ভ্রমণ কাহিনি: ছুঁয়ে আর্দনেসের সবুজ পাহাড়

চকচকে সাদা রঙের যে বিএমডব্লিউ গাড়িটি নাটকীয় ব্রেক কষে রাস্তার পাশে সরে গিয়ে তার চালকের দিকের দরজাটা খুলে দিলো সেখান থেকে হাস্যোজ্জ্বল সেই নারীর দেখা মিললো।

মোস্তফা মহসীন, বেলজিয়াম থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 August 2020, 06:33 AM
Updated : 31 August 2020, 06:44 AM

প্রথম দর্শনে বিভ্রমের কুয়াশা। লৌহমানবী আঙ্গেলা মের্কেল নাকি! না, দেখতে অনেকটা সেরকমই। কুজ্ঝটিকা আবরণ সরিয়ে ফর্সা ওই মুখ দেখে মনে হলো হৃদয়টা যেন এক কমনীয়তার অন্তঃশীলা। তবে মের্কেলের মতো চেহারায় ফ্যাকাশে ভাব নেই। জার্মান নারীদের বয়স বোঝাটা মুশকিল। ঈষৎ রক্তাভ মুখের আনন্দ লহরী যেন বুঝিয়ে দিচ্ছে বড়জোর ত্রিশোর্ধ্ব।

নারীটি এগিয়ে এসে স্মিত হাস্যে বন্ধুতার হাত বাড়িয়ে দিলেন।

হ্যালো, গুটেন টাগ। (সুন্দর দিন)

ভি হেইসেন জি। (তোমার নাম কি?)

ইস হেইসেন মোস্তফা মহসীন। (আমার নাম মোস্তফা মহসীন)

ভহের কমে জি? (তুমি কোথা থেকে এসেছ?)

ইস কমে আউস বাংলাদেশ। (আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি)

ড্রাফটি ইস ডাইনেন নামেন ভিজেন? (দয়া করে আমি কি তোমার নাম জানতে পারি?)

মেইন নেইম ইজ লিন্ডা স্ট্রাউস। (আমার নাম লিন্ডা স্ট্রাউস)

তখন ছয়মাসের জার্মান বসবাসের অভিজ্ঞতায় এর চেয়ে বেশি বাতচিত চালানো গেল না। কলোনিয়াল দাস, তাই ইংরেজির কাছেই ফিরে ফিরে নতজানু হই। একহারা শরীর, জিন্সের প্যান্টে লেপ্টে থাকা সুগঠিত নিতম্ব, ঢাউস স্তন, পুরনো ছাঁটের হেয়ার স্টাইল, ডাগর চোখে নেশাধরানো নীল, মুখাবয়বেও যেন ছড়িয়ে পড়েছে মায়ার আবির। মনে মনে ভাবি, লিন্ড কি রবীবাবুর সেই ‘আমি চিনি গো চিনি তোমারে ওগো বিদেশিনী/ তুমি থাকো সিন্ধুপাড়ে ওগো বিদেশিনী/ তোমায় দেখেছি শারদপ্রাতে, তোমায় দেখেছি মাধবী রাতে...।’

ঘুরতে বেরিয়েছি একা একা। নির্জন পথে। জার্মানির স্লাইডেন শহর থেকে কিছুটা দূরে লাক্সেমবার্গ, পশ্চিম জার্মানি, আর পূর্ব বেলজিয়ামের একটি পর্বতমালায়। পর্বতমালার শান-শওকত দেখতে দেখতে সেখান থেকে বেলজিয়াম সীমান্ত ক্রস করে বেলজিয়ামের সবুজ পাহাড়েও হারিয়ে যাবো ভাবছি। শেষবার নিরুদ্দেশ হবার আগে তাই হরিণ শাবকের মতোই দেখে নিতে চাই আশপাশে আসলে কি রয়েছে।

‘আইফেল ন্যাশনাল পার্ক’ বলে এখানে একটি জাতীয় উদ্যানের দেখা মিললো। রাজ্যের নাম জানিয়ে রাখি উত্তর রাইন ওয়েস্ট ফালিয়া। সেই রাজ্যের অনেক গভীর চিত্রপটে হারিয়ে গেলে, আপনি পেয়ে যাচ্ছেন বেলজিয়াম আর রুর লেকের সীমান্তবর্তী একটি বৃহৎ জলাশয়। এখান থেকে গ্রীষ্মদিনের খোলা হাওয়ার গল্পে মজে আরও অতলে হারিয়ে গেলে, একশো দশ কিলোমিটারের মতো জীববৈচিত্র্যের বিরাট সংরক্ষণ অঞ্চল।

লিন্ডা স্ট্রাউস হাঁটছে সাবলীল ভঙ্গিমায়। ও ওর যাত্রাপথ জানে, কোথায় বিরতি নিতে হবে, কতটুকু নিতে হবে? পদযাত্রায় কার্বোহাইড্রেট ও সুগারের ঘাটতি মেটাতে কোন সময়ে কয়টি কলা খেতে হবে, সবই নিয়মে নির্দিষ্ট। জার্মানদের এ শৃঙ্খলার সঙ্গে আমার নিয়ম মিলবে না। আমি বাঙাল আমি অলস। প্রকারান্তরে আমি এ পৃথিবীর সুখী মানুষদের একজন। সুতরাং ‘কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা মনে মনে!/ মেলে দিলেম গানের সুরের এই ডানা মনে মনে...।’

বিকেলটা সুন্দর ছিল, তার সঙ্গে মে মাসের ম্লান সূর্যালোক ঠিকরে পড়ে যেন ধুয়ে দিচ্ছিল আইফেল ন্যাশনাল পার্কের ল্যান্ডস্কেপ। পার্ক জুড়ে রয়েছে ঘন সবুজ বন, স্ফটিক স্বচ্ছ হ্রদ, ঘূর্ণায়মান পাহাড়, অন্তহীন হাইকিং ট্রেলস। লিন্ডা একজন  শৌখিন হিচ-হাইকার। উইকএন্ডে সে বেরিয়ে পড়েছে নিজের দেশটাকে আরো ঘনিষ্ঠভাবে জানবে বলে। ব্যাকপ্যাক হাতড়ে বুস্ট এনার্জি ড্রিংকস ছুড়ে দিল আমার দিকে। নিজের জন্য আরেকটি নিয়ে আপন মনে সিগারেটের ধোঁয়া উড়িয়ে দিল শূন্যে।

বাংলাদেশ সম্পর্কে বেশ ধারণা থাকলেও ভারতবর্ষ নিয়ে অবারিত কৌতুহল। এর নেপথ্যে অভিনেতা কিং খান। ‘চালতে চালতে’, ‘স্বদেশ’, ‘বীরজারা’, ‘ডন’, ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’, ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’ ছবিগুলো তার দেখা। বেলজিয়ামের সীমান্ত ছুঁয়ে, জার্মানির এক গহীন অরণ্যে অ্যাডভেঞ্চারের স্বাধীনতা আর ভ্রমণের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী এক জার্মান নারীর মুখে কিনা শুনছি ভারতীয় ছায়াছবির প্রশংসা! তাজ্জব বনে যাচ্ছি রীতিমতো। কথায় কথায় জানাচ্ছে, আমাকে ভারতীয় ভেবে প্রথম দেখায় নাকি ভুল করেছিলো, কিন্তু কিছুক্ষণের অভিজ্ঞতায় মনে হচ্ছে নট ব্যাড।

পাহাড়ের ভেতর রাত যাপনের কটেজে লেখক

বসন্ত ছুঁয়েছে পুরো ইউরোপ। টিউলিপের রঙে সেজেছে সারা আকাশ। এখন আমরা আছি প্রযুক্তির ঝমকালো রূপ থেকে অনেক অনেক দূরে যেখানে সচরাচর জন-মানুষের দেখা মেলে না। হাঁটাপথে ক্লান্তির ঝিমুনিতে বসেছি এক পাহাড় আবৃত মাঠের উপর। নিচে বাদামি মাটির কারণে দূরের লেকের জলের রঙও অসম্ভব বাদামি দেখাচ্ছে। এমন সময় প্রকৃতির স্তব্ধতা মাড়িয়ে নিজের দিকে আমাকে ফেরাতেই কিনা ভয়ার্ত স্বরে গলাখাঁকারি দিয়ে ওঠে কেউ।

আরে লিন্ডা না! বুঝি একটি খেঁকশিয়াল! ভয়ার্ত চোখে লিন্ডার দিকে তাকাই। লিন্ডার শুভ্র দু’পাটি দাঁতে তখন উপচে পড়েছে হাসির ফোয়ারা। দ্রুত আশংকা সংবেগ তাড়িয়ে আমার চোখে অপরূপ স্নিগ্ধতা। পাহাড়ের স্তন বেয়ে নেমে আসা ঝর্ণা আর তার সেই স্ফটিক জলে রাজহাঁসদের সেকি নয়নাভিরাম আনন্দবিহার। জলের উপরভাগে আমার মতোই উদ্দেশ্যহীন দূরে কোথাও উড়ে যাচ্ছে একটি মাছরাঙা। অথচ আমি কিনা খেয়াল রাখছি না, আমার পাশে এক জীবন্ত নারীসত্তা, যার ওষ্ঠে ফুটেছে আরও প্রাণবন্ত ঝর্ণা।

এ মনোরম বনবিথীতে তুমি যখন সম্পূর্ণ একা একটি মেয়েকে কাছে পেলে, একজন বাংলাদেশি হিসেবে তুমি কি খুব রোমাঞ্চিত বা উত্তেজিত?

হ্যাঁ, তা তো বটেই (উত্তর দিই সলাজ অনুভূতিতে)

এ রোমাঞ্চকর মুহূর্তগুলোতে ভারতীয়দের মতো তোমার দেশের পুরুষরাও কি মেয়েদের হাত ধরে গান গেয়ে নিজের অনুভূতির জানান দেয়?

অনুভূতি তো আসলে আপেক্ষিক। এর একটা দেশজ রূপ থাকতেই পারে। ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যবাদে নিশ্চয়ই তুমিও বিশ্বাসী?

ছবিতে যেমন শাহরুখ খান, সালমান খানরা তাদের বান্ধবীদের জড়িয়ে ধরে গান গায়, তোমারও যদি সেরকম ইচ্ছে থাকে! প্রাণখুলে গাইতে পারো আমার হাত ধরে, আমি উপভোগ করবো।

আমার গানের গলায় সুর নেই, তা-ই গানের চেষ্টা কখনো করিনি। আর জানো তো, গান-নাচ কিন্তু একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। আমি অতিশয় দুঃখিত।

উপরের অস্তাচল দিয়ে গরম দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ঘর থেকে ১৬-১৮ ডিগ্রি দেখে বেরুলেও এখন তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রিতে পৌঁছেছে। নারীর মনের মতোই ক্ষণে ক্ষণে রূপ পাল্টায় ইউরোপের আবহাওয়া। ‘সি ইউ অ্যাগেইন ফ্রেন্ড অন সাচ অ্যান এক্সাইটিং জার্নি। বি ওয়েল’ শোনামাত্র মনে হলো এ মুহূর্ত থেকে দুজনের পথ দুইদিকে বেঁকে যাবে। লিন্ডা ফোন নম্বর ধরিয়ে দিয়ে বুকে জড়িয়ে নিলো কোলাকুলির ভঙ্গিতে।

আমি ওর নিঃশ্বাসের শব্দে শিহরিত হচ্ছি। মনে হচ্ছে একজন অর্গানবাদক যেন একটি চমৎকার কম্পোজিশন মধ্যপথে থামিয়ে দিল। মাত্রই তো কয়েক ঘণ্টা, যেখানে সংবেদনশীলতা ছাড়া অনুভূতির কোনও স্থান ছিলো না। আমি আবারও নিরীহ পাহাড়ের সারিতে আমার আত্মাকে টেনে নিই। ভাবি, স্মৃতি আর দৃষ্টির গোপনতম কোনো কিছু লুকানোর জন্য এরকম ভ্রমণে অনেকগুলো বছর নয়, পাহাড়-ঐশ্বর্যে শুধু একটি দিনই যথেষ্ঠ। উজ্জ্বল দিন আর পাহাড়ের বৈচিত্র্য দেখবো বলেই নির্জনতায় মিশিয়ে দিই ব্যক্তিগত একাকীত্ব। আমার যাত্রা শেষ হবে জার্মান-বেলজিয়ামের সীমান্তবর্তী শহর শেনবার্গে, আর লিন্ডা ফিরে গেল জার্মানির কোলন শহরে।

বিশাল পাহাড়ের পাদদেশ বেয়ে উপরে ওঠার আপ্রাণ চেষ্টায় হাইড্রেনজিয়া, থোকা থোকা ভিক্টোরিয়ান গোলাপরাশি সুগন্ধ ঢেলে আমার পথকে স্বাগত জানাচ্ছে। আমি পরিব্রাজক হয়ে মুগ্ধতার সাঁতারে ভেসে যাচ্ছি। সামনে দোল খাচ্ছে বেলজিয়ামের একটি পাহাড়ি গ্রাম ‘ক্রেইনকল’। বেশিরভাগ মানুষেরই বয়স বাড়ার সঙ্গে হাঁটার গতি ধীর হয়ে আসে। সেই ধীর গতির মানুষটি আমাকে দেখে কৌতূহলে আরও ধীর হয়ে যান। টেকো মাথায় কিছু বিবর্ণ চুলের আভাস তখনও রয়ে গেছে। মুখে অল্প কয়েকটি দাঁত, একদা যদি তার প্রপিতামহের মাহাত্ম্য থেকেও থাকে, দুর্দশাগ্রস্ত ভেজা চামড়া দেখে মনে হল আজ তা বেশ ম্লান।

দীর্ঘসময় বুড়োর দিকে চেয়ে থেকে তাকে আমার একান্ত আপন মনে হল। সেই বুড়ো লোকটা আমাকে দেখালেন, সভ্যতা থেকে দূরে আদিম বন্যজীবন কেমন হয়। তিনি জানালেন, বেলজিয়াম একটি ছোট দেশ কিন্তু এটি বিশ্বজুড়ে বন্যপ্রাণীর অন্যতম সংরক্ষণস্থান হিসেবে পরিচিত। আরও জেনে মুগ্ধ হলাম, বেলজিয়াম সীমান্ত ঘেঁষে তিনপ্রকারের সুরক্ষিত জমি রয়েছে। এগুলো মূলত প্রকৃতি সংরক্ষণাগার, বন সংরক্ষণাগার ও জাতীয় উদ্যান সংরক্ষণাগার হিসেবে বিবেচিত হয়।

ক্লান্তিতে আকাশ আর পাহাড় দুটো একইরকম লাগে। ছাই ধূসর রঙের। অনেক পাহাড়-পর্বত, রিজার্ভ ফরেস্ট মাড়িয়ে অবশেষে বাজার। এ বাজার আমাদের দেশের মতো নয়। কেমন যেন দোকান দোকান ভাব। পাশেই সরাইখানা অথচ নেই হল্লা। প্রচুর ভদকা গিলে কয়েকজন পরিণত নারী গোঙাচ্ছে। জনা কয়েক নৃত্যরত। উচ্চস্বরে যে গান বাজছে সেটা সম্ভবত ফ্লেমিশ ভাষা। বুড়ো জানাচ্ছেন, বেলজিয়ামের সাতানব্বইভাগ মানুষই শহরে বাস করে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।

কিন্তু যৌবনে অরণ্য-পাহাড় তাকে ডেকেছিলো। সেই ভালোলাগা থেকেই আদিম মানুষের মতো সরল জীবন-যাপনে অভ্যস্থ হয়ে ওঠেছেন। এ গহন গহীনতায় অন্তরাত্মা সঁপে দিয়েছেন। রাত যতোই গাঢ় হচ্ছে ততোই গল্পে মজে যাচ্ছি। অবশেষে বুড়ো ডিনারের আমন্ত্রণ না জানিয়ে নিরস্ত হলেন না। বেলজিয়ামের ঐতিহ্যবাহি খাবারে সাধারণত থাকে মাংস, পনির ও মাখনের সমাহার। এ ধরণের খাবার ছাড়াও মেন্যুতে শোভা পাচ্ছে আলু, লিকস, ধূসর চিংড়ির সমন্বয়ে তৈরি সুস্বাদু ‘অ্যাম্পারাগাস’।

কিন্তু আমাকে টানলো ঘোড়ার মাংসের তৈরি ‘ফ্রিকান্দেল’। রেস্তোরাঁটি ছোট। এখানেও বেজে চলেছে বেশ মোলায়েম স্বরের গান। সেই গান শুনতে শুনতেই আমি ফিরে যাচ্ছি বহুবছর পূর্বে পঠিত ‘ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য সি’ এর সেই বুড়ো সান্তিয়াগোর কাছে। সমুদ্রে মারলিন মাছের সঙ্গে ছিল যার যুদ্ধ। প্রেক্ষাপট ভিন্ন, কিন্তু এখানেও আরেক বুড়ো যে কিনা পাহাড়-পর্বতমালা দাপিয়ে বেড়ায় মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে। উপন্যাসের সমুদ্রে ছিল হাঙর আর আর্দনেসের ঘন পাহাড়ে বর্বর পশু।

কয়েক প্যাকেট বেলজিস চকোলেট আর বেলজিয়ামের বিখ্যাত বিয়ার ‘পেইল লাগের’ হাতে নিয়ে উদ্বাস্তু চোখে হাঁটি। রাত কাটাতে কটেজ খুঁজতে খুঁজতেই ভাবি, সমুদ্র যদি সব প্রাণীদের শিক্ষক হয়, তবে চোখের সামনে ভেসে বেড়ানো এ সুবিশাল পাহাড় তাহলে কি!

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!