নিউ ইয়র্কে ফোবানায় ‘এনআরবি বিজনেস ফোরাম’

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ফোবানা সম্মেলনে বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে ‘এনআরবি বিজনেস ফোরাম’ পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Sept 2019, 08:28 AM
Updated : 3 Sept 2019, 08:29 AM

তিন দিনব্যাপী ফোবানা সম্মেলনে রোববার এ বিজনেস পর্বে বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী ব্যবসায়ীদের মধ্যে কয়েকজন বক্তব্য দেন।

সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাষ্ট্রে ‘বাই ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির’ নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. আতিকুর রহমান।

তিনি বলেন, “সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের আন্তরিক সহযোগিতা পাওয়া গেলে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বাড়বে। এছাড়া যেসব সেক্টরে বিনিয়োগ করলে বেশি লাভবান হওয়া যায় সে ব্যাপারেও সংশ্লিষ্ট সেক্টরের গাইডেন্স থাকতে হবে বিদেশি বিনিয়োগকারিদের জন্য। তাহলেই শেখ হাসিনা সরকারের ভিশন টোয়েন্টি টোয়েন্টি ওয়ান বাস্তবায়নে আর কোনো সমস্যা থাকবে না এবং সেই ধারায় ২০৪১ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ উন্নত বিশ্বের তালিকাভুক্ত হতে পারবে।”

বাংলাদেশ, জাপান, কানাডা, চীন, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, মেক্সিকো, ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনাসহ ৫২ দেশের চেম্বার অব কমার্সের সমন্বয়ে গঠিত ‘বাই ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ কয়েকজন বিনিয়োগকারিকে বাংলাদেশে নেওয়ার অভিজ্ঞতা জানান আতিকুর রহমান।

তিনি বলেন, “সরকারের নীতি-নির্ধারণের সঙ্গে সরাসরি জড়িতদের সাক্ষাত পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে। অথচ প্রধানমন্ত্রী যখন বিদেশে আসেন সেসময় অত্যন্ত উদারতা প্রদর্শনের অঙ্গিকার করে থাকেন। এ ব্যবধান দূর করলে অনেক সমস্যার সহজ সমাধান হবে পাবলিক সেক্টরে বিদেশি বিনিয়োগে।”

দুবাইভিত্তিক ‘আলহারামাইন পারফিউম গ্রুপ অব কোম্পানির’ চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডাইরেক্টর এবং ‘এনআরবি-সিআইপি অ্যাসোসিয়েশনের’ প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান নাসির বলেন, “প্রাইভেট সেক্টরে আমরা অনেকেই বিনিয়োগ করেছি। এখনও বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় রয়েছি। তবে সরকারি সেক্টরে বিদেশি বিনিয়োগের দিগন্ত আমরা প্রবাস থেকে যতটা প্রসার ঘটাতে পারবো, তা আর কেউ পারবে না। এই সুযোগটি আমাদের দেওয়া উচিত আরো জোরালোভাবে।”

এনআরবি ব্যাংক লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা-চেয়ারম্যান এবং যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিমার্ক গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ইকবাল আহমেদ ওবিই বলেছেন, “প্রবাসের অভিজ্ঞতায় আমরা মাতৃভূমির কল্যাণে বদ্ধপরিকর। মাতৃভূমির প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে সবারই। এখন সে সুযোগ তৈরি হয়েছে। তাই সবার উচিত ব্যক্তিগত বিনিয়োগের পাশাপাশি পরিচিত বিদেশি বিনিয়োগকারিদেরকেও বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়া।”

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ফামাক্যাশের প্রেসিডেন্ট ও কার্যনির্বাহী সাইফুল খন্দকার বলেন, “বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে দীপ্ত প্রত্যয়ে। উন্নয়নের এ ধারাকে ত্বরান্বিত করতে আমরাও প্রবাসের অভিজ্ঞতার সমন্বয় ঘটাতে চাই। এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আরও আন্তরিক হতে হবে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং ‘কানেকশন’ দুর্বলতার পরিবর্তে প্রবাসীদের জন্য দরকার ওয়ানস্টপ সার্ভিস।”

সভায় আরও বক্তব্য দেন ‘ইউটিসি অ্যাসোসিয়েটস’ এর প্রেসিড্টে আজিজ আহমেদ, ‘এইমেক্স এলএলসির’ প্রেসিডেন্ট ও কার্যনির্বাহী তানভির মাহমুদ, ‘ফ্রেশ গ্রুপ অব কোম্পানির’ মোহামদ আফতাব, সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ বিজনেস চেম্বারের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ শহিদুজ্জামান, আয়োজক সংগঠন ফোবানার নির্বাহী চেয়ারম্যান মীর হোসেন চৌধুরী, নির্বাহী সচিব জাকারিয়া চৌধুরী, ‘ড্রামা সার্কলের’ প্রতিষ্ঠাতা ও ফোবানা আয়োজক কমিটির কনভেনর নার্গিস আহমেদ ও সদস্য সচিব আবির আলমগীর।

সমাপনী বক্তব্যে আতিকুর রহমান বলেন, “পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতির আলোকে বিনিয়োগের সনাতনী প্রথা পরিহার করে নতুন নতুন সেক্টরের সন্ধান দিতে হবে সরকারকে। যে সেক্টরের প্রভাব সুদূর প্রসারী হবে সেদিকে আকৃষ্ট করতে হবে সরকারকে। একইসঙ্গে সমসাময়িক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজের সংস্থান করা সম্ভব-এমন শিক্ষাব্যবস্থা চালু করতে হবে। সার্টিফিকেটধারী শিক্ষিত যুবশক্তির প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে। এখন দরকার হচ্ছে দক্ষ যুবশক্তি। বিশেষ করে নার্স তৈরি করতে হবে অনেক বেশি। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারের পাশাপাশি চিকিৎসা-ব্যবস্থায়ও যুগান্তকারি পরিবর্তনে সক্ষম শিক্ষা কারিক্যুলাম চালু করতে হবে।”

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!