাচ তাই তখন অনেকটাই পাকিস্তানের মুঠোয়। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ যেভাবে ম্যাচ জমিয়ে তুলেছিল, তাতে মুগ্ধ পাকিস্তান কোচ সাকলায়েন মুশতাক।
বোলিং হাতে চোট। মাঠের বাইরেই থাকতে পারতেন তাসকিন আহমেদ। কিন্তু দলের প্রয়োজন বুঝে ডান হাতে টেপ পেঁচিয়ে মাঠে ফিরলেন এই পেসার। করলেন আরও দুটি ওভার। চোট পাওয়ার পরও তার খেলা চালিয়ে যাওয়া ছুঁয়ে গেছে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহকে।
লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগের (এলপিএল) দ্বিতীয় আসরের প্লেয়ার্স ড্রাফটে দল পেয়েছেন বাংলাদেশের পাঁচ ক্রিকেটার। যেখানে তাসকিন আহমেদ, নাজমুল ইসলাম অপু, মোহাম্মদ মিঠুন, আল আমিন হোসেনের সঙ্গে আছেন তরুণ পেসার মেহেদি হাসান রানা।
সংবাদ সম্মেলনে হাহাকারের মতো শোনাল তাসকিন আহমেদের কণ্ঠ। কয়েকবারই বললেন, পারফম্যান্স যা বলছে, এর চেয়ে ভালো দল তারা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে না পারায় তারা নিচ্ছেন। কিন্তু ক্রিকেটারদের নিবেদনে কোনো ঘাটতি চোখে পড়েনি তার।
সবুজাভ উইকেটে আগুন ঝরিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। কঠিন পরীক্ষা নিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের। তবে এই উইকেটে রান করাও যে সম্ভব, সেই উপলব্ধিও হয়েছে তার। প্রয়োজন ছিল স্কিল আর লড়িয়ে মানসিকতার। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা পারেননি সেই চ্যালেঞ্জে জয়ী হতে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচে আবারও প্রকাশ্য হয়েছে ব্যাটিং লাইন আপের কঙ্কাল।
টানা তিনটি সিরিজ জয়ের আত্মবিশ্বাস আর অনেকটা দেশের মতো উইকেটে খেলা। সব মিলিয়ে প্রত্যাশার ডালি সাজিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলতে এসেছিল বাংলাদেশ। সে সব উবে গেছে কবেই। আশার সীমানা এখন গিয়ে ঠেকেছে স্রেফ একটি জয়ে। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারার পর তাসকিন আহমেদ বলছেন, একেবারে শূন্য হাতে দেশে ফিরতে চান না তারা।
ঠিক একাদশ নিয়ে খেলছে তো বাংলাদেশ? সবুজাভ উইকেট দেখার পর থেকে প্রশ্ন উঠছিল। দুই দলের পাঁচ পেসারের দারুণ বোলিংয়ের পর প্রশ্নটা উচ্চকিত হয় আরও। উত্তর যারা দিতে পারতেন, তাদের কেউ ছিলেন না সংবাদ সম্মেলনে। মাঠে আগুনে বোলিং করা তাসকিন আহমেদ শুরুতে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও শেষটায় দেখালেন টিম ম্যানেজমেন্টকে।
ব্যাটে-বলে ঠিক মিলছিল না। তাই এক সঙ্গে দুই জনের কাজ করা হয়ে উঠছিল না। নানা ব্যস্ততায় যে ৯ মাসের বেশি সময় ধরে মাঠেই আসতে পারছিলেন না মাশরাফি বিন মুর্তজা। শেষ পর্যন্ত সময় করে উঠতে পারলেন বাংলাদেশের সফলতম পেসার। সুযোগ পেয়ে তার কাছ থেকে কার্যকর স্লোয়ারের কিছু গ্রিপ শিখে নিলেন তাসকিন আহমেদ।
টেস্টে পারফরম্যান্স দুর্দান্ত, ওয়ানডেতেও ভালো। কোভিড বিরতির পর নিজের ক্যারিয়ারের নতুন অধ্যায়ে ভালোভাবেই ছুটছেন তাসকিন আহমেদ। তবে এই দফায় এখনও ধরতে পারেননি টি-টোয়েন্টির সুর। বিশ্বকাপেও কাজটা সহজ হবে না, জানেন তিনি। তার ভাবনায় তাই বোলিংয়ে আরও বৈচিত্র যোগ করা।
আগের বছরের চুক্তিতে কোনো সংস্করণেই ছিলেন না তাসকিন আহমেদ। শরিফুল ইসলাম কখনোই ছিলেন না কোনো সংস্করণে। এবার দুজনই জায়গা পেয়েছেন বিসিবির তিন সংস্করণের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে।
সব হারিয়ে জিম্বাবুয়ের একটু লড়াই! ম্যাচের স্থায়িত্ব তাতে একটু বাড়ল, এই যা। বাংলাদেশের জয় ঠেকানো গেল না। আগুন ঝরা পেসে তাসকিন আহমেদ করলেন ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। মেহেদী হাসান উপহার দিলেন রেকর্ড গড়া বোলিং। বাংলাদেশের জয়ও এলো রেকর্ড ব্যবধানে।
কঠিন পরিস্থিতি সামাল দিতে বাংলাদেশের সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যাটসম্যানই ছিলেন ক্রিজে। তিনি ভালো করেই জানেন টেলএন্ডার ব্যাটসম্যানদের নিয়ে কীভাবে গড়ে তুলতে হয় জুটি। সেই মাহমুদউল্লাহ আবারও তাই করে দেখালেন। রেকর্ড গড়া জুটিতে টানলেন দলকে। দিনের খেলা শেষে তাসকিন আহমেদ জানালেন, তার ইনিংসে কতটা অবদান অভিজ্ঞ এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানের।
ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসের পর তাসকিন আহমেদের সবার আগে মনে পড়েছে রায়ান কুকের কথা। বাংলাদেশের এই ফিল্ডিং কোচই তো নিয়মিত তাগাদা দেন ব্যাটিং নিয়ে কাজ করার জন্য। তার কথা শুনেই তাসকিনের এই উন্নতি, স্বীকৃত ক্রিকেটে প্রথম ফিফটির পর কুককে জানালেন কৃতজ্ঞতা।
মাঠে মেজাজ হারাতে খুব একটা দেখা যায় না তাসকিন আহমেদকে। সেই তাকেই দেখা গেল ব্লেসিং মুজারাবানির দিকে তেড়েফুঁড়ে ছুটে যেতে। মুখোমুখি হওয়া, উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়, অগ্নিদৃষ্টি, হয়ে যায় অনেক কিছুই। দিন শেষে তাসকিন জানালেন, বারবার উসকে দেওয়ার পরই অমন রুদ্র রূপ দেখা যায় তার।
বাংলাদেশের রেকর্ড তখন হয়ে গেছে। বিশ্বরেকর্ডও নাগালে, স্রেফ সময়ের ব্যাপার। কিন্তু সেই সময়টুকু থাকতে পারলেন না তাসকিন আহমেদ। দুর্দান্ত ব্যাট করেও হুট করে হারিয়ে ফেললেন ধৈর্য। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে মিলে নবম উইকেটে টেস্ট ইতিহাসের সেরা জুটির কীর্তি গড়ার খুব কাছে গিয়েই তাই হলো না শেষ পর্যন্ত।
দিনের শুরুতে প্রশ্ন ছিল, মাহমুদউল্লাহ ও তাসকিন আহমেদের জুটি কতক্ষণ টিকবে। সময় যত গড়াল, সেই প্রশ্ন রূপ নিল বিস্ময়ে, আরও কত দূর যাবে এই জুটি! শেষ পর্যন্ত এই জুটি থামল বিশ্বরেকর্ডের কাছাকাছি গিয়ে। মাহমুদউল্লাহ স্পর্শ করলেন দেড়শ। বাংলাদেশ পেরিয়ে গেল সাড়ে চারশ।
মাহমুদউল্লাহ ও তাসকিন আহমেদ যা উপহার দিলেন, তা হয়তো ভাবতেও পারেনি দল। দিনের শুরুতে টিভি সাক্ষাৎকারে লিটন দাস বললেন, শেষ দুই জুটিতে আর ৫০-৬০ রান চায় বাংলাদেশ। কিন্তু মাহমুদউল্লাহ ও তাসকিনের দারুণ ব্যাটিংয়ে প্রথম সেশনে কোনো উইকেটই হারাল না দল। রান উঠল একশর বেশি!
মাহমুদউল্লাহকে সঙ্গ দেবেন তাসকিন আহমেদ, এই আশায় ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু তাসকিন বুঝি দেখাতে চাইলেন, তিনিও কম যান না! এই পেসারই হয়ে উঠলেন যেন মূল ব্যাটসম্যান। দুজনের দারুণ জুটিতে জিম্বাবুয়েকে হতাশ করে দ্বিতীয় দিনের শুরুটা বাংলাদেশের হলো দুর্দান্ত।
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের বয়স ৭ বছর পেরিয়ে গেছে। জিম্বাবুয়েতে খেলার অভিজ্ঞতা এখনও নেই তাসকিন আহমেদের। এই সময়টায় যে জিম্বাবুয়ে সফরই ছিল না বাংলাদেশের! এবার তাই তার রোমাঞ্চ একটু বেশিই। বাংলাদেশের সবশেষ টেস্ট সিরিজে দুর্দান্ত বোলিং করা এই ফাস্ট বোলার এখন তাকিয়ে সফরের একমাত্র টেস্টের দিকে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচের ফিফটিতে র্যাঙ্কিংয়ে দুই ধাপ উন্নতি হয়েছে মাহমুদউল্লাহর। একই ম্যাচে ফিফটি করে মোসাদ্দেক হোসেন এগিয়েছেন ১২ ধাপ। ওই ম্যাচে চার উইকেট নিয়ে তাসকিন আহমেদের অবস্থানও এগিয়েছে ১২ ধাপ।
সিরিজে নিখুঁত ম্যাচ আর খেলা হলো না বাংলাদেশের। উল্টো আগের দুই ম্যাচের চেয়ে খারাপ করল তিন বিভাগেই। এর মাশুল দিতে হলো বড় ব্যবধানে হেরে। কুসল পেরেরার সেঞ্চুরি ও দুশমন্থ চামিরার পাঁচ উইকেটে জয় দিয়ে সিরিজ শেষ করল শ্রীলঙ্কা।
শ্রীলঙ্কায় হেরে যাওয়া সিরিজে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি নিঃসন্দেহে তাসকিন আহমেদের বোলিং। কঠিন কন্ডিশন ও উইকেটে যে মানের ফাস্ট বোলিংয়ের প্রদর্শনী তিনি মেলে ধরেছেন, বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে তা বিরল। এই চেহারায় তার আবির্ভূত হওয়ার পেছনে আছে হাড়ভাঙা খাটুনি, অধ্যাবসায় আর প্রতিজ্ঞার গল্প। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তাসকিন শোনালেন সেই গল্পগুলি। পাশাপাশি জানালেন তার ভেতরের তাড়না, বদলে যাওয়ার প্রেরণা ও সামনের পথচলা নিয়ে স্বপ্নের কথাও।
তাসকিন আহমেদ চতুর্থ উইকেট নিতেই ইনিংস ঘোষণা করল শ্রীলঙ্কা। তাতে নিশ্চিত হয়ে গেল, বাংলাদেশের দীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষ হচ্ছে না এই ইনিংসেও। টেস্টে বাংলাদশের কোনো পেসারের ৫ উইকেট নেই ৮ বছরের বেশি সময় ধরে!
পঞ্চম দিন সকালে মিলে গেল যেন দুই দলের চাওয়া। উইকেটবিহীন পুরো একটি দিনের পর এক সেশনেই বাংলাদেশ নিতে পারল পাঁচ উইকেট। তবে একের পর এক উইকেট হারিয়েও শ্রীলঙ্কা রান তুলতে পারল ওভারপ্রতি প্রায় পাঁচ করে। ঘটনাবহুল সেশনের পর লাঞ্চ বিরতিতে এলো ইনিংস ঘোষণা।
ম্যাচের চার দিন শেষ, দুই দলের প্রথম ইনিংসই শেষ হয়নি। ম্যাচের ভবিষ্যৎ অনুমান করে নিতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তাসকিন আহমেদও ড্রয়ের ছবিই দেখছেন। তবে ক্রিকেট তো অনেকবারই দেখিয়েছে, এখান শেষের আগে শেষ বলে কিছু নেই। তাই তারা সতর্কও আছেন, জানালেন বাংলাদেশের এই পেসার।
আবু ধাবি টি-টেন লিগে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের অনাপত্তিপত্র (এনওসি) দেওয়া নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি বিসিবি। এই টুর্নামেন্টের সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল থাকবে বাংলাদেশ সফরে। প্লেয়ার্স ড্রাফটে দল পাওয়া সব ক্রিকেটারের এই টুর্নামেন্টে খেলার অনুমতি পাওয়ার সম্ভাবনা সামান্যই। বোর্ডের প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরি জানালেন, এই ক্রিকেটারদের নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে দ্রুতই।
ফিটনেস পরীক্ষায় উতরাতে না পারায় সদ্য সমাপ্ত বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে ছিলেন না নাসির হোসেন। গত ৯ মাস কোনো ধরনের ক্রিকেটেই তাকে দেখা যায়নি। অথচ তাকেই দলে নিয়েছে টি-টেন লিগের একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি! আবু ধাবির এই টুর্নামেন্টের প্লেয়ার্স ড্রাফটে দল পেয়েছেন বাংলাদেশের মোট ৬ ক্রিকেটার।
বিশ্বের অনেক দলের বোলিং আক্রমণেই তুরুপের তাস থাকেন কেউ একজন। ইনিংসের শুরুতে, মাঝে কিংবা শেষে, উইকেট শিকারের প্রয়োজনে বা ব্যাটসম্যানকে ভড়কে দিতে, বল তুলে দেওয়া হয় তার হাতে। বাংলাদেশ দলেও তেমন কাউকে খুঁজছেন রাসেল ডমিঙ্গো। জাতীয় দলের প্রধান কোচের নজর আপাতত তাসকিন আহমেদ ও সৈয়দ খালেদ আহমেদের দিকে।
তাসকিন আহমেদ পুরোই বদলে ফেলেছেন নিজেকে। রুবেল হোসেন যেন ফিরে গেছেন তার সেরা সময়ে। লম্বা চোটের পর সৈয়দ খালেদ আহমেদ ফিরেছেন দারুণভাবে। করোনাভাইরাসের বিরতির সময় ও পরে ক্রিকেটারদের ওয়ার্ক এথিক দেখে মুগ্ধ রাসেল ডমিঙ্গো। এই সময়টায় ফিটনেস নিয়ে যেভাবে খেটেছেন ক্রিকেটাররা, কোনো প্রশংসাই সেটির জন্য যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ।
দুই দলেই তারকা বেশ কজন। এমনকি উঠতি ক্রিকেটারদের মধ্যেও কয়েকজন পেয়ে গেছেন তারকার আমেজ। কিন্তু তাদের ছাপিয়ে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিলেন এমন দুজন, ম্যাচের আগে যারা ছিলেন আড়ালে। বিপর্যয়ের মধ্যে দারুণ পরিণত ব্যাটিংয়ে শান্ত একাদশকে জয় এনে দিলেন তৌহিদ হৃদয় ও ইরফান শুক্কুর।
সাদমান ইসলামের স্টান্সে বদল আনার কাজ চলছে। কোচ রাসেল ডমিঙ্গো কদিন আগে বলেছিলেন, মানিয়ে নিতে একটু সময় লাগবে। তবে সাদমান দেখালেন, মানিয়ে নিতে শুরু করেছেন তিনি দ্রুতই। দুই দিনের ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে এই বাঁহাতি ওপেনার খেললেন দুর্দান্ত এক ইনিংস। সাড়ে ৬ মাস পর খেলতে নেমে দাপুটে ফিফটি উপহার দিলেন তামিম ইকবালও।
