কোভিড-১৯: কেমন আছে পেন্সিলের শহর ফাবের কাস্টেল?

নুর্নবার্গের পাশের শহর স্টাইন। স্টাইনের অবস্থান নুর্নবার্গ আর ফুর্থের মাঝখানে। এটা খুব ছোট্ট একটা শহর। আমার বসবাস নুর্নবার্গ স্টাইনের সীমান্তে।

মমতাজুল ফেরদৌস জোয়ার্দারবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 May 2020, 01:50 PM
Updated : 31 May 2020, 01:50 PM

বাসা থেকে বেরিয়ে ৫/৬শ মিটার হাঁটলেই স্টাইন। আমার বাচ্চার বিদ্যালয়ও এই শহরে। শহরটা দুটো কারণে বিখ্যাত প্রথমটা হল ফাবের কাস্টেল আর দ্বিতীয়টা পাম বিচ। পাম বিচ আশেপাশের ১০/১২টা বড় শহরের মধ্যে সর্বাধুনিক ও সর্ববৃহৎ সুইমিং পুল যার ইনডোর এবং আউটডোর ব্যবস্থা আছে।

ফাবের কাস্টেল বিশ্বের প্রাচীনতম ও বৃহত্তম কলম, পেন্সিল ও কার্যালয় সামগ্রী সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের একটা। ফাবের কাস্টেলকে আপনারা ফ্যাবের ক্যাসেল, বলবেন কিন্তু নামটা জার্মান অতএব সে অনুযায়ী যা উচ্চারিত হওয়া উচিৎ তা আমি লিখেছি। ২০১৭ সালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান আলোকচিত্রী যখন জার্মানির নুর্নবার্গ আসেন তখন তাকে ফাবের কাস্টেল প্রাসাদ দেখতে নিয়ে গিয়েছিলাম। তিনি আমাকে বলেছিলেন, ফাবের কাস্টেল নিয়ে লেখার জন্য। বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে সেটা হয়ে ওঠেনি। কোরোনা অবরোধের মধ্যে বেরিয়েছিলাম কিছু ছবি তোলার জন্য। বর্তমান সময়ে তোলা ছবিগুলো একটা আলাদা গুরুত্ব বহন করে। কারণ ছবিগুলোর বিশেষত্ব হল প্রায় জনমানব শূন্য যা কল্পনাতীত ব্যাপার। গত ২৬ বছর জার্মানিতে এরকম জনমানবহীন পরিবেশে ছবি তোলার সুযোগ হয়নি। পরপর দুইদিন বিকালে হাঁটতে হাঁটতে ফাবের কাস্টেলের সামনে দিয়ে যাবার সময় বেশ কিছু ছবি তুলেছিলাম। একাধারে দুইদিন একই স্থানের ছবি তোলার কারণ হল আবহাওয়া, একদিন মেঘাচ্ছন্ন ছিল আর একদিন ছিল আকাশ পরিষ্কার।

প্রথমদিন ছবি তোলার সময় একটু বাধার সম্মুখীন হলাম, প্রধান ফটকে কর্মরত মহিলা আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন- আপনি কী করতে যাচ্ছেন প্রাসাদের মধ্যে। আমি জানালাম কিছু ছবি তুলতে যাচ্ছি; তিনি বললেন- ঠিক আছে ছবি শুধু ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য। আমি সম্মতি জানিয়ে ছবি তোলা শুরু করলাম। পরদিন ছবি তোলার সময় কর্তব্যরত ব্যক্তি কিছুই বললেন না। আমি তার কাছে ফাবের কাস্টেল সম্পর্কে কিছু তথ্য চাইতে তিনি আমাকে একটা প্রসপেক্টাস দিয়ে দিলেন। তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম- তাদের কারখানা এখন পরিদর্শন সম্ভব কিনা। তিনি জানালেন, করোনাভাইরাসের কারণে কারখানার সমস্ত বিভাগ এবং জাদুঘর এখন বন্ধ। এ সমস্যা শেষ হলেই কারখানা এবং জাদুঘর পরিদর্শন সম্ভব।

১৭৬১ সালে ফাবের কাস্টেল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ফাবের কাস্টেলের ১৬টি কারখানা রয়েছে ১০টি দেশে। এই প্রতিষ্ঠানের মূল দক্ষতা হল উচ্চমান সম্পন্ন অঙ্কন, লেখা, সৃজনশীল নকশা পণ্য উৎপাদন। বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর ফাবের কাস্টেল ২.৩ বিলিয়ন কাঠ পেন্সিল উৎপাদন করে থাকে। এই প্রতিষ্ঠান বিশ্বের বৃহত্তম পেন্সিল প্রস্তুতকারক। কর্মচারীর সংখ্যা বিশ্বব্যাপী ৮০০০, জার্মানিতে কর্মীর সংখ্যা ১১০০ জনের অধিক। ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, ল্যাটিন আমেরিকা, এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে ফাবের কাস্টেলের বিপণন ও বিক্রয় কেন্দ্র রয়েছে। মোট ২২ টি দেশে বিক্রয়সংস্থা ও ১২০টি দেশে বিক্রয় মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ২০১৮/২০১৯ অর্থ বছরে এই প্রতিষ্ঠানের সম্মিলিত উপার্জন ছিল ৫৮৭.৫ মিলিয়ন ইউরো।

১৭১৯ সালে প্রথম স্টাইনে পেন্সিল প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান আবির্ভূত হয়েছিল। কাঠমিস্ত্রি কাসপার ফাবের ১৭৫৮ সালে স্টাইনে স্থায়ীভাবে বসবাস এবং পেন্সিল উৎপাদন শুরু করেন। উৎপাদিত পেন্সিলগুলো নুর্নবার্গের বাজারে বিক্রি হত। ১৮৫১ সালে তাঁর উত্তরসূরি লোথার ফন ফাবের পেন্সিলের একটা মান প্রবর্তন করেন, যা পুরো পেন্সিল শিল্পের জন্য এখনও আদর্শ হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। ১৮৮১ সালে তিনি তার পরিষেবার জন্য সম্মানিত হন। লোথার ফন ফাবের পরবর্তীতে তার সংস্থার প্রধান কার্যালয় হিসাবে স্টাইনে একটা প্রাসাদ এবং কারখানা নির্মাণ করেন। যার কিছুটা অংশ নুর্নবার্গের মধ্যেও পড়ে। ঐতিহাসিক এই প্রাসাদই ফাবের কাস্টেল প্রাসাদ বা স্টাইনার স্লস হিসাবে পরিচিত।

১৮৬১ সালে প্রতিষ্ঠানের ১০০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জার্মানির গেরল্ডসগ্রুনে একটা শাখা খোলা হয়েছিল। এটা প্রথমদিকে শুধু স্লেট বোর্ড তৈরি করতো। লোথার ফন ফাবের জার্মানিতে ট্রেডমার্ক সুরক্ষা আইন প্রবর্তনে একজন পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেন। ১৮৭৪ সালে তিনি রাইখস্টাগে আবেদন করেছিলেন এই আইন প্রবর্তনের জন্য। তার কর্ম তৎপরতায় ১৮৭৫ সালের মে মাসে এই আইন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

ফাবের কাস্টেল প্রাসাদ এতটাই প্রসিদ্ধ এবং এর মালিকরা নির্লোভ ও বন্ধুত্বপূর্ণ যে এখানে অনেক জনপ্রিয় জার্মান চলচ্চিত্র ধারণ করা হয়েছে। এরজন্য মালিকপক্ষ কোনও ভাড়া নেননি। এটাই তাদের পারিবারিক ঐতিহ্য এই প্রাসাদের একটা বড় অংশ অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে, তারপরও তা ভাড়া দেওয়া হয় না।

লোথার ফন ফাবের তার জীবদ্দশায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, কোম্পানির উত্তারিধাকারকে ফাবের বংশীয় নামটা ধরে রাখতে হবে। ১৮৯৬ সালে লোথার ফন ফাবেরের মৃত্যুর পর তার নাতনি টিলি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পান একসময়। তিনি ১৮৯৮ সালে বিয়ে করেছিলেন আলেকজান্ডার গ্রাফ ছু কাস্টেল রুডেনহাউসেনকে। যা ছিল ফাবের পরিবারের জন্য অত্যন্ত আনন্দময় ঘটনা। সে সময় ফাবের পরিবারে আনন্দের আলোকচ্ছটা বয়ে গিয়েছিল। বিয়ের পর তিনি পারিবারিক নাম ফাবের রেখে স্বামীর পারিবারিক নামের সাথে সমন্বয় করে নাম নেন ফাবের-কাস্টেল। সেই থেকে এই প্রতিষ্ঠানের নাম হয়ে যায় ফাবের-কাস্টেল। এই প্রতিষ্ঠান এখন নবম প্রজন্মের হাতে।

বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রম, নিপীড়িত মানুষের সেবায় এই প্রতিষ্ঠান আর্থিক সাহায্য করে থাকে। বিশ্বের অনেক দরিদ্র ছাত্র-ছাত্রীকে এই প্রতিষ্ঠান বৃত্তি প্রদান করে। বর্তমান প্রজন্মের আগে যিনি এই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার ছিলেন তিনি হলেন কাউণ্ট আন্টন-ভলফগাং ফন ফাবের-কাস্টেল। তিনি ছিলেন খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ মানুষ। আমার পরিচিত এক নারী তার সামাজিক কার্যক্রম নিয়ে অভিভূত হয়ে দেখা করার আগ্রহ প্রকাশ করে চিঠি লিখেছিলেন। তিনি আমার সেই পরিচিতাকে এক রোববার সকালে নাস্তা খাবার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তার প্রাসাদে। আমার পরিচিতা জানিয়েছিলেন, সে এক রাজকীয় ব্যাপার তার জীবনের স্মরণীয় ঘটনা হয়ে থাকবে সেটা।

প্রতিবছর ফাবের-কাস্টেল যে ২.৩ বিলিয়ন পেন্সিল উৎপাদন করে, তার কাঠ তারা স্থায়ীভাবে পরিচালিত বন থেকে সংগ্রহ করে। ফাবের-কাস্টেল কাঠ-পেন্সিলগুলির ডিজাইন বৃত্তাকার থেকে ষড়ভুজ/ত্রিভুজে রূপান্তর করেছিল, কারণ সেগুলো টেবিলের উপর রাখলে ক্রমাগত গড়িয়ে পড়ে যেত।

ফাবের-কাস্টেল প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ২০ কিউবিক মিটার কাঠ উৎপাদন করে। মোটকথা বন থেকে তারা কাঠ পেন্সিল উৎপাদনের জন্য যে পরিমাণ কাঠ কাটে তার চেয়ে বেশি তারা উৎপাদন করে। অতএব তারা পেন্সিলের জন্য কাঠ ব্যবহার করে পরিবেশের কোনও ক্ষতি করে না। সংস্থার নিজস্ব বনগুলির এক তৃতীয়াংশ স্পর্শ করা হয় না। ৬৬০ রকম আদিবাসী প্রাণী ও উদ্ভিদ প্রজাতির বাসস্থান এই অস্পর্শিত বন। ফাবের-কাস্টেলের নিজস্ব দশ হাজার হেক্টর পাইনের বন আছে। এগুলো তাদের পেন্সিলের কাঁচামালের চাহিদা পূরণ করে। বিশ্বব্যাপী তাদের সংস্থার ৮৬ শতাংশ কাঠের চাহিদা পূরণ করে এই পাইন বন। ফাবের-কাস্টেল একশ ভাগ এফএসসি অথবা পিইএফসি অনুমোদিত কাঠ ব্যবহার করে বিশ্বব্যাপী তাদের প্রতিষ্ঠানের জন্য। প্রতি বছর, প্রায় ৩ লাখ চারা সংস্থার নিজস্ব বনাঞ্চলে রোপণ করে। তারা প্রতি ঘণ্টায় এক ট্রাকের মত কাঠ বৃদ্ধি করছে এই নতুন লাগানো গাছ থেকে।

পরিবেশ-বান্ধব শিল্প উৎপাদন পদ্ধতিকে ফাবের-কাস্টেল তার ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে প্রাধান্য দিয়ে থাকে এবং তারা দীর্ঘমেয়াদীভাবে কাঠের উৎস সুরক্ষিত রেখেছে। ব্রাজিলে, সংস্থাটি তার পরিচালিত বনগুলি থেকে দ্রুত বর্ধমান নরম কাঠ ব্যবহার করে এবং নিজস্ব গাছের বনগুলো সংরক্ষিত রাখে।

ফাবের-কাস্টেল সামাজিক দায়বদ্ধতার কাছে প্রতিশ্রুতি-বদ্ধ যেমন সমান সুযোগ, সমান চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং বিশ্বজুড়ে শিশুশ্রম অনুমোদন করে না। ফাবের-কাস্টেলের শিশু তহবিল উন্নয়নশীল দেশগুলির শিশু দাতব্য প্রতিষ্ঠানের প্রকল্পগুলিকে সহায়তা করে।

১৯২৫ সালের দিকে স্টাইনে ফাবের কাস্টেল একটি আধুনিক কর্মশালা নির্মাণ করে। কাউন্ট আলেকজান্ডার ভন ফাবের-কাস্টেল এই আধুনিক ভবন নির্মাণ শুরু করেন। এটি উৎপাদন প্রক্রিয়াগুলিকে আরও দক্ষ করে তোলে এবং উৎপাদন বাড়াতে সহায়তা করে। এই বিশাল ইউ-আকারের ভবনটি এখনও পেন্সিল উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।

সর্বদা গ্রাহকের কাছাকাছি থাকতে এবং পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে, ১৯ শতকের প্রথমদিকে আভে ফাবের প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্রগুলিতে প্রতিষ্ঠানের শাখা খোলে। প্রথম আন্তর্জাতিক শাখা খোলা হয়েছিল ১৮৪৯ সালে নিউ ইয়র্কে তারপর ১৮৫৫ সালে প্যারিসে।

আমরা জানি যে পেন্সিল ১৬তম শতাব্দী থেকে উৎপাদিত হচ্ছে। পুরানো উৎপাদন উৎপাদন পদ্ধতি ধারাবাহিকভাবে উন্নত, যান্ত্রিকীকরণ হয়েছে এবং এখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে উৎপাদিত হচ্ছে। তবে মূল নীতিটি একই রয়ে গেছে।

নূর্নবার্গের নিকটবর্তী স্টাইনে ফাবের-কাস্টেল একটা ঐতিহাসিক প্রাঙ্গণকে তাদের শিল্প ঐতিহ্যের জীবন্ত সাক্ষী হিসাবে রূপান্তরিত করেছে। সেখানে দর্শকরা অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে ১৯ ও ২০ শতকে কেমনে পেন্সিল তৈরি করা হত। সে ঐতিহাসিক প্রাঙ্গণটি এখন আগের দশক এবং শতাব্দীর চিহ্ন বহন করছে।

ফাবের-কাস্টেল এখন দর্শনার্থীদের জন্য একটা অত্যাধুনিক অভ্যর্থনা কেন্দ্র নির্মাণ করেছে। নতুন দর্শনার্থী কেন্দ্রটি ব্র্যান্ড এবং কোম্পানির ইতিহাস অনুভবের প্রাণকেন্দ্র, এটি সর্বমোট ৮০০ বর্গমিটার এলাকা নিয়ে। এর আভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা শুধু নুভাউয়ের চারুত্বেরই প্রতিফলন ঘটায় না বরং এটি দর্শকদের ফাবের-কাস্টেলের বর্ণময় জগতে নিমজ্জিত করে। ৩২,৪০০ ভিন্ন রঙের পেন্সিল অতিথিদের নতুন ফ্লাগশিপ স্টোরের পথ নির্দেশ করে। সেখানে লেখার, অঙ্কন এবং সৃজনশীল নকশার পাশাপাশি গ্রাফ ফন ফাবের-কাস্টেলের সংগ্রহের একচেটিয়া ভাণ্ডার উপস্থাপনের জন্য সকল পণ্য উপস্থাপন করা হয়েছে।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের কারখানাগুলোতে ফাবের-কাস্টেলের কারখানাগুলোতে যে সকল পণ্য উৎপাদন করে তা স্টাইনের এই বিক্রয়কেন্দ্রে পাওয়া যায়। ফাবের কাস্টেলের প্রাসাদের সাথে একটা বড় পার্ক আছে এই পার্কের নামও ফাবের পার্ক, এটা নূর্নবার্গের সীমানায়। এই পার্কের মধ্য দিয়েই প্রতিদিন সকালে প্রাতঃভ্রমণে বের হই। এখানে হরিণসহ বিভিন্ন রকমের আদিবাসী প্রাণী বসবাস করছে।

ফাবের-কাস্টেল বলপয়েন্ট পেন, ব্ল্যাক লিড পেন্সিল, রঙিন পেন্সিল, কম্পাস, ক্রাইওনস, এসেনসিও, ফাইনেলাইনার, ফাইবার টিপ কলম, ঝর্ণা কলম, গ্রাফাইট পেনসিল, গ্রিপ মার্কারস, গ্রিপ রেঞ্জ, মার্কারস, মেকানিকাল পেন্সিল, মাল্টিমার্ক, এনস পেন, নিও স্লিম, ওন্ডোরো, পারফেক্ট পেনসিল, পলি ম্যাটিক মেকানিকাল পেন্সিল, পলি বল বলপয়েন্ট কলম, রোলারবল কলম, প্রযুক্তিগত অঙ্কন এবং ডব্লিউআরআইটি কালি ছাড়াও অনেক কার্যালয় সরঞ্জাম উৎপাদন করে।

ফাবের-কাস্টেলের বার্ষিক আয় ৫৮ কোটি ৭৫ লাখ ইউরো। বর্তমান সময়ে করোনাভাইরাসের কারণে কারখানা বন্ধ। একারণে প্রতিদিন প্রতিষ্ঠানটির ১৬ লাখ ৯ হাজার ৫৮৯ ইউরো লোকসান হচ্ছে। এরকম অবস্থা দীর্ঘায়িত হলে স্টাইন শহর বিশাল অংকের কর থেকে বঞ্চিত হবে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের শাখাগুলোর উপরও এর প্রভাব পড়বে। তাছাড়া তারা যে সকল সামাজিক কার্যক্রমে আর্থিক সহায়তা করে থাকে তাও বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

জার্মান জাতি খুবই ইতিহাস সচেতন। আনাচে-কানাচে কতভাবে যে তারা ইতিহাসকে সংরক্ষিত করেছে তা দেখলে আশ্চর্য হতে হয়। আর এই ইতিহাস সংরক্ষণ শুধু সরকারি পর্যায়ে না, বেসরকারি পর্যায়েও তা অত্যন্ত যত্নের সাথে সংরক্ষিত হয়েছে। ফাবের-কাস্টেল তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ।

লেখক: গবেষক, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, জার্মানি

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!