স্থানীয় সময় রোববার কানসাই অঞ্চলের ওসাকা, কিয়োটো, কোবে, নারা ও অকায়ামা শহরের প্রবাসী বাংলাদেশিরা ওই বনভোজনে অংশ নেন।
বনভোজনটি হয়ে ওঠে বাংলাদেশিদের এক মিলনমেলা।
জাপানে শহরের কর্মব্যস্ত জীবনে সবুজঘেরা পরিবেশ, প্রাকৃতিক জলাধারের টলমল পানিকে ছুয়ে দেখা কিংবা সাঁতার কাটা কারোই সচরাচর হয়ে উঠে না। ঐতিহাসিক শহর কিয়োটোর বাহিরে শিগা শহরের কোল ঘেঁসে বয়ে চলেছে জাপানের সর্ব বৃহৎ ও বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন মিষ্টি পানির হ্রদ লেইক বিওয়া। শহরবাসী মানুষগুলো গ্রীষ্মের সময় একটু দম নেয়ার জন্য, বাচ্চাদের ছুটোছুটির জন্য উইকএন্ডে হামলে পড়ে এই লেইক বিওয়ার পাড়ে। কানসাই বাংলাদেশ সোসাইটি এই লেক বিওয়ার পাড়েই সবুজে ঘেরা পাহাড়বেষ্টিত ওমি মাইকো বিচে আয়োজন করে বনভোজনের।
শিক্ষার্থী কিংবা অভিভাবকদের পেশাগত দায়িত্ব, ঘর সামাল দেওয়া আর নতুন প্রজন্মের শিক্ষা– প্রবাসের এই ছকবাঁধা জীবনের একঘেঁয়েমি দূর করা, পারষ্পারিক দেখা-সাক্ষাৎ, কুশল বিনিময় ও আনন্দ ভাগাভাগির এ বার্ষিক আয়োজনটি ঘিরে এই অঞ্চলের প্রবাসিদের সব সময়ই একটা আলাদা আগ্রহ থাকে। একে তো শহর থেকে দূরে তার ওপর রোববার পাবলিক ট্রান্সপোর্টে আসা যাওয়ায় লম্বা সময়ের বিরতি- সব বিড়ম্বনা উপেক্ষা করেই প্রায় দেড় শ প্রবাসী বনভোজনে অংশ নেন।
রোববার সকাল থেকেই বাংলাদেশি শিক্ষার্থী, কর্মজীবী ও ব্যাবসায়িরা কেউ একা আবার কেউ দল বেঁধে কিংবা পরিবার নিয়ে এসে উপস্থিত হতে থাকেন। ওমি মাইকো বিচের একটি অংশে সৃষ্টি হয় যেন এক টুকরো বাংলাদেশ।
অংশগ্রহণকারীদের স্বাগত জানান কেবিএস ’১৯-২০ এর সভাপতি সৈয়দ জাহিদুর রায়হান, সহ সভাপতি মাহমুদ জাকের, উপদেষ্টা আমিনুর রহমান, সেরাজুল ইসলাম ও আশরাফ মোহাম্মদ।
সকালে ইয়াকি সোবা ও সোমেন (এক ধরনের সুস্বাদু জাপানিজ নুডলস) খাওয়ার মধ্যে দিয়ে শুরু হয় দিনব্যাপী এই আনন্দ আয়োজনের। এরপর বাচ্চাদের বস্তা দৌড় এবং বড়দের অংশগ্রহনে ‘রিং ছুঁড়ে ড্রিংকস জেতা’ খেলা সবাইকে অফুরান আনন্দ দেয়।
কোবের সোহেল চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে দুপুরের খাবার পর্বে ছিল বারবিকিউ চিকেন, চিংড়ি, সসেজ, সবজি ও ফালাফেল পিতা। যত খুশি ততো খাওয়ার আনন্দে মাতোয়ারা ছিল সবাই। আর দিনভর লেকের পানিতে সবার ঝাপাঝাপি আর খেলাধুলা তো ছিলই।
বিকালে পরিবেশন করা হয় তরমুজ, কফি ও স্ন্যাকস। সন্ধ্যার মনোরম পরিবেশে ফায়ার ওয়ার্কস এর মাধ্যমে সমাপ্তি টানা হয় দিনব্যাপী এই আনন্দ আয়োজনের।
কেবিএস এর প্রায় এক মাসের প্রস্তুতিতে নিবেদিতপ্রাণ কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবকের নিরলস প্রয়াসের ফসল ছিল ‘কেবিএস সামার পিকনিক – ২০১৯’।
পুরো অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন কেবিএস ’১৯-২০ এর সাংস্কৃতিক সম্পাদক মেহরুবা মোনা।
সাধারণ সম্পাদক খন্দকার রুমির নেতৃত্বে আয়োজনটির সার্বিক ব্যাবস্থাপনায় ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাদাত সায়েম, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক রাশেদ মাহমুদ, প্রচার সম্পাদক সালমান মাহমুদ সিদ্দিকী, সদস্য রুহুল আমিন রবিন ও ফখরুল ইসলাম দিদার।
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |