আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের ‘আজীবন সম্মাননা’ পেলেন আব্দুল হাদী

কণ্ঠশিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদীকে ‘আজীবন সম্মাননা’ দিয়েছে ‘আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব।’

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 May 2019, 02:15 PM
Updated : 14 May 2019, 02:29 PM

ক্লাবের দশক পূর্তি উৎসবে বিপুল করতালির মধ্যে স্থানীয় সময় শুক্রবার শিল্পীর হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন প্রবাসে বাঙালি শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির অন্যতম পৃষ্টপোষক মো. আনোয়ার হোসেন।

এসময় আনোয়ার হোসেন বলেন, “প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ের গভীরতম স্থানে অধিষ্ঠিত এই শিল্পী প্রবাসের গণমাধ্যম কর্মীদের দ্বারা যে সম্মান পেলেন তার মূল্য অপরিসীম। আটলান্টিকের এপাড়েও সৈয়দ আব্দুল হাদীর বিপুল জনপ্রিয়তারই বহির্প্রকাশ। আমি তার সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘ জীবন কামনা করছি।”

১৯৪০ সালের পয়লা জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার শাহপুর গ্রামে জন্মগ্রহণকারি সৈয়দ হাদী শৈশব-যৌবন কাটিয়েছেন তার দাদার আগরতলার বাড়িতে। কারণ, তার দাদা আগরতলা কোর্টের আইনজীবী ছিলেন। সৈয়দ হাদী ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পর ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে উচ্চতর শিক্ষা লাভ করেন। ১৯৬৪ সালে তিনি ‘ইয়ে ভি এক কাহানি’ ছবিতে কণ্ঠদানের মাধ্যমে জনপ্রিয়তার সিঁড়ি খুঁজে পেয়েছেন। এরপর আর থেমে থাকেননি। অসাধারণ সঙ্গীত পরিবেশনার জন্যে তিনি বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র সম্মাননা পেয়েছেন। ২০০০ সালে পেয়েছেন একুশে পদক।

বাঙালির হৃদয়ে গেঁথে থাকা তার একক গানের অ্যালবামগুলো হচ্ছে, একবার যদি কেউ, পৃথিবীর পান্থশালায়, একদিন চলে যাবো, কথা বলবো না, মেঘের পালকি, যখন ভাঙলো মিলন মেলা, নিয়তি আমার, হাজার তারার প্রদিপ ইত্যাদি। সাবিনা ইয়াসমীনের সাথে যুগলকণ্ঠে গাওয়া তার মিক্সড অ্যালবামগুলো হচ্ছে- নীল বেদনা, বলাকা, নয়নমনি, জন্ম থেকে এবং গোল্ডেন হিট।

সৈয়দ হাদীর সাড়া জাগানো গানগুলোর মধ্যে রয়েছে- আছেন আমার মুক্তার, আমি তোমারি প্রেম ভিখারি, চোখ বুজিলেই দুনিয়া অন্ধকার, চোখের নজর, চলে যায় যদি কেউ, একবার যদি কেউ ভালবাসতো, এমনো প্রেম হয়, যেও না সাথী, জন্ম থেকে জ্বলছি, কী করে বলিবো, কেন তারে আমি ভালবেসেছিলাম, সতি মায়ের সতি কন্যা, তোমাদের সুখের নীড়ে, কারো আপন হইতে, যে মাটির বুকে, এই পৃথিবীর পান্থশালায়, কথা বলবো না বলেছি, জানি তুমি চলে যাবে, সখী চলো না জলসা ঘরে, সূর্যোদয়ে তুমি সূর্যাস্তে তুমি ইত্যাদি।

আমরেকিা বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের এ উৎসবে সৈয়দ হাদীকে সম্মাননা ক্রেস্ট হস্তান্তরের সময় ছিলেন সংগঠনের প্রেসিডেন্ট লাবলু আনসার এবং সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম।

উৎসবে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমীন, নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের কন্সাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা, নিউ ইয়র্ক স্টেট সিনেটর জন ল্যু এবং অ্যাসেম্বলি সদস্য ক্যাটালিনা ক্রুজ, জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের সিনেটর শেখ রহমান, নিউ হ্যামশায়ার রাজ্যের রিপ্রেজেনটেটিভ আবুল খান, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার উপদেষ্টা নীনা আহমেদ।

ক্যাপিটল হিলে ব্যস্ত থাকায় কমিউনিকেশন ডিরেক্টর জর্দান গোল্ডেসকে পাঠিয়েছিলেন কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং এবং কংগ্রেসওম্যান আলেক্সান্দ্রিয়া অকাসিয়ো-করটেজ পাঠিয়েছিলেন তার ডিস্ট্রিক্ট অফিসের উপ-পরিচালক নওরীন আকতারকে।

এ সমাবেশে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির প্রতিনিধিত্ব করেন ফার্স্ট সেক্রেটারি নূরএলাহি মিনা। বিশেষ সম্মানিত অতিথি ছিলেন মূলধারার ব্যবসায়ী ও রাজনীতিক আকতার হোসেন বাদল এবং শিল্পপতি মো. জহিরুল ইসলাম। আরও ছিলেন শ্রমিক ইউনিয়ন লিডার মাফ মিসবাহ উদ্দিন, মিলবোর্ন বরোর ভাইস প্রেসিডেন্ট নুরুল হাসান, কাউন্সিলম্যান মুনসুর আলী, আপার ডারবি সিটির কাউন্সিলম্যান শেখ সিদ্দিক এবং হাডসন সিটির কাউন্সিলম্যান শেরশাহ মিজান।

প্রেসক্লাবের এ উৎসবে মূলধারার জনপ্রতিনিধিদেরকে সম্মাননা ক্রেস্ট হস্তান্তর করেন প্রবাসে বসবাসরত বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!