সৌদি আরবে সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালিত

যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সৌদি আরবে ৪৮তম বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী দিবস বাংলাদেশ দূতাবাসে উদযাপিত হয়েছে।

শেখ লিয়াকত আহম্মেদ, সৌদি আরব প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Nov 2019, 02:09 PM
Updated : 22 Nov 2019, 02:09 PM

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রিয়াদের ডিপ্লোম্যাটিক কোয়ার্টারের হোটেল ম্যারিয়ট এর হল রুমে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের জাতীয় সংগীত বাজানো হয়।

অনুষ্ঠানে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ, ডিফেন্স অ্যাটাচি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদ সিদ্দিকী বিএসপি, এডব্লিউসি,পিএসসি ও ডিপ্লোমেটিক মিনিস্টার আনিসুল হক সস্ত্রীক অনুষ্ঠানে আসা আমন্ত্রিত অতিথিদের স্বাগত জানান।

১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল স্বাধীনতা সংগ্রামে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী যৌথভাবে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমন পরিচালনা করে।এ দিনটির স্মরণে প্রতিবছর বাংলাদেশ ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস’ পালন করে । প্রতি বছরের ন্যায় সৌদিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রতিরক্ষা শাখা এবারও এ দিবস পালন করে।

দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সৌদি আরবের নৌবাহিনির রিয়ার অ্যাডমিরাল মনসুর বিন সালেহ আল-আসলানি। রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ এর সাথে তিনি সশস্ত্র বাহিনী দিবসের কেক কাটায় অংশ নেন।

রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে বলেন, “মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবদান অপরিসীম। ২১ নভেম্বর ১৯৭১ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গৌরবময় দিন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণার পর ওইদিন সাহসী মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে বাংলাদেশের সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী সম্মিলিতভাবে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে একযোগে আক্রমণ চালায় এবং মাতৃভূমিকে স্বাধীন করার জন্য সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিটি সদস্য তাদের সর্বোচ্চ দেশ প্রেম উৎসর্গ করে বিরল এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করে।“

“বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনি দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় পেশাদারী ও অত্যন্ত সুসংহত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনিকে আরও আধুনিকায়নের জন্য ‘ফোর্সেস গোল’ কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এই প্রতিশ্রুতি প্রদর্শনের জন্য, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী ১৯৮৮ সাল থেকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা অভিযান গুলিতে অংশ নিচ্ছে। হাইতি থেকে পূর্ব তিমুর, লেবানন থেকে কঙ্গো পর্যন্ত বিশ্বের সংঘাতপূর্ণ এলাকায় তাদের পদচারণ।বিশ্বমানবতা প্রতিষ্ঠায় আমাদের শান্তিরক্ষী বাহিনীর রয়েছে অসামান্য অবদান। শান্তি রক্ষা মিশনে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা বাংলাদেশ সেনা মোতায়েনের সংখ্যার বিচারেও অনেক দিন ধরে শীর্ষস্থান দখল করে রেখেছে। গত বছর নিউ ইয়র্কের ইউএন সদর দপ্তরে ইউএন শান্তিরক্ষা অভিযানগুলিতে বাংলাদেশের তিন দশক পূর্তি উদযাপিত অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের মহাসচিব বলেছিলেন, বিশ্ব সম্প্রদায় বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞ। কারণ তারা শান্তিরক্ষা মিশনে প্রতিজ্ঞাবন্ধতায় অত্যান্ত শক্তিশালী।”

তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সৌদি আরবের দুটি মসজিদ মক্কা মসজিদুল হারামাইন ও মদিনায় মসজিদুল নববীর মর্যাদা রক্ষায় বাংলাদেশের সশস্র বাহিনি সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে।

বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধে শাহাদত বরণকারী সকল সশস্ত্র বাহিনির সদস্য ও শান্তিরক্ষা মিশনে বিভিন্ন সময় প্রাণ হারানো ১৪৮ জন সেনা ও কর্মকর্তাদের গভীর কৃতজ্ঞতাভরে স্মরণ ও তাদের আত্মার শান্তি কামনা করেন তিনি।

সৌদি বাদশা সালমান বিন আজিজ ও প্রতিরক্ষা প্রতিরক্ষা মন্ত্রী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বিন আব্দুল আজিজ এর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রিয়ার অ্যাডমিরাল মনসুর বিন সালেহ আল-আসলানি এবং অনুষ্ঠানে আগত সবাইকে ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রদূত।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের সামরিক ও বেসামরিক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, বিভিন্ন দেশের  প্রতিরক্ষা অ্যাটাচি ও রাষ্ট্রদূত, দূতাবাসের সকল কর্মকর্তাবৃন্দ ও কর্মচারী, বাংলাদেশি ডক্টর, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যবসায়ী, রাজনিতিবিদ, সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার প্রবাসী বাংলাদেশি উপস্থিত ছিলেন।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!