‘গাফফার চৌধুরী ছিলেন বাংলাদেশের মুরুব্বি’

যুক্তরাষ্ট্রে সদ্যপ্রয়াত লেখক, কবি ও কলামনিস্ট আবদুল গাফফার চৌধুরীর স্মরণে এক নাগরিক সভায় তাকে ‘বঙ্গবন্ধুর পর বাংলাদেশের অন্যতম মুরুব্বি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন আলোচকরা।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 May 2022, 09:27 AM
Updated : 29 May 2022, 09:27 AM

স্থানীয় সময় শনিবার নিউ ইয়র্কে ওই নাগরিক স্মরণ সভার আয়োজন করে ‘স্কলারস বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠন।

স্মরণসভায় আলোচকদের অন্যতম বাংলাদেশ টেলিভিশনের সাবেক প্রযোজক ও চারণকবি বেলাল বেগ বলেন, “আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী ছিলেন বঙ্গবন্ধুর পর বাংলাদেশের অন্যতম ‘মুরুব্বি’। উনি বাংলা ভাষাকে ভালোবাসার বিষয়টি ১৭ কোটি মানুষের অন্তরে বসিয়ে দিয়েছেন।“

একুশের গানের রচয়িতা গাফফার চৌধুরীকে স্মরণ করতে গিয়ে বেলাল বেগ বলেন, “আমাদের হৃদয়ে থাকবেন একজন চণ্ডিদাস, একজন রবীন্দ্রনাথ, একজন নজরুল এবং একজন গাফ্ফার চৌধুরী। তার কারণ হচ্ছে, গাফফার চৌধুরীর একুশের গানটি। আমি যখন ম্যাট্রিক পরিক্ষার্থী তখন গাফফার চৌধুরী গানটি লিখেন। আমি তখন থেকেই তাকে চিনি। তিনি বাঙালিত্ব জাগ্রত রাখতে অবিস্মরণীয় কবিতাটি লিখেছিলেন, যা বাঙালি-বিশ্বে চিরভাস্বর হয়ে থাকবে।”

প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ্র সভাপতিত্বে আলোচনার সঞ্চালনা করেন আয়োজক সংগঠনের প্রধান এম ই চৌধুরী শামীম।

শুরুতে রূপা চৌধুরীর নেতৃত্বে সমবেত কণ্ঠে ‘আগুনের পরশমনি ছোঁয়াও প্রাণে’ গানটি পরিবেশিত হয়।

তারপর আবদুল গাফফার চৌধুরীর লেখা অমর গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি- আমি কী ভুলিতে পারি’ গাইতে গাইতে সভায় উপস্থিত সবাই তার  প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

প্রয়াত গাফফার চৌধুরীর কবিতার সংকলন গ্রন্থ ‘সময়ের ঘড়ি’র মোড়ক উম্মোচন করেন নাগরিক স্মরণসভার অতিথিরা।

কলামনিস্ট, সাংবাদিক ও কবি গাফ্ফার চৌধুরীর জীবন-কর্ম নিয়ে আলোচনার ফাঁকে ‘সময়ের ঘড়ি’ নামক একটি গ্রন্থের মোড়ক উম্মোচন করেন অতিথিরা। আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর লেখা ৮০টিরও বেশি কবিতার সংকলন ‘সময়ের ঘড়ি’ গ্রন্থটি।

এটির প্রকাশক ও সংকলক এম ই চৌধুরী শামীম মোড়ক উম্মোচনের সময় বলেন, “মোড়ক উন্মোচন করার কথা ছিল স্বয়ং গাফফার চৌধুরীর। কিন্তু তার আগেই তাকে হারালাম এবং বইটি তার হাতে পৌঁছে দেয়াও সম্ভব হয়নি। অথচ এটি তার লেখা কবিতার একমাত্র সংকলন।“

লেখক ও  সাংবাদিক হাসান ফেরদৌস বলেন, “বহুমুখী প্রতিভার অধিকার ছিলেন এবং বহু পরিচয় ছিল আবদুল গাফফার চৌধুরীর। সব পরিচয় ছাপিয়ে যে পরিচয়টি আমার চোখে ভাসে, সেটি হচ্ছে আদ্যোপান্ত বাঙালি। তার সঙ্গে আমাদের একটা মিল আছে, মানে আমরা যারা প্রবাসী। ১৯৭৪ সাল থেকেই তিনি প্রবাসী ছিলেন। তার হৃদয়জুড়ে বিরাজ করতো প্রিয় মাতৃভূমি- যা তার লেখনিতে প্রকাশ পেয়েছে।“

সভায় আবদুল গাফফার চৌধুরীর আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে স্মৃতিচারণ করেন নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মুনিরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা খান মিরাজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কণ্ঠশিল্পী তাজুল ইমাম, কম্যুনিটি লিডার মোর্শেদ আলম এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সউদ চৌধুরী।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!