ডাগআউটে কোচিং স্টাফের সবাই, গ্যালারিতে দুই নির্বাচক। বিসিবি কর্তাদের কয়েকজনের আনাগোনাও দেখা গেল। সবার চোখ এই ম্যাচে। ইমরুল কায়েস, মাহমুদউল্লাহর মতো যারা টেস্ট দলের বাইরে, তাদের জন্য তাই ম্যাচটি ভালো সুযোগ কিছু করে দেখানোর। দুজনই রান পেলেন, ফিফটি পেরোলেন। কিন্তু পারলেন না বড় কিছু করে নাড়া দিতে। তবে তাসকিন আহমেদ ধরে রাখলেন দুর্দান্ত বোলিংয়ের ধারাবাহিকতা।
কমেছে ওজন, বেড়েছে পেশি। বোলিংয়ে যেন ঝরছে আগুন। কোভিড বিরতির পর তাসকিন আহমেদ আবির্ভূত হয়েছেন ভিন্ন এক চেহারায়। বদলে যাওয়া এই তাসকিনকে দেখে মুগ্ধ চোখে কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বলছেন, ‘অবিশ্বাস্য।’
নেটে টানা দুর্দান্ত বোলিংয়ের পর এবার ম্যাচেও জ্বলে উঠলেন তাসকিন আহমেদ। অনুশীলন ম্যাচের প্রথম দিনে আগুন ঝরা বোলিং উপহার দিলেন এই ফাস্ট বোলার। তাসকিনের সমান ৩ উইকেট নিলেও বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামের বোলিংয়ে ছিল না ততটা ধার। ব্যাটসম্যানদের বেশির ভাগেরই হতাশ করার দিনে ফিফটি করতে পারলেন কেবল সাইফ হাসান ও সৌম্য সরকার।
ব্যাট-বলের লড়াইয়ের উত্তেজনা আবার ফিরে আসতে শুরু করেছিল। স্কিল ঝালাইয়ের পাশাপাশি চলছিল নানা পরিকল্পনাও। রোমাঞ্চ নিয়ে শ্রীলঙ্কা সফরের অপেক্ষায় ছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। আপাতত এসবের সমাপ্তি। সফর স্থগিত হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই হতাশ ক্রিকেটাররা। তবে বাস্তবতাও তারা অনুধাবন করছেন। তাই হতাশায় মুষড়ে না পড়ে নতুন আশা নিয়েই সামনে তাকিয়ে মুমিনুল হক, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিমরা।
গতি, নিয়ন্ত্রণ, সুইং, কাটার, বাউন্স, আগ্রাসন, সব মিলিয়ে বিধ্বংসী বোলিং। অভিষেক ওয়ানডের স্মরণীয় সেই পারফরম্যান্সের ভিডিও বুধবার নিজের অফিসিয়াল ফেইসবুক পাতায় পোস্ট করেছেন তাসকিন আহমেদ। ৬ বছর পূর্তিতে অভিষেকের দিনটিতে একটু ফিরে তাকানো! তাসকিনের সেই বোলিং যেমন দোলা দেয় রোমাঞ্চের, তেমনি এখন জাগায় হাহাকার। ক্রিকেট অনুসারীদের মনে যেমন, স্বয়ং তাসকিনের মনেও!
অভিষেকেই চমক জাগানিয়া পারফরম্যান্স। রাতারাতি তারকা। অর্থ-খ্যাতি-সাফল্য, সব লুটিয়ে পড়েছিল পায়ে। সেই যশ মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছিল তাসকিন আহমেদের। নিজেই বলছেন, শৃঙ্খলা হারিয়ে ছিটকে পড়েছিলেন পথ থেকে। এখন আবার চেষ্টা করছেন ক্যারিয়ার গোছানোর। নিজের ভুল থেকে পাওয়া শিক্ষা থেকেই পরামর্শ দিচ্ছেন উঠতি ক্রিকেটারদের, এমন ভুল যেন আর কেউ না করে।
তামিম ইকবাল শুধু বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যানই নন, ক্যাচ নেওয়ার ক্ষেত্রে আউটফিল্ডে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ফিল্ডারদের একজন। বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা ক্যাচগুলোর বেশ কয়েকটি তার। তবে ক্যাচ ছাড়ার নজিরও আছে কিছু। এর একটি ২০১৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। সেদিন ক্রিস ওকসের ক্যাচ ছাড়ার পর নাকি মাটির সঙ্গে মিশিয়ে যেতে ইচ্ছে করছিল তামিমের।
ঘরের মাঠে কোনো টেস্টের জন্য পাঁচ পেসার দলে রাখা বাংলাদেশের জন্য বিরল। সেই কাজ করার পর প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন জানালেন, পাকিস্তান সফরের পরের টেস্টের প্রস্তুতির জন্য জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঢাকা টেস্টের দলে রাখা হয়েছে পাঁচ পেসার।
নিরাপত্তা শঙ্কায় পাকিস্তান সফরে না যাওয়া মুশফিকুর রহিম প্রত্যাশিতভাবে ফিরেছেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের দলে। অভিজ্ঞ এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানের সঙ্গে দলে ফিরেছেন তাসকিন আহমেদ, মেহেদী হাসান মিরাজ ও মুস্তাফিজুর রহমান।
মাঠ থেকে উইকেট আলাদা করাই কঠিন। সবুজ ঘাসের উইকেটে আগুন ঝরালেন তাসকিন আহমেদ। পাঁচ উইকেট নিয়ে মধ্যাঞ্চলকে গুঁড়িয়ে দিলেন তরুণ এই পেসার। শেষ বেলায় দ্রুত ৩ উইকেট হারালেও লিডের পথে আছে উত্তরাঞ্চল।
পাকিস্তান সফরের টেস্ট দলের ভাবনায় প্রবলভাবেই ছিলেন তাসকিন আহমেদ। তবে তার ফিটনেস নিয়ে নিশ্চিত হতে পারেননি নির্বাচকরা। টেস্ট রেকর্ড ভীষণ বাজে হলেও তাই ফেরানো হয়েছে রুবেল হোসেনকে। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীনের মতে, রুবেলের জন্য এটি আরেকটি সুযোগ সাদা পোশাকে ভালো কিছু করার।
“এবারের বিপিএলে দেখে নিয়েন আমার গতি”, টুর্নামেন্ট শুরুর আগে বলেছিলেন তাসকিন আহমেদ। গর্জন যত ছিল, বর্ষন ততটা হয়নি। বিপিএলে এবার তার গতি হতাশাজনক। আরও বেশি হতাশার ছিল তার সামগ্রিক বোলিং। তবে সেই হতাশা পেছনে ফেলে সামনের ম্যাচগুলিতে ভালো কিছু উপহার দিতে চান তাসকিন।
চোটের কারণে জাতীয় লিগে খেলা নিয়েই ছিল অনিশ্চয়তা। অথচ চোট কাটিয়ে ফিরে জাতীয় লিগে এবার নিজের ক্যারিয়ারের সেরা মৌসুম কাটালেন তাসকিন আহমেদ। এখন তার দৃষ্টি বিপিএলে। গত বিপিএলে ভালো করে জাতীয় দলে ফিরলেও চোটের কারণে ছিটকে গিয়েছিলেন। চোট, ফর্ম ও নানা কারণ মিলিয়ে গত প্রায় ২১ মাসে জাতীয় দলের হয়ে খেলতে পারেননি ম্যাচ। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তাসকিন জানালেন, এই দুঃসময় থেকে জীবন ও ক্রিকেট নিয়ে শিখেছেন অনেক। বদলে ফেলেছেন নিজেকে। শোনালেন, জাতীয় দলে ফিরে লম্বা সময় খেলার প্রত্যয়।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রামে যখন চলছিল বাংলাদেশের টেস্ট, ঢাকায় নেটে নিজেকে ঝালিয়ে নিচ্ছিলেন তাসকিন আহমেদ। বোলিংয়ের সময় এক পর্যায়ে শরীরের বাঁ পাশে লাগল টান। অনুভব করলেন প্রচণ্ড ব্যথা। সেই ব্যথা এখন কমেছে। কিন্তু বোলিং করার অবস্থায় ফেরেনি শরীর। চোট জর্জর ক্যারিয়ারে তাই এখন আরেক দফা মাঠে ফেরার লড়াইয়ে এই ফাস্ট বোলার।
টানা খেলার মধ্যে ছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। সামনেও বাংলাদেশের ব্যস্ত সূচি। তাই ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে হালকা চোট পাওয়া বাঁহাতি এই পেসারকে চট্টগ্রাম টেস্টের জন্য বিবেচনা করেননি নির্বাচকরা।
চোটের কারণে সবশেষ টেস্ট সিরিজে ছিলেন অনুপস্থিত। মাঝে পেরিয়েছে অনেকটা সময়। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে দুর্দান্ত একটি বিশ্বকাপ শেষে ছুটি কাটিয়ে প্রত্যাশিতভাবে দলে ফিরেছেন সাকিব আল হাসান। আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের দলে ফিরেছেন পেসার তাসকিন আহমেদ ও অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেনও। বিশ্রাম পেয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান।