বাংলাদেশি অভিবাসীদের অধিকার সুরক্ষায় জাতিসংঘে সভা

বাংলাদেশি অভিবাসীদের অধিকার সুরক্ষায় জাতিসংঘে ‘অভিবাসন বিষয়ক বাংলাদেশ সংসদীয় ককাস ও অভিবাসন সংক্রান্ত এনজিও কমিটি ও সিভিল সোসাইটি’র সদস্যদের একটি পরামর্শমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে এ যৌথ পরামর্শমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে অংশ নেন অভিবাসন বিষয়ক বাংলাদেশ সংসদীয় ককাসের সভাপতি ও সংসদ সদস্য মো. ইসরাফিল আলম নেতৃত্বে বাংলাদেশ সংসদীয় দল।

মো. ইসরাফিল আলম বলেন, “নিরাপদ, নিয়মিত ও নিয়মতান্ত্রিক অভিবাসন এগিয়ে নিতে অব্যাহত কাজ করে যাবে বাংলাদেশ। এছাড়া বাংলাদেশ সরকার প্রবাসে বাংলাদেশি অভিবাসীদের অধিকার সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।”

অভিবাসনকে ‘বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি উন্নয়নমূলক ইস্যু’ হিসেবে উল্লেখ করে ইসরাফিল আলম বলেন, “বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়নে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিটেন্স তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। এছাড়া অভিবাসনকে ত্বরান্বিত করতে এবং অভিবাসন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন আইন প্রণয়ন করেছে যা বৈশ্বিকভাবে নিরাপদ, নিয়মিত ও নিয়মতান্ত্রিক অভিবাসনকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতিরই বহিঃপ্রকাশ।”

বাংলাদেশ ককাসের সভাপতি আরও বলেন, “অভিবাসনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নানা পক্ষের মধ্যে আলোচনা ও সংলাপের জন্য ‘গ্লোবাল ফোরাম অন মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ (জিএফএমডি) একটি কার্যকর প্লাটফর্ম। জিএফএমডির সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল ‘মানুষের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি’ ও ‘অনিবন্ধিত অভিবাসীদের ভোগান্তি’ বিষয় দু’টিকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেছে।”

এবছর জুলাই মাসে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিতব্য উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক ফোরামের (এইচএলপিএফ) আলোচনায় সরকার, সংসদীয় ককাস ও সিভিল সোসাইটিগুলোকে অভিবাসন সংশ্লিষ্ট ইস্যুগুলো তুলে ধরা উচিত বলে মতামত দেন ইসরাফিল আলম।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বাংলাদেশ সংসদীয় ককাসের প্রতিনিধিদল ও অভিবাসন সংক্রান্ত এনজিও কমিটি ও সিভিল সোসাইটির সদস্যদের স্থায়ী মিশনে স্বাগত জানান।

তিনি বলেন, “অভিবাসন বিষয়টিকে বাংলাদেশ যে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে তার উদাহরণ এ সংসদীয় ককাস সৃষ্টি। অভিবাসনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জিএফএমডি হলো সরকারি নীতি নির্ধারক ও সিভিল সোসাইটির মধ্যে সংযোগ তৈরির একটি প্লাটফর্ম।”

অভিবাসীদের অধিকার সুরক্ষায় ‘গ্লোবাল কম্প্যাক্ট অন মাইগ্রেশন’ এর বাস্তবায়নকে এগিয়ে নিতে জিএফএমডি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে বলে অভিমত দেন রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।

সভায় অন্যান্যের মাঝে অংশ নেন বাংলাদেশ সংসদীয় ককাসের সদস্য ও সাবেক এমপি মাহজাবিন খালেদ, বাংলাদেশি অভিবাসীদের অধিকার রক্ষা কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুল হক, ব্রিটিশ কাউন্সিল এর ‘দায়বদ্ধতা ব্যবস্থাপনার জন্য জ্ঞান উন্নয়ন প্রকল্প (প্রকাশ)’ এর দলনেতা জেরি ফক্স, প্রকাশ এর উপদেষ্টা শিরিন লিরা, অভিবাসন বিষয়ক এনজিও কমিটির সদস্য ইভা রিচার ও মারিয়া পিয়া মিগন্যাটি।

সভায় অভিবাসনের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ এবং এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিদ্যামান বিভিন্ন প্রক্রিয়া কিভাবে কাজে লাগানো যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া নারী অভিবাসীদের বিভিন্ন ঝুঁকি, অভিবাসীদের নিগ্রহ ও নির্যাতন এবং তাদের সঙ্কট সভার আলোচনায় গুরুত্ব পায়।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা [e-mail]। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!