করোনাকালে জার্মানিতে গবেষণার দিনগুলো

জার্মানি এসেছি এ বছরের মার্চে। আসার উদ্দেশ্য হলো, মে মাস থেকে জার্মানির হাইডেলবার্গ শহরের ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউটে পোস্টডক্টরাল (পোস্ট-ডক) গবেষণার কাজ শুরু করবো।

মো. জাহিদ হোসেন ভূঁইয়া, জার্মানি থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 July 2020, 10:02 AM
Updated : 1 July 2020, 10:02 AM

আসার পর হাইডেলবার্গ শহরের নিকটবর্তী শহর মানহাইমের একটি গেস্টহাউসে ওঠি। দিনকাল ভালোই কাটছিলো। নতুন পরিচিত লোকজনের সঙ্গে হাইডেলবার্গসহ কিছু স্থানে ঘুরতে গিয়েছি।

হাইডেলবার্গ অনেক সুন্দর শহর। হাইডেলবার্গ দুর্গ হাইডেলবার্গ শহরের প্রতীক। দুর্গের প্রথম অংশগুলো ১৩০০ সালের দিকে নির্মিত হয়েছিল। ১৭৬৪ সালে বজ্রপাতের পর দুর্গটি বসবাসের অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে। হাইডেলবার্গ দুর্গের ধ্বংসাবশেষ থেকে খুব সহজে শহরের সৌন্দর্য ও প্রাকৃতিক অনাবিল দৃশ্য দেখা যায়।

জার্মানির প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়টি এ শহরে অবস্থিত। সবুজ পাহাড়বেষ্টিত নেকার নদীর কুলকুল ধ্বনিতে মুখরিত এ শহরটি ভ্রমণপিপাসুদের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে।

খুব বেশি ঘুরতে পারিনি। জার্মানিতে আসার দুই সপ্তাহ পর করোনাভাইরাসের কারণে শুরু হয় লকডাউন। ধারণা করেছিলাম আমার পোস্ট-ডক শুরু হওয়ার আগেই লকডাউন শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমনের ঝুঁকি কমার কোনো লক্ষণ দেখলাম না। এদিকে আমাকে হাইডেলবার্গের বাসায় উঠতে হবে।

যদিও গণপরিবহন সীমিত আকারে চালু ছিল, সংক্রমণের ঝুঁকি এড়ানোর জন্য ট্যাক্সি ভাড়া নিলাম। ভাড়া গুণতে হলো ৪৮ ইউরো। ড্রাইভারকে বখশিস দিলাম ২ ইউরো। ড্রাইভার আমাকে হাইডেলবার্গে বাসার সামনে নামিয়ে দিলো। পাহাড়ের পাদদেশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত হাইডেলবার্গ শহরের এই বাসাটা ভালোই লাগে। সকালবেলা পাখির কিচিরমিচিরে ঘুম ভাঙে।

করোনাভাইরাস মহামারী চলাকালীন ম্যাক্স প্লান্ক ইনস্টিটিউটে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ মনে হলো। ইনস্টিটিউটের সঙ্গে যোগাযোগ করলাম। তারা আমাকে প্রাতিষ্ঠানিক ইমেইল আইডি দিলো এবং আমার ল্যাপটপ তাদের নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত করে দিলো যাতে করে আমি অনলাইনে তাদের লাইব্রেরি উপকরণের সেবা পেতে পারি। সেই থেকে আমি বাসায় বসে গবেষণার কাজ করছি।

জার্মানিতে ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউটগুলো গবেষণার জন্য খুবই নামকরা। এই ইনস্টিটিউটগুলো ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক সোসাইটির’ অধীনে। ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক সোসাইটির আগের নাম ছিল ‘কায়সার উইলহেলম সোসাইটি’, এটি ১৯১১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯১১ সাল থেকে এপর্যন্ত এ সোসাইটির ৩৩ জন গবেষক নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।

লেখক: গবেষক, ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট, হাইডেলবার্গ, জার্মানি

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!