উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় চাই বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব: রাষ্ট্রদূত মাসুদ

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বিতর্কে অংশ নিয়ে উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বৈশ্বিক অংশিদারিত্ব শক্তিশালী করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Oct 2019, 03:56 PM
Updated : 10 Oct 2019, 04:22 PM

স্থানীয় সময় বুধবার ৭৪তম অধিবেশনের ২য় কমিটির সাধারণ সভার বিতর্কে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, “উন্নয়নের পথে বিশেষ করে এজেন্ডা-২০৩০ অর্জনের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে এমন চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবেলায় অবশ্যই শক্তিশালী বৈশ্বিক অংশিদারিত্ব গড়ে তুলতে হবে”।

এক্ষেত্রে তিনি ওডিএ (উন্নয়ন সহযোগিতা)বাণিজ্য, সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে দেশসমূহকে পারষ্পারিকভাবে আরও বেশি সহযোগিতার আহ্বান জানান। এছাড়া উত্তর-দক্ষিণ সহযোগিতার পরিপূরক হিসেবে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা কাঠামোর সকল সুবিধা ও সম্ভাবনা পূর্ণমাত্রায় কাজে লাগানোর প্রতিও গুরুত্বরোপ করেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ।

উন্নয়ন ও সফলতা অর্জনে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বঙ্গবন্ধু যে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন তা বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘দূরদর্শী নেতৃত্ব, সাহসী ও সুদৃঢ় উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং জন-কেন্দ্রিক’ উন্নয়ন নীতিমালার কথা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘সমগ্র-সমাজ দৃষ্টিভঙ্গি’র কারণে বাংলাদেশ আজ শক্তিশালী আর্থ-সামাজিক ভিত্তির উপর দাঁড়িয়েছে”।

দারিদ্র্য বিমোচন, টেকসই প্রবৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তনে সুরক্ষা, মানব-সম্পদ উন্নয়নসহ বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিক্রমার নানাদিক তুলে ধরেন স্থায়ী প্রতিনিধি।

তার বক্তব্যে উঠে আসে মাথাপিছু জাতীয় আয়, রপ্তানি, বৈদেশিক বিনিয়োগ, শক্তিশালী বেসরকারি খাত সৃষ্টি, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর মাধ্যমে অসমতা দূর, লিঙ্গ সমতা, সার্বজনীন এবং উন্নত স্বাস্থ্য সেবা, মানসম্মত শিক্ষা, প্রাথমিক শিক্ষায় শতভাগ ভর্তি, বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ, শিক্ষাবৃত্তি ও ভাতা ইত্যাদি ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা সরকারের ব্যাপক সাফল্যগাঁথার নানা তথ্য-চিত্র।

ডিজিটাল বাংলাদেশের সফলতার বিষয়টি তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, “প্রযুক্তিতে সকলের সমান প্রবেশাধিকার নিশ্চিতের মাধ্যমে সরকার মানব মূলধন তৈরি করছে। দেশব্যাপী স্থাপন করা হয়েছে ৫ হাজার ৮ শত ডিজিটাল সেন্টার যা জনগণের দোরগোড়ায় প্রায় ৬ শত ধরনের ই-সেবা পৌঁছে দিচ্ছে। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ তার প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ মহাকাশে উৎক্ষেপন করেছে মর্মে উল্লেখ করে স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, এটি সম্প্রচার-ভিত্তিক সেবা প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে দেওয়াসহ যোগাযোগ উন্নয়নে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখছে।”

স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, “রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ মেগা প্রকল্পসমূহ অত্যন্ত সফলতার সাথে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের লক্ষ্য ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হওয়া।”

বাংলাদেশ যাতে উন্নয়নের এই অদম্য অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে পারে সে জন্য রোহিঙ্গা সমস্যার মতো সমস্যার সমাধানে আরও উদার ও সক্রিয়ভাবে এগিয়ে আসতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ২য় কমিটি সদস্য দেশসমূহের উন্নয়নের সাথে প্রাথমিকভাবে সম্পর্কিত এমন অর্থনৈতিক ও আর্থিক বিষয়সমূহ নিয়ে কাজ করে।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!