রোহিঙ্গা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের ভূমিকা চাইলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরাতে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের ভূমিকা চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে এ মোমেন।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 July 2019, 07:33 AM
Updated : 18 July 2019, 07:40 AM

স্থানীয় সময় বুধবার ওয়াশিংটন ডি.সিতে দেশটির সিনেটে পররাষ্ট্র সম্পর্কিত কমিটির পাঁচ সদস্যের সঙ্গে আলাদা বৈঠকে একথা জানান তিনি।

কংগ্রেসের উভয় কক্ষের এ ৫ কর্মকর্তা হলেন চেয়ারম্যান সিনেটর (রিপাবলিকান) জেমস ই রিস, সদস্য সিনেটর (ডেমক্র্যাট) বব মেনেন্ডেজ, প্রতিনিধি পরিষদে পররাষ্ট্র সম্পর্কিত কমিটির চেয়ারম্যান কংগ্রেসম্যান (ডেমক্র্যাট) ইলিয়ট এ্যাঙ্গেল, এশিয়া সম্পর্কিত সাব কমিটির চেয়ারম্যান কংগ্রেসম্যান (ডেমক্র্যাট) বব শারমেন এবং কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং। এসব বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “শুধু অর্থনৈতিক ও মানবিক সহায়তা নয়, রাজনৈতিক সমর্থনও দরকার রোহিঙ্গা ইস্যুর শান্তিপূর্ণ ও টেকসই সমাধানে। রাশিয়া ও চীন যাতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তরিক অর্থে সোচ্চার হয়, সে ব্যাপারেও মার্কিন প্রশাসনকে জোরালো উদ্যোগ নিতে হবে।”

বৈঠকের পর ওয়াশিংটন ডি.সিতে মন্ত্রীর হোটেল লবিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এসব তথ্য জানিয়ে বলেন, “মিয়ানমার প্রশাসন একটি জাতিগোষ্ঠিকে নির্মূলের ষড়যন্ত্র করেছে এবং গণহত্যার সঙ্গে নিজেদের জড়িত করেছে। তবুও যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের জিএসপি সুবিধা অব্যাহত রেখেছে। অপরদিকে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা স্থগিত করা হয়েছে।”

মোমেন বলেন, “বৈঠকে আমি তাদেরকে আরও জানিয়েছি যে, মিয়ানমারের সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করা হচ্ছে সিঙ্গাপুর থেকে, জাপান ও ইউরোপের অনেক দেশই মিয়ানমারের গণহত্যার নিরব সমর্থক। এরা সবাই যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু। এর আগে ভেনেজুয়েলা ও সিরিয়ার বিরুদ্ধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় যুক্তরাষ্ট্র। মিয়ানমার প্রশ্নে তাদের একইভাবে সোচ্চার হওয়া জরুরি।”

মোমেন জানান বাংলাদেশের গত নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক রয়েছে বলে সিনেটর-কংগ্রেসম্যানরা অভিযোগ করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের বলেন, “৪১ হাজার পোলিং বুথের মধ্যে মাত্র ২১টিতে অনিয়ম, সহিংসতার ঘটনা ঘটে। সেগুলোর নির্বাচন স্থগিত করা হয়। নির্বাচন কমিশন যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছিল। ২০০৮ ও ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়েও নানা কথা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে বিদেশিদের হস্তক্ষেপের কথাও আজ সর্বজনবিদিত।”

বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিদের বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর পুলিশের বুলেটে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ যাচ্ছে। কারাগারেও সহস্রাধিক আমেরিকানের মৃত্যু হচ্ছে। এসবের তুলনায় বাংলাদেশ অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে। মানবাধিকারের প্রতিটি ইনডেক্সেই বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ঘটেছে।”

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর আমন্ত্রণে ওয়াশিংটন ডি.সি. সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী সন্ত্রাস ও জঙ্গি দমনে বাংলাদেশের জিরো টলারেন্সের কথা জানান দেশটির জনপ্রতিনিধিদের।

এদিকে সিনেট ও কংগ্রেসে পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির নেতারা রোহিঙ্গা ইস্যুতে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এসময় তারা চীনের নেতাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে তা মোমেনের কাছে জানতে চান। মোমেন জানান যে, চীনের নেতারাও রোহিঙ্গা সমস্যায় কার্যকর চেষ্টা চালানোর আশ্বাস দিয়েছেন।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!