সেই দিন থেকে অপেক্ষার প্রহর গুণতে থাকি কবে যাওয়া হবে চীনের মহাপ্রাচীরে! অবশেষে তারিখ ঘোষণা করা হলো যে অক্টোবরের ১২ তারিখ আমাদেরকে ঘুরতে নিয়ে যাবে মহাপ্রাচীরে। ৮ সেপ্টেম্বর নোটিশ দেখামাত্র চলে গেলাম নির্দিষ্ট অফিসে। রেজিস্ট্রেশনের কাজ শেষ করে অপেক্ষা করতে লাগলাম ভ্রমনের দিনের জন্য।
১২ সেপ্টেম্বর ক্যাম্পাস থেকে ৬টি বাসে করে বিদেশি ছাত্রদেরকে নিয়ে গেলো মহাপ্রাচীর দেখাতে। আমরা সাতজন বাংলাদেশি এই ভ্রমণের জন্য রেজিস্ট্রেশন করি। বাস থেকে নেমে সবাই একসঙ্গে হাঁটতে শুরু করি। আমি বলি আমার সঙ্গে পতাকা আছে, সবাই একসঙ্গে ছবি তুলবো। এখানে বলে রাখা ভালো যে বাংলাদেশ থেকে আসার সময় ডিপার্টমেন্টের ছোট ভাই-বোনরা আমাকে একটি জাতীয় পতাকা গিফট করে।
আমি গ্রেট-ওয়ালে যাওয়ার সময় এটি নিয়ে যাই এবং বাংলাদেশি সবাই নিজের দেশের লাল-সবুজের পতাকা সঙ্গে নিয়ে ছবি তুলি। প্রায় ৪০-৫০ দেশের ছাত্র-ছাত্রী থাকলেও কেউই তাদের দেশের পতাকা নেয়নি। নিজের দেশের পতাকা বুকে নিয়ে এভাবে ছবি তুলতে দেখে তারা কিছুটা আশ্চর্যই হলো, বলতে লাগলো তোমরা তোমাদের দেশকে এত ভালোবাস? বললাম, অনেক প্রাণের বিনিময়ে আমরা অর্জন করি আমাদের এই লাল-সবুজ পতাকা। তাই আমরা এটিকে অনেক ভালোবাসি।
এককথায় বলতে গেলে অসাধারণ, অনন্য, ঐতিহাসিক, অকল্পনীয় এক স্থাপনা এটি। পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের এই মহাপ্রাচীরটি দেখতে পেরে নিজের কাছে অনেক ভালো লাগছে। চীনা ভাষায় একে বলা হয় ‘ঠষাং ঠষেং’ বা ‘ছাং ছং’ অর্থাৎ দীর্ঘ প্রাচীর। খ্রিস্টপূর্ব পাঁচশ শতক থেকে খ্রিস্টীয় ষোলশ শতক পর্যন্ত চীনের উত্তর সীমান্ত রক্ষা করার জন্য এটি তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়।
লেখক পরিচিতি: শিক্ষার্থী, মাস্টার্স ইন ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক্স, বেইজিং নরমাল ইউনিভার্সিটি, চীন
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |