’আমি প্রবাসী’ অ্যাপের প্রসারে কাজ করবে ব্র্যাক

বৈদেশিক কর্মসংস্থান সংক্রান্ত সেবা আরও সহজ ও ডিজিটালাইজড করার লক্ষ্যে ‘আমি প্রবাসী’ নামে যে অ্যাপ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় চালু করেছে, তা বিদেশগামীদের কাছে পৌঁছে দিতে কাজ করবে ব্র্যাক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 June 2021, 07:24 PM
Updated : 29 June 2021, 07:24 PM

অ্যাপের যৌথ নির্মাতা বাংলা ট্র্যাক গ্রুপের সঙ্গে মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাটির অভিবাসন কর্মসূচি।

ব্র্যাকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সংস্থার নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ এবং বাংলা ট্র্যাক গ্রুপের পরিচালক নামির আহমেদ ওই চুক্তিতে সই করেন।

গত ৮ মে ’আমি প্রবাসী’ অ্যাপের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ।

চাকরি নিয়ে বিদেশে যেতে আগ্রহীরা অনলাইনে নিবন্ধন, বিদেশে চাকরি খুঁজে আবেদনের সুযোগ, অনুমোদিত রিকরুটিং এজেন্সি, পাসপোর্ট অফিস ও মেডিকেল সেন্টারসমূহের তালিকা, বিদেশযাত্রার ধাপসমূহ ও দেশভিত্তিক নিয়মাবলী সম্পর্কে সহজে তথ্য পাবেন ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপের মাধ্যমে।

এই অ্যাপ সম্পর্কে বিদেশগামীদের অবহিত করা ও সেবাসমূহ প্রান্তিক জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে কাজ করবে ব্র্যাক ।

অনুষ্ঠানে আসিফ সালেহ বলেন, “সঠিক তথ্য না পাওয়ার কারণে অভিবাসী কর্মীরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হন। প্রতারিত হন নানাভাবে। আমরা বিদেশগামীদের সচেতন ও দক্ষ করে বিদেশে পাঠানোর জন্য অনেকদিন ধরে কাজ করছি।

”এই অ্যাপটি ব্যবহার করে প্রবাসীরা সঠিক তথ্য পাবেন। অভিবাসীদের কাছে অ্যাপটির যথাযথ ব্যবহার ও সেবাগুলো নিশ্চিত করতে কাজ করবে ব্র্যাক।”

বাংলা ট্র্যাকের পরিচালক নামির আহমেদ বলেন, বিদেশে চাকরির প্রক্রিয়াকে ডিজিটালাইজ করার জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত একটি উদ্যোগ ‘আমি প্রবাসী’। এই অ্যাপে বৈধভাবে বিদেশযাত্রার সকল ধাপের বর্ণনা আছে।

”পাশাপাশি নিজের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, পাসপোর্টের কপি, চাকরির অনুমতিমত্র এবং জাতীয় পরিচয়পত্র স্ক্যান করে সংরক্ষণের সুবিধাও আছে। কোথাও কোনো সমস্যায় পড়লে কোন দেশে কার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে তার বিস্তারিত তথ্য ও ইমেইল ঠিকানাও পাওয়া যাবে এই অ্যাপে।”

অনুষ্ঠানে বাংলা ট্র্যাকের চিফ অপারেটিং অফিসার সামিউল ইসলাম, ব্যবসায়িক প্রধান তানভীর সিদ্দিক ও ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচি প্রধান শরিফুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।

যেভাবে মিলবে যেসব সেবা

যে কোনো বিদেশগামী নিজের মোবাইল নম্বর কিংবা ইমেইল আইডি দিয়ে নিবন্ধন করেই এই অ্যাপের সেবা নিতে পারবেন। মাত্র পাঁচটি ধাপে সম্পন্ন করা যায় রেজিস্ট্রেশন।

প্লে স্টোর থেকে যে কেউ ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপটি ডাউনলোড করতে পারবেন। এরপর চালু করে বাংলা কিংবা ইংরেজি ভাষা নির্বাচন করতে হবে।

মোবাইল নম্বর কিংবা ইমেইল আইডি উল্লেখ করতে হবে। ফোন নম্বর দেওয়া হলে মোবাইলে তাৎক্ষণিক একটি কোড আসবে। সেটি অ্যাপে প্রবেশ করানোর পর কমপক্ষে ৩টি দেশ নির্বাচন করতে হবে।

মধ্যপ্রাচ্যসহ ২৩টি দেশের কথা সেখানে উল্লেখ করা থাকলেও ‘অন্যান্য দেশসমূহ’ নামের সেকশনে প্রবেশ করলে আরও তালিকা পাওয়া যাবে।

এই ধাপের পর আসবে প্রবাসীকর্মীর বিষয়গত কারিগরি দক্ষতার ধাপ। এখানে শ্রমিক, ক্লিনার, ইলেকট্রিশিয়ান, ড্রাইভার, শেফ, কন্সট্রাকশন ওয়ার্কারসহ আরও কতোগুলো অপশন আছে।

যিনি যে কাজে দক্ষ সেটা নির্বাচন করে যেতে পারবেন পরের ধাপে। এখানে লিঙ্গও উল্লেখ করতে হবে। তারপর বিদেশে কাজের অভিজ্ঞতা এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রদান করলে মূল অ্যাপে প্রবেশ করা যাবে।

‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপের মধ্যে আবেদন প্রক্রিয়া, চাকরি খোঁজাসহ আবেদনের অগ্রগতি এবং গন্তব্যে পৌঁছানোর পর কী কী করতে হবে তা জানা যাবে।

তবে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু না করে কিংবা এর মাধ্যমে বিএমইটি ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত না হলে অন্য সেবা পাওয়া যাবে না।

এছাড়া প্রবাসী কর্মীদের জন্য নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিস, রিক্রুটিং এজেন্সি, জেলা জনশক্তি অফিস, মেডিক্যাল সেন্টার, প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহ (টিটিসি) জিপিএস-এর মাধ্যমে দেখা যাবে। নির্দিষ্ট অফিসের ঠিকানায় কিংবা নামে ক্লিক করলে ম্যাপে সেটার অবস্থান দেখা যাবে। তাছাড়া এই অ্যাপে বৈধভাবে বিদেশ যাত্রার ধাপগুলোর একটি তালিকাও করে দেওয়া আছে।