যেখানেই থাকি বাংলা ভাষার প্রতিনিধিত্ব করছি: হাবীবুল্লাহ সিরাজী

‘যেখানেই থাকি না কেন বাংলা ভাষার প্রতিনিধিত্ব করছি’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 June 2019, 08:59 AM
Updated : 21 June 2019, 08:59 AM

বুধবার নিউ ইয়র্কে লিটল ম্যাগাজিন ‘ঘুংঘুর’ এর ৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, “আমরা যে যেখানেই থাকি না কেন, আমরা বাংলাদেশ, বাংলা ভাষা, লাল-সবুজের পতাকার প্রতিনিধিত্ব করছি। এ চেতনা সমুন্নত রেখেই আমাদের এগোতে হবে। মনে রাখতে হবে, বাংলা ভাষার ঐতিহ্য হাজার বছরের।”

অনুষ্ঠানটি ছিল তিন পর্বে বিভক্ত। 'ঘুংঘুর' এর ৫ বছর পূর্তি, এর ওয়েবজিন উদ্বোধন ও সম্মাননাপর্ব।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক এবং কালি ও কলম সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক কবি আবুল হাসনাত।

অভিনেত্রী শিরিন বকুলের উপস্থাপনায় শুরুতে ভূমিকা বক্তব্য দেন 'ঘুংঘুর' সম্পাদক হুমায়ূন কবির। তিনি 'ঘুংঘুর' প্রকাশের প্রেক্ষাপট ও পরিকল্পনা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, “আমরা সৃজনশীল সাহিত্যের বিকাশ ও লালনে বিশ্বাসী। আমরা পরিশুদ্ধ সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষক হয়েই থাকতে চাই।”

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন 'ঘুংঘুর' সম্পাদনা পরিষদের সদস্য কবি ফকির ইলিয়াস।

তিনি বলেন, “গত পাঁচ বছরে আমরা ১৫টি সংখ্যা প্রকাশ করেছি। ইতোমধ্যে ভারত, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জাপান, জার্মানি থেকে 'ঘুংঘুর'এর সংখ্যা বের হয়েছে। নিউ ইয়র্ক বইমেলা উপলক্ষে গত চার বছরে চারটি সংখ্যা বেরিয়েছে। একইভাবে ঢাকা একুশে বইমেলা উপলক্ষে বেরিয়েছে পাঁচটি সংখ্যা। আমরা নতুনদের স্থান করে দেওয়ার পাশাপাশি সৃজনশীল ও মননশীল সাহিত্যকে ধারণ করতে চেয়েছি।”

তিনি লেখকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, “আপনারা আপনাদের শ্রেষ্ঠ লেখাটি ঘুংঘুরে পাঠাবেন। আমরা তা প্রকাশ করতে চাই।”

ঘুংঘুরকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য দেন লিটল ম্যাগাজিন 'পঞ্চায়েত' এর সম্পাদনা পরিষদের সদস্য মাসুম আহমদ।

আনিসুল হক বলেন, “সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতা করাটা সহজ কাজ নয়। ৫ বছর ধরে এ কাজটি ঘুংঘুর করে চলছে তা অবশ্যই ধন্যবাদযোগ্য।”

দ্বিতীয় পর্বে ঘুংঘুরের ওয়েবজিন উদ্বোধন করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী। করতালির মধ্যদিয়ে উদযাপিত হয় এ পর্ব।

তৃতীয়পর্বে ছিল সম্মাননা দেওয়া। এবার এ সম্মাননা পেয়েছেন প্রাবন্ধিক হাসান ফেরদৌস। তার পরিচিতিপর্ব তুলে ধরেন প্রাবন্ধিক আহমাদ মাযহার।

পরিচিতিপর্বে তিনি বলেন, “হাসান ফেরদৌস সাহিত্যের কঠিন পথে হেঁটেছেন। তিনি জনপ্রিয় ধারায় এগোননি। তাই তার লেখা পড়তে হলে আমাদেরও প্রস্তুতি নিতে হয়। হাসান ফেরদৌস বিরলপ্রজ প্রাবন্ধিক। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিদেশের ভূমিকার বিভিন্ন প্রেক্ষাপট যেমন তার লেখায় এসেছে, তেমনি তিনি বিশ্বের বড় বড় শিল্পজনকে আমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে ছিয়েছেন তার লেখায়।”

হাসান ফেরদৌস সম্পর্কে লিখিত বক্তব্য দেন কালি ও কলম সম্পাদক আবুল হাসনাত। তিনি হাসান ফেরদৌসের লেখালেখির শুরু ও তার দীর্ঘ পথচলার বিবরণ তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ২০১৭ সালে 'ঘুংঘুর' সম্মাননাপ্রাপ্ত বেলাল বেগ। তিনি বলেন, “মহৎ মানুষের কদর করা আমাদের শিখতে হবে। মানুষকে ভালোবাসার কোনো বিকল্প নাই।

হাসান ফেরদৌসকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান আবুল হাসনাত, তার হাতে সম্মাননা পদক তুলে দেন কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী।

প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে হাসান ফেরদৌস বলেন, “আমি প্রাতিষ্ঠানিক সম্মাননায় বিশ্বাস করি না। কিন্তু আমার বন্ধুরা যখন আমাকে একটি ফুলও দেন তা খুব সানন্দে গ্রহণ করি। সাহিত্যের কাজটি মোটেই সহজ নয়। যারা এই কাজটি করেন, তারা নিশ্চয়ই মানুষের-মানবতার কল্যাণের জন্য নিবেদিত।”

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!