বঙ্গবন্ধু হত্যায় মদদদাতাদের বিচারে কমিশন গঠনের দাবি নিউ ইয়র্কে

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীদের এবং মদদদাতাদের চিহ্নিত করে বিচারের জন্যে ‘বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশন’ গঠনের দাবি উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের একটি শোকসভা থেকে।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 August 2019, 12:11 PM
Updated : 15 August 2019, 12:11 PM

‘জাতীয় শোক দিবস’ উপলক্ষে ১৪ অগাস্ট স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন যুক্তরাষ্ট্র শাখা এক দোয়া ও আলোচনা সভা আয়োজন করে, যেখানে বক্তারা এ দাবি করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা এবং বর্তমানে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়কারী আব্দুল হান্নান খান।

পুলিশের আইজিপি মর্যাদার তদন্ত কর্মকর্তা হান্নান খানও বঙ্গবন্ধু হত্যার মদদকারীদের বিচারে বিশেষ কমিশনের কথা উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, “আমরা চার্জশিটে খোন্দকার মোশতাক, মাহবুবুল আলম চাষীসহ বেশ ক’জনের নাম যুক্ত করেছিলাম ঘাতকদের বিশেষ সহযোগী হিসেবে। পরবর্তীতে কয়েকজনের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে মাননীয় আদালতে।“

হান্নান খান বলেন, “দেশ ও প্রবাসে বর্তমানে একটি দাবি বেশ জোরালোভাবে উঠেছে। সেটি হচ্ছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারি ও মদদদাতাদের বিচার। এটি স্বাভাবিক। কারণ, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি শেখ মুজিবকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যার নেপথ্য কারিগরদের রেহাই দেয়ার অর্থ হবে বিচার অসম্পূর্ণ রাখা। ভবিষ্যতে আর কেউ যাতে এমন নিষ্ঠুর ষড়যন্ত্রের বলি না হন সেজন্যেই সবকিছু উন্মোচিত হওয়া জরুরি।”

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রেসক্লাবের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

ফাউন্ডেশনের যুক্তরাষ্ট্র শাখার অন্যতম সহ-সভাপতি মোস্তফা কামাল পাশা মানিকের সভাপতিত্বে এই আলোচনায় স্বাগত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, “বিচারে দণ্ডিত এক ঘাতক এখনও যুক্তরাষ্ট্রে এবং আরেকজন কানাডায় বাস করছে। এই দুইজনকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে নিতে প্রবাসীদের আন্তরিক সহযোগিতার বিকল্প নেই। একইসাথে পঁচাত্তরের ১৫ অগাস্ট কাল রাতে নৃশংসতার মদদদাতা হিসেবে জিয়াসহ অন্য সকলেরও মরণোত্তর বিচার করতে হবে। অন্যথায় বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার যথাযথভাবে সম্পন্ন হবে না।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কণ্ঠযোদ্ধা শহীদ হাসান বলেন, “বাঙালি জাতির মহানায়ক বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছে, তাদের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত জাতি পুরোপুরি কলঙ্কমুক্ত হবে না।”

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

তিনি বলেন, “অনেক কিছুই করা সম্ভব হচ্ছে না। সংবিধান থেকে এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম অপসারণ করা সম্ভব হয়নি। ‘বিসমিল্লাহির রাহমানুর রাহিম’-ও রয়েই গেছে। তাই, আমার মনে হয় বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার পরিপুর্ণভাবে সম্পন্ন করতে হবে জীবনের সর্বস্তরে বঙ্গবন্ধুর নীতি-আদর্শের বাস্তবায়ন ঘটাতে হবে।”

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য দেন আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার এবং যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সভাপতি রাশেদ আহমেদ এবং সহ-সভাপতি হারুন ভূইয়া।

এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ অগাস্ট রাতে নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের অপর সদস্যদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া পরিচালনা করেন ইমাম কাজী কায়্যুম। ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সদস্য শুভ রায়ের সঞ্চালনায় মঞ্চের পাশে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের পক্ষে ফুল দেন সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, সহ-সভাপতি আকবর হায়দার কিরণ, সাংগঠনিক সম্পাদক কানু দত্ত, প্রচার সম্পাদক মো. ফারুক, নির্বাচন কমিশনার কবি মিশুক সেলিম এবং জাহেদ শরিফ, সদস্য সুজন আহমেদসহ অন্যান্যরা।

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের শ্রদ্ধাঞ্জলি। ছবি-বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর সময় সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি রাশেদ আহমেদ, সেক্রেটারি রেজাউল বারি, সহ-সভাপতি হারুন ভূইয়া, উপদেষ্টা রথীন্দ্রনাথ রায় এবং শহীদ হাসান, কোষাধ্যক্ষ আলিম খান, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য ফাহাদ সোলায়মান, মিজানুর রহমান চৌধুরী, এম এ আওয়াল এবং এনামুল হকসহ অন্যান্যরা।

বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়ার সময় ছিলেন সহ-সভাপতি হাজী জাফরউল্লাহ, সেক্রেটারি আব্দুল কাদের মিয়া, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য আলমগীর কবির, আবুল বাশার ভ’ইয়া, এটিএম মাসুদ, নাজিমউদ্দিন, শাহাবউদ্দিন লিটনসহ অন্যান্যরা।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!