মহামারী চলছে, তবু থেমে নেই জুুরিখের বাংলা স্কুল

সুইজারল্যান্ডের জুরিখের বাংলা স্কুল অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালু করেছে।

কানিজ ফাতিমা কেয়া, সুইজারল্যান্ডের জুরিখ থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Oct 2020, 02:13 PM
Updated : 26 Oct 2020, 04:41 PM

কোভিড-১৯ এর প্রেক্ষিতে বদলে যাওয়া বাস্তবতায় স্থানীয় সময় সোমবার অনলাইনে এ শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হলো। 

সতের বছর ধরে সুইস প্রবাসী বাংলাদেশি শিশুদের মাতৃভাষায় আগ্রহী এবং দক্ষ করে তোলার কাজ করে যাচ্ছে বাংলা স্কুল জুরিখ। এ উদ্যোগের মূল কৃতিত্ব জুরিখ নিবাসী প্রবাসী দম্পতি বাকি উল্লাহ খান এবং সুলতানা খানের।

সময়ের পরিক্রমায় নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এবছর আঠারোতে পা দিল বাংলা স্কুল। মহামারীর সব নেতিবাচক দিকের মধ্য যে দুয়েকটি ইতিবাচক দিক আমরা খুঁজে নিয়েছি, বাংলা স্কুলের অনলাইন কার্যক্রম বোধকরি তার একটা।

যেহেতু সশরীরে স্কুল কক্ষে আসার সুযোগ আপাতত নেই, তাই এখানকার বাচ্চারা ঘরে বসেই অন্তত চলনসই অক্ষরজ্ঞান লাভ করবে- এ আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। বাংলা স্কুল যে কেবল প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বিষয়েই সজাগ তা নয়, বরং বাংলাদেশের সব জাতীয় দিবস এবং জাতীয় উৎসবগুলোতেও এ প্রতিষ্ঠানের রয়েছে সরব উপস্থিতি, প্রাণবন্ত আয়োজন।

প্রবাসে নিজ সংস্কৃতি ধরে রাখা এবং ছড়িয়ে দেওয়ার এ উদ্যোগ আদিগন্ত বিস্তৃত হোক! সকলের আন্তরিক অংশগ্রহণে সমৃদ্ধ হোক ‘বাংলা স্কুল জুরিখ’।

সুইজারল্যান্ড প্রবাসী অনেক বাংলাদেশি এখনও বাংলা স্কুল সম্পর্কে হয়তো জানেন না। তাদেরকে আমন্ত্রণ রইলো বাংলা স্কুল দেখে যাওয়ার এবং এর সম্পর্কে জানার জন্য।

আমাদের এ অনলাইন কার্যক্রমে শিক্ষক হিসেবে একঝাঁক মেধাবী দেশপ্রেমীকে আমরা পাশে পেয়েছি !

বরাবরের মতো মূল দায়িত্বে রয়েছেন সুলতানা খান, যিনি ঢাকা সিটি কলেজ থেকে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে পারিবারিক ব্যবসা সামলানোর পাশাপাশি দক্ষ হাতে সামলাচ্ছেন স্কুলের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার দিক।

তাকে সহযোগিতার জন্য রয়েছেন সেলিনা হোসেইন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকোত্তর শেষ করার পর ইংল্যান্ড থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেছেন। সেলিনা বর্তমানে জুরিখ এয়ারপোর্ট এভিয়েশনে কর্মরত আছেন।

সাথে রয়েছেন সোহেল আজাদ- লুসার্ন স্কুল অব বিজনেস ম্যানেজমেন্ট থেকে পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা এবং পরবর্তীদের ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অব বিজনেস ম্যানেজমেন্ট থেকে এমবিএ করেছেন তিনি।

সোহেল একজন বাচিক শিল্পী এবং সাংস্কৃতিক কর্মী। বর্তমানে হোটেল অ্যাকাউন্ট অডিটর হিসেবে কাজ করছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোকপ্রশাসন বিষয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে এখানে স্হানীয় শিশুদের একটি স্কুলে ভিন্ন ভাষাভাষী শিশুদের নিয়ে কাজ করছে কানিজ ফাতিমা কেয়া। তিনি একজন সংগীত শিল্পী, দায়িত্ব পালন করছেন সুইজারল্যান্ড আওয়ামি লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদিকা হিসাবেও।

বাংলা স্কুলের সাথে রয়েছেন রোমানা হোসাইন, যিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে অর্থনীতি বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। তিনি একজন উপস্থাপিকা, ব্লগার পাশাপাশি তার রয়েছে অনলাইন ব্যবসা।

এ উদ্যোগের আরেক মুখ মুক্তা আক্তার। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ্যাকান্টিংয়ে স্নাতকোত্তর করেছেন। বর্তমানে স্থানীয় লুসার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসা প্রশাসনে স্নাতকোত্তর করছেন। জড়িত রয়েছেন নারী উন্নয়নসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে। রয়েছেন সিমুন আজাদ। তিনিও ইংরেজিতে স্নাতক এবং একজন চাকরীজীবী। পাশাপাশি তিনি একজন সংগীত শিল্পী।

আমাদের নতুন প্রজন্ম বেড়ে উঠুক শুদ্ধ বাংলা ভাষা এবং সংস্কৃতি শিখে। মননে ও কথনে প্রোথিত হোক বাংলা। হৃদয়ে জেগে থাক প্রিয় মাতৃভুমি বাংলাদেশ।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!