‘আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব’ এর দশকপূর্তি

বাংলাদেশের এগিয়ে চলার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীদের জনমত আরও সুসংহত করে দেশে বিনিয়োগে আগ্রহীদের উৎসাহিত করার অঙ্গীকার নিয়ে দশকপূর্তি উদযাপন করেছে ‘আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব’।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 May 2019, 02:21 PM
Updated : 5 May 2019, 05:22 PM

নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে ‘আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব’ দশকপূর্তি এবং নতুন কমিটির (২০১৯-২০) অভিষেক উৎসব থেকে ওই ঘোষণা দেওয়া হয়।

সাংবাদিক ছাড়াও কবি, সাহিত্যিক, লেখক, সমাজকর্মী, রাজনীতিকদের বিপুল উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানটি হয় নিউ ইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে বেলজিনো পার্টি হলে।

অনুষ্ঠানটি নিবেদন করা হয় যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য এবং সিটি কাউন্সিলে নির্বাচিত বাংলাদেশী-আমেরিকান রাজনীতিকদের প্রতি। যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারায় বিশেষ স্থানে অধিষ্ঠিত এসব জনপ্রতিনিধিদেরকে প্রেসক্লাবের সম্মাননা ক্রেস্ট হস্তান্তর করেন নিউ ইয়র্কে বসবাসরত ২৪ মুক্তিযোদ্ধা।

একইসাথে মানবতার কল্যাণে নিবেদিত ৫ প্রবাসীকেও সম্মাননা দেওয়া হয়।

এসব ক্রেস্ট হস্তান্তর করেন নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের কন্সাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা, নিউ ইয়র্ক স্টেট সিনেটর জন ল্যু, স্টেট অ্যাসেম্বলির সদস্য ক্যাটালিনা ক্রুজ, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূতের প্রতিনিধি নূরএলাহি মিনা, কংগ্রেস সদস্য গ্রেস মেং-এর প্রতিনিধি জর্দান গল্ডেস।

কমিউনিটিকে মার্কিন ধারায় উজ্জ্বীবিত রাখতে নিরলসভাবে কর্মরত ‘আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব’কে কংগ্রেসনাল সাইটেশন এবং জর্জিয়া স্টেটের প্রক্লেমেশন দেওয়া হয়।

নির্বাচন কমিশনের সাথে ‘আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব’ এর সদস্য-কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানে বিপুল করতালির মধ্যে প্রবাসের মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের সন্তানদের ‘আইটি কোর্স অর্ধেক ফি’-তে দেওয়ার ঘোষণা দেন ‘পিপল এন টেক’র সিইও প্রকৌশলী আবু হানিপ। মার্কিন আইটি কোম্পানিতে চাকরির উপযোগী কোর্স দেওয়ার মধ্য দিয়ে সারা আমেরিকায় ব্যাপক খ্যাতি অর্জনকারী পিপলএনটেক এর আগে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী (এক সময়ের মার্কিন প্রবাসী) এ কে এ মোমেনের নামে বৃত্তি কর্মসূচি চালু করেছে।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীতের পর সকলে একমিনিট দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদ, জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আত্মোসর্গকারিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

এরপরই স্বাগত বক্তব্য দেন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম। শুরু হয় ‘নৃত্যাঞ্জলি ড্যান্স গ্রুপ’ এর টানা ২৫ মিনিটের নৃত্য-নাট্য। বাংলাদেশের ৬ ঋতুভিত্তিক এ নৃত্য পরিবেশনাটি সকলে মন্ত্রমুগ্ধের মতো উপভোগ করেন।

পরবর্তী পর্বে ক্লাবের নতুন কমিটির কর্মকর্তাদের পরিচয় করিয়ে দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাশেদ আহমেদ। এসময় নির্বাচন কমিশনের দুই সদস্য শিশুক সেলিম এবং জাহেদ শরিফও মঞ্চে ছিলেন।

কর্মকর্তারা হলেন: সভাপতি-লাবলু আনসার, সিনিয়র-সহ-সভাপতি মীর ই শিবলী, সহ-সভাপতি-আকবর হায়দার কিরণ, সাধারণ সম্পাদক-শহিদুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক রিজু মোহাম্মদ, কোষাধ্যক্ষ-মো. আবুল কাশেম, সাংগঠনিক সম্পাদক-কানু দত্ত, প্রচার সম্পাদক-শাহ ফারুকুর রহমান এবং নির্বাহী সদস্যরা হলেন : শিব্বীর আহমেদ,ম আজিমউদ্দিন অভি, ফারহানা চৌধুরী এবং তপন চৌধুরী।

দশকপূর্তি উপলক্ষে প্রকাশিত স্মরণিকা ‘অবিচল’ এর মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা। এরপরই প্রেসক্লাবের ওয়েবসাইটের উদ্বোধন করা হয় বিপুল করতালির মধ্যে।

দ্বিতীয় পর্বে প্রেসক্লাবের সম্মাননা ক্রেস্ট দেওয়া হয় সমাজকর্মী ও শিল্পপতি জহিরুল ইসলাম (এবিএইচ ফার্মা), ব্যবসায়ী ও মূলধারার রাজনীতিক আক্তার হোসেন বাদল (আরএলবি গ্রুপ অব কর্পোরেশন), আর্ত মানবতার সেবায় নিয়োজিত ‘আব্দুল কাদের মিয়া ফাউন্ডেশন’ এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও কাদের মিয়া, কমিউনিটি উন্নয়নে নিবেদিত পিপলএনটেক এর সিইও আবুবকর হানিপ এবং ঢাকাস্থ জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিনকে।

এরপর প্রেসক্লাবের সেরা সদস্য হিসেবে বিশেষ সম্মাননা ক্রেস্ট দেওয়া হয় চ্যানেল আই-উত্তর আমেরিকার সিইও রাশেদ আহমেদকে। দশকপূর্তি উৎসব আয়োজনে বিশেষ সহায়তার জন্যে সম্মাননা ক্রেস্ট দেওয়া হয় ফটো সাংবাদিক শাহ জে চৌধুরীকে।

প্রেসক্লাবের মঞ্চে মুক্তিযোদ্ধারা।

বাংলাদেশি আমেরিকানদের মধ্য থেকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ক্লাবের বিশেষ সম্মাননা ক্রেস্ট দেওয়া হয় জর্জিয়া অঙ্গরাজ্য সিনেটর শেখ রহমান (ডেমক্র্যাট), নিউ হ্যামশায়ার স্টেট রিপ্রেজেনটেটিভ আবুল খান (রিপাবলিকান), হাডসন সিটির কাউন্সিলম্যান শেরশাহ মিজান  (ডেমক্র্যাট), পেনসিলভেনিয়া স্টেটের মিলবোর্ন বরোর ভাইস প্রেসিডেন্ট নূরল হাসান (ডেমক্র্যাট), কাউন্সিলম্যান মুনসুর আলী  (ডেমক্র্যাট), আপারডারবি সিটি কাউন্সিলম্যান শেখ সিদ্দিক  (ডেমক্র্যাট)। এসব ক্রেস্ট বিপুল করতালির মধ্যে হস্তান্তর করেন মুক্তিযোদ্ধাগণ। এরা হলেন কন্ঠযোদ্ধা শহীদ হাসান, বীর প্রতিক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব:) মঞ্জুর আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা খান মিনাজ, রেজাউল বারি, আবুল বাশার চুন্নু, নূরল ইসলাম, মিজানুর রহমান চৌধুরী, মোজাম্মেল হক, রুহুল আমিন, আব্দুল আওয়াল, সানাউল্লাহ, ফিরোজুল ইসলাম পাটোয়ারি, কামরুজ্জামান, খোরশেদ আনোয়ার বাবলু, শহিদুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক, মলিন নাথ, দেবেন্দ্র চন্দ্র দাস এবং এমদাদুল হক।

মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট নেওয়ার পর সকলেই নিজেদেরকে সৌভাগ্যবান হিসেবে উল্লেখ করেন। প্রবাসে এই প্রথম মূলধারায় বাংলাদেশি-আমেরিকানদের সম্মাননা জানানো হলো মুক্তিযোদ্ধাদের মাধ্যমে- এজন্যে উপস্থিত সকলেই প্রেসক্লাবের প্রশংসা করেন। সকলে দাঁড়িয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানান।

