প্রথমে সূর্যটা আস্তে সাগরের মাঝে বসে যায়। ডোবার সময় সূর্যকে লাল বলের মতো মনে হয়। তখন চারদিক লাল হয়ে যায়। নেমে আসে অন্ধকার। তবু ল্যাম্পপোস্টের আলোয় চারদিক বেশ পরিষ্কার মনে হয়।
অস্ট্রেলিয়াতে সি-বিচগুলো আমাদের দেশের মতো দীর্ঘ নয়। তবে বেশ পরিপাটি। সব সমুদ্র সৈকতে আছে জেটি, যা দিয়ে হেঁটে চলে যাওয়া যায় সমুদ্রের ভেতরে। এগুলো প্রাকৃতিক ঘটনা। প্রতিদিন একই পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
কিন্তু আজকের দিনের ঘটনা একটু অন্যরকম। ডুবন্ত সূর্য আর সমুদ্রের অপরূপ সৌন্দর্য সবাইকে হাতছানি দেয়। সাগরের তীরে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয় এই মনোরম দৃশ্য দেখার জন্য। নতুন বছরের উৎসব সবখানেই নানাভাবে পালিত হয়। অস্ট্রেলিয়াতে এই উৎসব নানাভাবে উদযাপিত হয়েছে।
বিকেল থেকেই নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ জড়ো হতে শুরু করে দেয় বিভিন্ন স্থানে। হালকা সূর্যের তাপে ঘাসের উপর সবাই বসে থাকে। অনুষ্ঠানের স্থানে থাকে পানির উৎস। পানির স্পর্শ বাতাসে দেয় বাড়তি স্নিগ্ধতা। আর এগুলো দূর করে পুরাতন দিনের ক্লন্তি, জোগায় সাহস। দিনের আলো যত কমে যায় মানুষের কোলাহল তত বাড়তে থাকে।
সব জায়গায় আছে মানুষের সরব উপস্থিতি। দেখা যায় তাদের ভয়হীন পদচারণা। এভাবে রাত গড়াতে গড়াতে বারোটা বেজে যায়। এভাবে ফায়ার ওয়াক্সের শব্দে বরণ করে নিল সবাই নতুন বছর। এর সঙ্গে থাকে মানুষের হর্ষধ্বনি। শুরু হয়ে যায় নতুন জাগরণ, যা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে এই শহরের আনাচে কানাচে, যা সভ্যতা নির্মাণে সহযোগিতা করবে বলে মনে হয়। আলোকিত করবে বিশ্ব।
সময় বড় নিষ্ঠুর। যার গতি সামনে ধাবমান। এদিনে সবাই একরকম ভাবতে পারছে না। সময়ের কাছে সবাইকে মানতে হয় হার। নানা বয়সী মানুষ এসেছে এখানে। সবার এই বছর বিদায়ের অনুভূতি এক নয়। শিশুর কাছে নতুন বছর মানে বড় হওয়ার ঘটনা। তরুণের কাছে যার মানে নতুন দিক উন্মোচনের সূচনা। আর বৃদ্ধের কাছে বছর বিয়োগের মর্মকথা।
সবার চলন বলনে এই কথাগুলোর ছাপ খুবই স্পষ্ট। এটাই জগতের নিয়ম। এভাবে পুরাতনকে পেছনে ফেলে নতুন ভবিষ্যৎ তৈরি করবে সবাই। যা দিয়ে গড়ে তোলা যাবে সাম্যের একটা দেশ। আর সাম্যই বয়ে আনবে বিজয়, অনাবিল সুখ ও শান্তি ।
লেখক: পিএইচডি কোর্সের শিক্ষার্থী, অ্যাডিলেইড বিশ্ববিদ্যালয়, অস্ট্রেলিয়া
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |