সোমবার দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত পত্রে জর্জিয়া রাজ্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি এবং অপর ৪ অঙ্গরাজ্য ফ্লোরিডা, ওয়াশিংটন ডি.সি, ম্যারিল্যান্ড ও কানেটিকাটের আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন এসেছে বলে জানান সেখানকার নেতা-কর্মীরা।
শীঘ্র নিউ ইয়র্ক, ভার্জিনিয়া, নিউ জার্সি ও টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের অনুমোদনও পাওয়া যাবে বলে জানা গেছে।
৮ বছর আগে লন্ডনে কয়েকজন নেতা-কর্মীকে ডেকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি ভেঙ্গে দেন সে সময়ে দলটির জ্যেষ্ট যুগ্ম মহাসচিব (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন) তারেক রহমান। এরপর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি নেই। এ নিয়ে নানা দেন-দরবারের মধ্যেই অঙ্গরাজ্যগুলোতে সাংগঠনিক কমিটি জোরদারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ আন্তর্জাতিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকন বলেন, “বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে তিন বছর আগে নতুন কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। তার অধিকাংশই তেমন তৎপরতা দেখাতে সক্ষম না হওয়ায় উপরোক্ত ৫ রাজ্যে পূর্ণাঙ্গ ও আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হলো। তবে সাংগঠনিকভাবে তেমন তৎপরতা পরিলক্ষিত না হলেও মিশিগান, ইলিনয়, ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি এখনও বহাল রয়েছে।”
ওয়াশিংটন ডি.সিতে বসবাসরত যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির সহ সভাপতি শরাফত হোসেন বাবু অঙ্গরাজ্যভিত্তিক কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, “যে সিটি অথবা রাজ্যে বিএনপির অনুসারি রয়েছেন সেখানেই একটি করে কমিটি গঠন করা দরকার। তাহলে প্রতিযোগিতামূলক সাংগঠনিক তৎপরতা শুরু হবে।”
বিএনপি মহাসচিবের অনুমোদনপত্র অনুযায়ী ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্য বিএনপির আহ্বায়ক এমরানুল হক চাকলাদার ও সদস্য সচিব হয়েছেন ইলিয়াস খান। বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি দিনাজ খান ও সাধারণ সম্পাদক আরিফ আহমেদ আশরাফকেও এ কমিটির সদস্য রাখা হয়েছে।
জর্জিয়া বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটির সভাপতি নাহিদুল এইচ খান সাহেল ও সাধারণ সম্পাদক মামুন শরীফ আমজাদ। ম্যারিল্যান্ড রাজ্যে আহ্বায়ক শহীদ খান চৌধুরী ও সদস্য সচিব সেলিম হোসেন।
কানেটিকাট অঙ্গরাজ্য বিএনপির আহ্বায়ক হয়েছেন তৌফিকুল আম্বিয়া টিপু ও সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন হিমু। ওয়াশিংটন ডি.সি বিএনপির আহ্বায়ক হাফিজ খান সোহায়েল ও সদস্য সচিব এ জে এম হোসেন।
ওয়াশিংটন ডি.সি বিএনপির সর্বশেষ কমিটির সাধারণ সম্পাদক এ জে এম হোসেন (নতুন কমিটির সদস্য সচিব) ক্ষোভ প্রকাশ করে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত দুই বছরে আমরা অনেক কর্মসূচি পালন করেছি। তবুও আমাদের সঙ্গে কোন ধরনের আলাপ-আলোচনা ছাড়াই আনোয়ার হোসেন খোকেন এ আহ্বায়ক কমিটির প্রস্তাব দিয়েছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসনকে সঠিক তথ্য না দেওয়ায় এমন পদক্ষেপে রাজধানী ওয়াশিংটন ডি.সিতে বিএনপির কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা আসতে বাধ্য।”
এ প্রসঙ্গে বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আব্দুল লতিফ সম্রাট বলেন, “আমার পদ-পদবির কোন আকাঙ্ক্ষা নেই। তবে যারা দীর্ঘদিন শ্রম-মেধা দিয়েছেন প্রবাসে বিএনপির রাজনীতিকে বহমান রাখতে, তাদের পক্ষে কী অঙ্গরাজ্য কমিটিতে যাওয়া সম্ভব? যুক্তরাষ্ট্রে যাদের সাংগঠনিক দক্ষতা রয়েছে এবং সে ধরনের বহু পরীক্ষায় তারা উত্তীর্ণ হয়েছেন ১/১১ পরবর্তী সময়ে, তাদের পক্ষে অঙ্গরাজ্য কমিটিতে নেমে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে আত্মহত্যার সামিল।”
ফ্লোরিডায় বসবাসরত বিএনপি নেতা মনির হোসেন কাজল বলেন, “বিএনপির চরম এ দুর্দিনে আন্তর্জাতিক লবিংয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির গুরুত্ব অপরিসীম। অথচ হাই কমান্ডে সেই মূল্যায়ন নেই। এটি হচ্ছে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের আদর্শে উজ্জীবিতদের জন্য খুবই দুর্ভাগ্যের একটি বিষয়।”