‘সাউথ এশিয়ান্স ফর বাইডেন’ এর জ্যেষ্ঠ পরামর্শক ওসমান সিদ্দিক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেনের সমর্থনে দক্ষিণ এশিয়ানদের মোর্চা ‘সাউথ এশিয়ান্স ফর বাইডেন’ এর জ্যেষ্ঠ পরামর্শক হয়েছেন বাংলাদেশি-আমেরিকান ওসমান সিদ্দিক। 

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 August 2020, 05:37 PM
Updated : 29 August 2020, 05:37 PM

ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নির্বাচনী প্রচার কমিটি যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার এ সংবাদ জানায়। 

বাইডেনের রানিংমেট ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কমলা হ্যারিস মনোনয়ন পাবার পরই মার্কিন রাজনীতিতে দক্ষিণ এশিয়ানদের গুরুত্ব অবধারিত হয়ে উঠেছে। সেই আলোকে বাইডেন-কমলাকে বিপুল বিজয় দিতে দক্ষিণ এশিয়ানরা পৃথক একটি প্ল্যাটফরম থেকে কাজের সংকল্প নিয়েছে। এর আগে কখনোই এমনটি ঘটেনি। প্রসঙ্গত: 

ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, নেপাল, আফগানিস্তান, মালদ্বীপ এবং ভুটানের প্রায় ৮ মিলিয়ন অভিবাসী রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। 

এরসাথে যোগ হয়েছে এসব পরিবারে জন্মগ্রহণকারী যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা। 

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আইটি, চিকিৎসা, শিক্ষকতায় ভারতীয়রা দ্বিতীয় শীর্ষে অবস্থান করলেও বাংলাদেশিরাও পিছিয়ে নেই। এসব কারণে প্রশাসন এবং রাজনীতিতেও দক্ষিণ এশিয়ানদের এখন আর খাটো করে দেখার অবকাশ নেই বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং সমাজবিজ্ঞানীরা। 

তেমন একটি আমেজেই ‘সাউথ এশিয়ান্স ফর বাইডেন’-এর আবির্ভাব ঘটার সাথে সাথে ‘ইন্ডিয়ান্স ফর বাইডেন’, ‘বাংলাদেশি ফর  বাইডেন’, ‘পাকিস্তানি ফর বাইডেন’, ‘শ্রীলংকানিয়ান ফর  বাইডেন’ গঠিত হচ্ছে। অর্থাৎ সবকয়টি দেশের ফোরামের সমন্বয়ে জাতীয়ভিত্তিক ‘সাউথ এশিয়ান্স ফর  বাইডেন’ এর কমিটি সম্প্রসারিত হবে। 

‘বাইডেন-কমলা’  জুটির নির্বাচনী টিমের বিশেষ সহযোগী হিসেবে দক্ষিণ এশিয়ানদের এই মোর্চা তহবিল সংগ্রহের পাশাপাশি ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্তি এবং ভোট দেওয়ায় সবাইকে উৎসাহিত করার সাংগঠনিক তৎপরতা চালাবে বলে জানা গেছে। 

আগে থেকেই যারা ডেমোক্র্যাটিক পার্টির বিভিন্ন ফোরামে সক্রিয় ছিলেন তাদের সমন্বয়েই ‘বাইডেন-কমলা’র পক্ষে সকলে কাজ করবেন। ৩ নভেম্বরের নির্বাচনের আগেই ডাকযোগেও ভোট দেওয়া যাবে। এনিয়েও কাজ করবে ‘সাউথ এশিয়ান্স ফর বাইডেন’। 

ওসমান সিদ্দিক উচ্চ শিক্ষার জন্যে সত্তর সালের আগে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। শিক্ষা শেষে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা শুরু করেন এবং সেই সূত্রে সিটিজেনশিপও পান। তারপরই মার্কিন রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন তাকে ফিজিসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করেছিলেন। তারও আগে প্রেসিডেন্সিয়াল ডেলিগেশন হিসেবে মার্কিন প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন কিশোরগঞ্জের সন্তান ওসমান সিদ্দিক। 

বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ইন্সটিটিউটের ‘আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক’ হিসেবেও একবার দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট ক্লিনটনের ঢাকা সফরের সময়েও সাথে ছিলেন ওসমান সিদ্দিক। 

বহুজাতিক আমেরিকান সমাজে প্রধান একটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পর্যায়ে অতি পরিচিত ওসমান সিদ্দিকের মাধ্যমেই প্রবাসী বাংলাদেশি এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত আমেরিকানরাও ধীরে ধীরে সামনে অগ্রসর হওয়ার ক্ষেত্রে অনুপ্রাণিত হচ্ছেন। 

ওসমান সিদ্দিক সব প্রবাসীকে অনুরোধ জানিয়েছেন ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে ভোট দিতে কেউ যেন গড়িমসি না করেন। 

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম মুসলিম রাষ্ট্রদূত ওসমান সিদ্দিক বলেন, “এবারের নির্বাচনের গুরুত্ব অপরিসীম। অভিবাসীদের অস্তিত্বের স্বার্থে এবং মর্যাদার প্রশ্নে আসন্ন নির্বাচনে বাইডেন-কমলার বিজয়ের বিকল্প নেই।”

৩ নভেম্বরের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি থেকে বাংলাদেশি আমেরিকান নিনা আহমেদ এবং পেনসিলভেনিয়া স্টেট অডিটর জেনারেল ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত আমেরিকান ডোনা ইমাম টেক্সাসের কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট-৩১ এর মনোনয়ন পেয়েছেন। উভয়েরই জয়ের সম্ভাবনা প্রবল বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। 

তবে এ দুইজনের জন্যও নির্বাচনী তহবিল জোরদার করা জরুরি হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে বিচ্ছিন্ন কিছু উদ্যোগ দেখা দিলেও যতটা জোরালো হওয়া দরকার তার ধারেকাছেও যেতে পারেনি বাংলাদেশি আমেরিকানরা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!