রাজধানী রিয়াদ শহর থেকে প্রায় একশ কিলোমিটার দূরে একটি উপশহর আল-খারিজ। এটি মূলত একটি কৃষিপ্রধান এলাকা। বিস্তৃর্ণ মরুভূমির এই বিশাল এলাকার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য যেন এক টুকরো সবুজ বাংলাদেশ।
সেখানে গিয়ে কথা হয় ঢাকার নবাবগঞ্জের আব্দুল করিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, “দেশে কৃষিকাজে অভিজ্ঞতা থাকায় সৌদি আরবে এসে ওই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ফসল উৎপাদন করছি। দীর্ঘ ২২ বছর ধরে সৌদি আরবে কৃষিশ্রমিক হিসেবে কাজ করছি। এই কাজে পাওয়া মজুরিতে আমি এখন অনেকটা স্বাবলম্বী।”
তিনি আরও বলেন, “আমার এক ছেলে কলেজে পড়ে এবং মেয়ে স্কুলে পড়ালেখা করে। দেশের মতো এখানেও কাজ করতে ভালোই লাগে।”
গভীর নলকুপ থেকে পানি উত্তোলনে সমস্যা না হলেও মাজরা এলাকায় মশা, মাছি ও বিভিন্ন প্রকার কীট-পতঙ্গের উপদ্রব আছে বলে জানান সিরাজ মিয়া।
সৌদি আরবে কৃষিখামার একটি লাভজনক ব্যবসা, তবে এর পেছনে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। লাভ যেমন ঝুঁকিও রয়েছে। মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সৌদি আরবে ৪৮/৫০ ডিগ্রির প্রচণ্ড তাপমাত্রা থাকে। এসময় জমিনের ফসল গরমে মারা যায়, যাতে ক্ষতির পরিমাণটা অনেক বেশি।
শীতের মৌসুম ফসল উৎপাদনের সবচাইতে উপযুক্ত সময়। এসব কৃষি খামারে গোলআলু, মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়া, লাউ, ফুলকপি, বাঁধাকপি, গাজর, সিম, মুলা, করলা, ঢ়েড়শ, পালং শাক, লাল শাক ও ধনে পাতাসহ বিভিন্ন সবজি উৎপাদন করা হয়।
বিয়াদে বাঙালি অধ্যুষিত এলাকা বাথায় সবজি দোকানদার হারুন-উর রশিদের দোকানে বিভিন্ন রকমের শাকসবজি সাজানো। তিনি বলেন, “লাল আলু, কাকরল, পটল শুধু বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা হয়। বাকি সব স্থানীয়ভাবে বাংলাদেশিরাই উৎপাদন করে থাকেন। এমনকি বড় সাইজের পানি কচুও এখানে চাষ হয়।”
সৌদি সরকার কৃষিখাতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করে থাকে। অন্য পেশার একজন শ্রমিককে বিপুল পরিমাণ টাকা দিয়ে ইকামা (রেসিডেন্ট পারমিট) নবায়ন করতে হয়, সেক্ষেত্রে কৃষিকাজে নিয়োজিত পেশার একজন প্রবাসীর জন্য নামমাত্র মূল্যে ইকামার ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। যার জন্য ফসল উৎপাদনে খরচও কমে আসে যাতে লাভের পরিমাণটাও বেশি।
সৌদি নাগরিকদের কাছে কৃষিকাজের জন্য বাংলাদেশের নাগরিক প্রথম পছন্দ। কৃষিকাজে সহায়তায় জন্য আগামী মাসে সৌদি আরবের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দলের ঢাকা সফরের কথা রয়েছে।
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |