গাড়ি স্লো করলে কিংবা থামালেও কেউ পারাপার হতো না। সবার হাতে ক্যামেরা থাকতো যেন কোনকিছুর শ্যুটিং চলছে। প্রথম প্রথম ভাবতাম হয়ত কোন কারণে সবাই ভিড় করছে অথবা আশপাশে কোন মিউজিয়াম বা ট্যুরিস্ট স্পট আছে যা দেখতে মানুষ ভিড় জমাচ্ছে।
লন্ডনের আট-দশটা সাধারণ রাস্তার মত অ্যাবি রোডও একটি রাস্তা যা উত্তর পশ্চিম লন্ডনের সেন্ট জন্স উড এলাকার গ্রোভ অ্যান্ড রোড থেকে শুরু হয়ে কিলবার্নের কাছে গিয়ে শেষ হয়েছে। রাস্তাটির দৈর্ঘ্য মাত্র এক দশমিক চার কিলোমিটার যা এক মাইলেরও কম। অ্যাবি রোডের খুব কাছেই রয়েছে বিখ্যাত লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ড। এ ছোট সাধারণ রাস্তাটি জনপ্রিয় হয়ে উঠলো যখন বিশ্ববিখ্যাত রক ব্যান্ড ‘বিটলস’ তাদের একটি অ্যালবামের নাম দিলো ‘অ্যাবি রোড’।
জেব্রা ক্রসিং এর পাশে অ্যাবি রোডেই আবার ‘বিটলস’ এর স্টুডিও রয়েছে। ‘অ্যাবি রোড’ অ্যালবামটি রিলিজ হয় ১৯৬৯ সালে যা ছিল তাদের শেষ অ্যালবাম। কারণ ঠিক পরের বছরই ব্যান্ডটি ভেঙে যায়। ব্যান্ডের চার সদস্যদের মধ্যে ছিলেন জর্জ হ্যারিসন, পল ম্যাকার্টনি, রিঙ্গো স্টার এবং জন লেনন। তাদের মধ্যে জর্জ হ্যারিসন জনপ্রিয়তায় আমাদের বাংলাদেশিদের কাছে অনেক বেশি পরিচিত।
‘বিটলস’ এর ‘অ্যাবি রোড’ অ্যালবামের কভার ছবিটি তোলা হয় ১৯৬৯ সালের ৮ অগাস্ট সকালে। ছবির ফটোগ্রাফার ছিলেন ইয়ান ম্যাকমিলান যাকে মাত্র দশ মিনিট সময় দেওয়া হয়েছিল এই ব্যস্ত রাস্তায় ছবি তোলার জন্য। আইডিয়াটা ছিল ব্যান্ড সদস্য পল ম্যাকার্টনির। ম্যাকমিলান একটি স্টেপ লেডারের উপর দাঁড়িয়ে সর্বমোট ছয়টি ছবি তোলেন। একজন পুলিশ সদস্য তখন ক্যামেরার পেছনে দাঁড়িয়ে ট্রাফিক আটকে রেখেছিলেন। ছয়টি ছবির মধ্যে একটি ছবি পল ম্যাকার্টনি বাছাই করেন অ্যালবামের জন্য।
‘বিটলস’ বিশ্বব্যাপী এতই জনপ্রিয় ছিল যে ‘অ্যাবি রোড’ অ্যালবামের কাভারে ব্যান্ডের নাম কিংবা ব্যান্ড সদস্যদের নাম পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। কভারে শুধু ‘অ্যাবি রোড’ লেখা ছিল। সেই কভার ছবির সঙ্গে সঙ্গে আজ অ্যাবি রোড ও এর জেব্রা ক্রসিং বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তার তালিকায়।
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |