বাইডেনের বিজয়ে প্রবাসীদের উচ্ছ্বাস

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী জো বাইডেনের বিজয়ে ‍উচ্ছ্বাসের জোয়ারে ভাসলেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Nov 2020, 02:42 PM
Updated : 8 Nov 2020, 02:42 PM

শনিবার বাইডেনের বিজয়ের খবর আসার পরপরই রাস্তায় শুরু হয় তার সমর্থকদের উল্লাস। যারা গাড়ি চালাচ্ছিলেন, তারাও লাগাতার হর্ন বাজিয়ে আনন্দের প্রকাশ ঘটাচ্ছিলেন। বহুতল ভবনের জানালায় পতাকা নেড়ে অনেকে সামিল হন উল্লাসে।

নিউ ইয়র্ক থেকে নিউ জার্সি, পেনসিলভেইনিয়া থেকে ডেলওয়ারে,ম্যারিল্যান্ড-ভার্জিনিয়া-মিশিগান-ফ্লোরিডা-জর্জিয়া-টেক্সাস-ক্যালিফোর্নিয়া সর্বত্র বিজয় উল্লাসে ছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

তারা বলছিলেন, ডনাল্ড ট্রাম্পের ‘অপশাসনে’ তারা অতিষ্ঠ ছিলেন, এখন স্বস্তি পাচ্ছেন।

করোনাভাইরাস মহামারীকালে এই উল্লাসে সামাজিকক দূরত্ব উপেক্ষিত থাকলেও বেশিরভাগই মাস্ক পরে ছিলেন।

টাইমস স্কয়ারে হাজারো জনতার উচ্ছ্বল সমাবেশে ডেমোক্রেটিক পার্টির সংগঠক বাংলাদেশি খোরশেদ খন্দকার ব্যানারসহ মিছিলে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন।

তিনি বলেন, “এ বিজয় অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের, অপশাসনকারীর পতনের। এ বিজয়ের ঢেউ ছড়িয়ে দিতে হবে আমেরিকার সীমানা পেড়িয়ে গোটাবিশ্বে। গত চার বছরে ট্রাম্পের আচরণে মিত্রহীন হয়ে পড়েছে আমেরিকা। বাইডেন-কমলার নেতৃত্বে তা পুনপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে।”

যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, “ট্রাম্পের পতনে গোটা বিশ্ব ভারমুক্ত হল। অশুভ একটি শক্তির কবল থেকে রেহাই পেল। এ বিজয় ব্যক্তি বাইডেন অথবা কমলা হ্যারিসের নয়, এ বিজয় সভ্য সমাজের গোটা জনগোষ্ঠির।”

রিপাবলিকান পার্টির নেতা গিয়াস আহমেদও শামিল ছিলেন ভোটে ডেমোক্র্যাটদের বিজয়ে।

তিনি বলেন, “সামনের দিনে সকল প্রবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে ন্যায়ের শাসনের পক্ষে। আর মার্কিন প্রশাসনে নিজেদের অবস্থানকে সুসংহত করতে বাংলাদেশি হিসেবে নয়, মুসলমান হিসেবে জোট গড়তে হবে।”

বিজয়ের উল্লাস প্রকাশে নিউ ইয়র্ক সিটির ব্রঙ্কসের বাংলাবাজার এলাকায় জাতীয় স্মৃতিসোধ আর শহীদ মিনার অঙ্কিত বিশাল দেয়ালের সামনে শনিবার সন্ধ্যায় এক সমাবেশ হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন কমিউনিটি লিডার এবং সামনের বছর নিউ ইয়র্ক সিটি কাউন্সিল নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হতে আগ্রহী মোহাম্মদ এন মজুমদার।

তিনি বলেন, এ বিজয় গোটা অভিবাসী সমাজের। এ বিজয় খেটে খাওয়া মানুষের। এ বিজয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসীদের।

যুবনেতা জামাল হোসেনের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন মঞ্জুর চৌধুরী, তোফায়েল চৌধুরী, সাঈদুর রহমান লিঙ্কন, জাকির চৌধুরী।

জ্যাকসন হাইটস বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে মিষ্টি বিতরণ করা হয় বিজয়ের আনন্দে। সংগঠনের সেক্রেটারি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান কামরুলের সঞ্চালনায় পালকি পার্টি সেন্টারের বিজয় সমাবেশে ডেমোক্রেটিক পার্টির এই উত্থানকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য দেন ফাহাদ সোলায়মান।

লং আইল্যান্ডের ‘বাংলাদেশ-আমেরিকা প্রগেসিভ এলায়েন্স’র পক্ষে গোলাম ফারুক শাহীন বলেন, “ঐতিহাসিক একটি বিজয়ের সাক্ষী হলাম বাঙালিরাও। কারণ, অনেকেই এবার বাইডেন-কমলা জোটের নির্বাচনী প্রচারণায় সক্রিয় ছিলেন।”

‘আমেরিকা-বাংলাদেশ এলায়েন্স’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এম এ সালাম বলেন, “অভিবাসী সমাজে সৃষ্ট আতংক দূর হবার পাশাপাশি করোনাভাইরাস নিয়ে যে তামাশা শুরু হয়েছিল, ট্রাম্পের পতনে তা দুরীভূত হবে। সে প্রত্যাশায় মানুষ বিজয়ী করেছেন বাইডেন-কমলাকে।”

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!