লন্ডনের প্রভাবশালী রাজনীতিবিদের তালিকায় টিউলিপ

লন্ডনভিত্তিক সংবাদপত্র ইভিনিং স্ট্যান্ডার্ডের করা ২০১৯ সালে ব্রিটেনের রাজধানীতে সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনীতিবিদের তালিকায় আছেন টিউলিপ সিদ্দিক।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Oct 2019, 02:59 PM
Updated : 4 Oct 2019, 03:41 PM

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ ব্রিটেনের লেবার পার্টি থেকে লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসনের এমপি।

প্রতি বছর লন্ডনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রভাব বিস্তারকারীদের নিয়ে ‘প্রোগ্রেস ১০০০’ নামে এই তালিকা প্রকাশ করে ইভিনিং স্ট্যান্ডার্ড। রাজনীতি ছাড়াও ব্যবসা, প্রযুক্তি, বিজ্ঞান, ডিজাইন, সাহিত্য ও সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন খাতের শীর্ষস্থানীয়রা উঠে আসেন এই তালিকায়।

টিউলিপ সিদ্দিক এই তালিকায় স্থান পেয়েছেন ওয়েস্টমিনস্টার ক্যাটাগরিতে। তিনি ছাড়াও এই তালিকায় আছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, ডাচি অফ ল্যানকাস্টারের চ্যান্সেলর মাইকেল গভ, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক ও শিক্ষামন্ত্রী গেভিন উইলিয়ামসনের মতো লন্ডনের রাজনীতিকরা।

টিউলিপকে নিয়ে সেখানে লেখা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে’র ব্রেক্সিট চুক্তির বিপক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য সন্তান জন্মদানের অস্ত্রোপচার পিছিয়ে বিশ্বব্যাপী সংবাদ শিরোনাম হয়েছিলেন হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্নের এমপি টিউলিপ সিদ্দিক।

তখন পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে সাধারণত কোনো এমপি’র সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় আসন্ন হলে বা সদ্যোজাত সন্তানের কারণে বা অসুস্থতার কারণে কোনো ভোটে অংশ নিতে না পারলে বিরোধী পক্ষেরও একজন সদস্য ভোটদান থেকে বিরত থাকতেন, যাকে ‘পেয়ার’ বলা হত। কারও অনুপস্থিতি যেন ভোটের ফলে প্রভাব ফেলতে না পারে, তাই ওই প্রথা।

কিন্তু ২০১৮ সালের জুলাইয়ে কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান ব্রান্ডন লুইস ওই প্রথা লঙ্ঘন করে ভোট দিয়েছিলেন। যদিও লুইস পরে এজন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘দুর্ঘটনাবশত’ ভোট দিয়ে ফেলেছিলেন তিনি।

অতীতের এই ঘটনার কারণে ওই ব্যবস্থায় তার আর আস্থা নেই জানিয়ে সশরীরে পার্লামেন্টে গিয়ে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন টিউলিপ। তার এই সাহসী সিদ্ধান্তের কারণে সন্তান প্রত্যাশী ও নবজাতকদের বাবা-মার জন্য ঐতিহাসিক ‘প্রক্সি ভোটিং’ পদ্ধতি চালু করতে বাধ্য হয় ব্রিটিশ সরকার। এই বিষয়টিকেই গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে ইভিনিং স্ট্যান্ডার্ড।

এছাড়া ২০১৫ সালের মে মাসে লন্ডনের এই আসন থেকেই এমপি হয়ে হাউজ অব কমন্সে গিয়ে প্রথম ভাষণেই নজর কাড়েন টিউলিপ সিদ্দিক।

ওই ভাষণে শরণার্থী ও আশ্রয় প্রার্থীদের প্রতি ব্রিটেনের সহৃদয়তার ওপর আলোকপাত করেন টিউলিপ সিদ্দিক। বিবিসির তৈরি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সবচেয়ে স্মরণীয় নবনির্বাচিতদের ভাষণের তালিকায়ও স্থান পায় তার এই ভাষণ।

নিজেকে ‘একজন আশ্রয় প্রার্থীর কন্যা’ হিসেবে বর্ণনা করে সে সময় মা শেখ রেহানার দুর্দশার বিবরণ দেন তিনি। ১৯৭৫ সালে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হওয়ার পর লন্ডনে রাজনৈতিক আশ্রয় খোঁজেন ছোট মেয়ে শেখ রেহানা।