সৌদি আরবে অবৈধ শ্রমিকদের বিশেষ প্রত্যাবাসন কর্মসূচি

সৌদি আরবে অবৈধ হয়ে পড়া শ্রমিকদের জন্য দেশটির সরকার ঘোষিত ‘বিশেষ প্রত্যাবাসন কর্মসূচি’ চলছে। এ সুযোগ নিতে রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসে ভিড় করছেন বাংলাদেশি শ্রমিকরা।

শেখ লিয়াকত আহম্মেদ, সৌদি আরব প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Jan 2020, 07:21 AM
Updated : 10 Jan 2020, 07:21 AM

গত ২২ ডিসেম্বর দূতাবাসের শ্রমকল্যাণ শাখার তত্ত্বাবধানে চালু হওয়া এ প্রত্যাবাসন কর্মসূচি সম্পর্কে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বিস্তারিত জানান দূতাবাসের শ্রমকল্যাণ কাউন্সেলর মেহেদী হাসান।

তিনি বলেন, “সৌদি আরবে অবৈধ শ্রমিকদের ‘আউট পাস’ নয়, চলছে কোম্পানির অবৈধ শ্রমিকদের বিশেষ প্রত্যাবাসন কর্মসূচি। এটি চলমান থাকবে, বন্ধ হওয়ার কোনো সম্ভবনা নেই। শ্রমিকদের আতঙ্কিত বা তাড়াহুড়ো করার কিছু নেই।”

মেহেদী হাসান জানান, সৌদি সরকার ঘোষিত বিশেষ প্রত্যাবাসন কর্মসূচি আগে থেকেই চালু ছিল। বাংলাদেশ দূতাবাস এ কর্মসূচি যখন চালু করে তখন সৌদি সরকার থেকে বলা হয় এ বিশেষ প্রত্যাবাসন কর্মসূচি সীমিত সময়ের জন্য নয়, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।

এ কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকে দূতাবাসে সেবাপ্রত্যাশিদের ভিড়ে স্থানীয় প্রশাসন সেবা কার্যক্রম দূতাবাসে না করার আহ্বান জানায়। এরপর কর্মসূচি চালু রাখার জন্য সৌদি শ্রম আদালত দূতাবাসকে একটি অফিস বরাদ্দ দেয়। সেখানে দূতাবাসের শ্রমকল্যাণ উইং নিয়মিত কাজ করছে।

শ্রমকল্যাণ কাউন্সেলর মেহেদী হাসান

মেহেদী হাসান বলেন, “যাদের ইকামা (রেসিডেন্ট পারমিট) মেয়াদ উত্তীর্ণ অথবা যাদের হুরুব (কর্মস্থল থেকে পালাতক) আছে এমন বাংলাদেশিরা কোনো ধরনের জেল জরিমানা ছাড়াই সৌদি আরব ছাড়তে পারবে। তবে যাদের ইকামা মেয়াদ উত্তীর্ণ তারা এ সেবা নিয়ে দেশে গেলে আবার সৌদি আরব আসতে পারবে। আর যারা হুরুব তারা দেশে গেলে আর কোনোদিন সৌদি আরব আসতে পারবে না।”

সৌদি সরকারের বরাদ্দ দেওয়া অফিসের পরিবর্তে দূতাবাসের পক্ষ থেকে অফিস ভাড়া নিয়ে এ কার্যক্রম চলমান রাখা যায় কিনা এ প্রশ্নের জবাবে মেহেদী হাসান বলেন,  “শ্রমিকদের কল্যাণে দূতাবাস সেটিকে বিবেচনায় রেখেছে।”

রিয়াদে সেবা নিতে আসা প্রায় ৫৫ বছর বয়সী লক্ষ্মীপুরের সিনু সরদার জানান, দীর্ঘদিন কফিল (নিয়োগকর্তা) ইকামা করে না দেয়ায় অবৈধ হয়ে যাই। দেশে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল, সৌদি সরকার দেশে যাওয়ার সুযোগ দেয়ায় এখানে এসেছি। দূতাবাসের সহায়তায় এখন দেশে চলে যাবো।

দূতাবাসের সেবায় সন্তোষ জানিয়ে নোয়াখালীর মাসুদুল ইসলাম (৬৫) জানান, ৩০ বছর ধরে সৌদি আরবে আছি। বয়সের কারণে এখন কাজ করতে পারি না। কফিল টাকা নিয়ে আকামা করে দিচ্ছে না। যার কারণে অবৈধ হয়ে গিয়েছি। এখন দেশে চলে যাবো।

কাউন্সেলর মেহেদী হাসান বলেন, “সৌদি আরবের বিভিন্ন শহরে পর্যায়ক্রমে এ সেবা দেওয়া হবে। রিয়াদে সৌদি শ্রম আদালত বাংলাদেশ দূতাবাসকে যে অফিস বারাদ্দ দিয়েছিল সেটি আগামী ১২ থেকে ২৩ জানুয়ারি অন্য দেশের জন্য বারাদ্দ দিয়েছে। এসময় দূতাবাসের সেবা বন্ধ থাকবে এবং ২৬ জানুয়ারি পুনরায় চালু হবে।”

আগামী ১২ ও ১৩ জানুয়ারি আলহাসা ও তার আশপাশের এলাকায় দূতাবাসের শ্রমকল্যাণ উইং সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করবে বলে জানান শ্রম কাউন্সেলর।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!