স্বাধীনতার ঘোষক: ভুল শুধরালো নিউ ইয়র্কের আইনসভা

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে একটি প্রস্তাব পাস করেছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক স্টেট লেজিসলেচার, যেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বাংলাদেশের জাতির পিতা হিসেবে বর্ণনা করে এবং তার স্বাধীনতার ঘোষণার ইতিহাস তুলে ধরে এক দশকের পুরোনো ভুল শুধরে নেওয়া হয়েছে।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 April 2022, 02:51 PM
Updated : 6 April 2022, 02:51 PM

গত ৮ মার্চ নিউ ইয়র্ক স্টেট লেজিসলেচার বা আইনসভার উভয় কক্ষে ওই প্রস্তাব গৃহীত হয়। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রহিম বাদশা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সংশোধিত রেজ্যুলেশনের একটি অনুলিপি তারা পেয়েছেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ২০১২ সালের ২৬ মার্চ প্রথমবার নিউ ইয়র্ক স্টেটের আইনসভায় পাস হওয়া ‘বাংলাদেশ ডে রেজ্যুলেশনে’ জিয়াউর রহমানকে ‘স্বাধীনতার ঘোষক’ বলা হয়েছিল।

তখনই এ নিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়। জাতিসংঘে বাংলাদেশের তৎকালীন স্থায়ী প্রতিনিধি ও বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ইতিহাসের উদ্ধৃতিসহ তথ্যপ্রমাণ জমা দেন স্টেট লেজিসলেচারের কর্মকর্তাদের কাছে।

এরপরেও কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে পাস হওয়া রেজ্যুলেশনে জিয়াউর রহমানকে ‘স্বাধীনতার ঘোষক’ বলা হচ্ছিল। বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি প্রবাসের বীর মুক্তিযোদ্ধারাও এ নিয়ে প্রতিবাদে স্বোচ্চার ছিলেন।

স্থানীয় প্রবাসীদের অভিযোগ, স্টেট লেজিসলেচারের কয়েকজন সদস্যের নির্বাচনে ‘জামায়াত-শিবির এবং ফ্রিডম পার্টির লোকজন’ বিপুল অর্থ ব্যয় করছিল, সে কারণে গত কয়েক বছরে বার বার দাবি জানিয়েও ওই ভুল তথ্য সংশোধন সম্ভব হয়নি।

অবশেষে ২০১৯ সালের অক্টোবরে স্টেট লেজিসলেচারের ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করেন এবং বাংলাদেশের স্থপতি ও স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরের অবদান ও স্বীকৃতি সম্পর্কে অবগত হন।

তবে কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালের ২৬ মার্চে কোনো রেজ্যুলেশন পাস করা সম্ভব হয়নি। তাই এ বছর পাস হওয়া প্রস্তাবে সেই ভুল সংশোধন করে নেওয়া হয়। 

নিউ ইয়র্কে ‘বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কমিটি’র প্রধান এবং যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রহিম বাদশা বলেন, “এই রেজুলেশন পাসের মধ্য দিয়ে নিউ ইয়র্কে জামায়াত-শিবির ও তাদের দোসরদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির গভীর একটি ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করা সম্ভব হল।”

তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে যত প্রবাসী রয়েছি, তার অর্ধেকেরও বেশি এই নিউ ইয়র্কে। নিউ ইয়র্ক সিটি, স্টেট, এবং এর বিভিন্ন সিটিতে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি-আমেরিকান প্রজন্ম কাজ করছেন। তারাও এখন ইতিহাসের সঠিত তথ্য জানতে পারবেন।”

এই সংশোধন প্রক্রিয়ার সমন্বয় করেন নিউ ইয়র্ক প্রবাসী আব্দুর রহিম বাদশা এবং আব্দুস শহীদ। ইতিহাস ঠিকভাবে প্রতিফলনের জন্য নিউ ইয়র্কে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের প্রবাসীরা স্টেট লেজিসলেচারের উভয় কক্ষে বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতীম রাজনীতিকদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জনিয়েছেন।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!