পরবর্তীতে শুরু হয় আলোচনা অনুষ্ঠান। সূচনা ঘটান ক্লাবের সভাপতি লাবলু আনসার।

উপস্থিত সকলের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে লাবলু বলেন, “২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ক্লাবের কর্মকান্ড সবসময়ই আবর্তিত হয়েছে সর্বস্তরের প্রবাসীদের সাথে নিয়ে। একইসাথে বাংলাদেশকে বহুজাতিক এই সমাজে আরো বলিষ্ঠভাবে উপস্থাপনেও সক্রিয় রয়েছেন ক্লাবের সদস্যরা। সামনের দিনেও সে চেতনায় অব্যাহত থাকবে নতুন কমিটির দায়িত্ব পালনের প্রতিটি পর্বে।”

অনুষ্ঠানে নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের কন্সাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা তার বক্তব্যে বাংলাদেশের এগিয়ে চলার ঘটনাবলি অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে নিজ নিজ গণমাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচারে এই ক্লাবের সকল সদস্যের ভূমিকার প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, “জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বাঙালিকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন। সেই স্বপ্নের পথে হেঁটেই মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছে এবং দেশ ও প্রবাসে সকলে আজ বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সুখ ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ রচনায় ঐক্যবদ্ধ।”

ঢাকা থেকে আসা জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া আজ বহুমুখী চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন।  এমন অবস্থার মধ্যেও নিউ ইয়র্কসহ আমেরিকায় কর্মরত সাংবাদিকরা বাংলাদেশের ইতিবাচক ইমেজ উপস্থাপনে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করছেন। আশা করছি সকল প্রবাসীকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করতে তাদের লেখনী আরও সোচ্চার থাকবে। একইসাথে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের ইমেজকে আরও মহিমান্বিত করতেও এই ক্লাবের সদস্যরা সচেষ্ট থাকবেন।”

প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য নীনা আহমেদ বলেন, “দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার মধ্য দিয়ে একটি সমাজকে সঠিকভাবে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব। সে কাজটি করছেন এই প্রেসক্লাবের সদস্যরা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেস ফ্রিডমের সুযোগ নিয়ে তারা বাংলাদেশি-আমেরিকানদের মূলধারায় সম্পৃক্ত হতে আরও উৎসাহ জোগাবেন বলে আশা করছি।”

অতিথিদের সাথে প্রেসক্লাবের সম্মাননাপ্রাপ্তরা।

স্টেট সিনেটর জন ল্যু বলেন, “নতুন অভিবাসী হিসেবে বাংলাদেশিরা সর্বত্র প্রশংসিত হচ্ছেন। আর এই ধারাকে আরও বেগবান করতে গণমাধ্যমগুলোর ভূমিকা অপরিসীম।”

স্টেট সিনেটর শেখ রহমান বলেন, “প্রেসক্লাবের সদস্যগণের ভূমিকা যতো স্বচ্ছ হবে ততোই লাভবান হবে কমিউনিটি। বহুজাতিক এ সমাজে নিজেদের অধিকার সুসংহত করার ক্ষেত্রেও গণমাধ্যমের ভূমিকার বিকল্প নেই।”

স্টেট অ্যাসেম্বলির সদস্য ক্যাটালিনা ক্রুজ বলেন, “বাংলাদেশিরা আমার খুব কাছের মানুষ। তাদের সমর্থনেই আমি গত নির্বাচনে বিরাট বিজয় পেয়েছি। বাংলাদেশি গণমাধ্যমগুলোও অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে প্রকারান্তরে অভিবাসী সমাজকেই এগিয়ে নেওয়ার পথ সুগম করেছেন।”

ডেমক্র্যাটিক পার্টির কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট লিডার অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী বলেন, ‘কমিউনিটিকে এগিয়ে নেওয়ার মধ্য দিয়ে আমেরিকান স্বপ্ন পূরণের ক্ষেত্রে বাংলা ভাষার গণমাধ্যমগুলোর ভূমিকা অপরিসীম। তারা নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। এজন্যে আমি নতুন কমিটিসহ সকলকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।”

সমাজকর্মী ও শিল্পপতি মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, “নতুন সমাজে অভিষিক্ত হওয়া থেকে এগিয়ে চলার প্রতিটি ক্ষেত্রেই বাংলা ভাষার গণমাধ্যমগুলো বিশ্বস্ত অভিভাবকের ভূমিকায় রয়েছে। বিশেষ করে এই প্রেসক্লাবের প্রায় প্রতিটি সদস্য-সাংবাদিকই সকল প্রবাসীর প্রিয়পাত্রে পরিণত হয়েছেন ওই একই কারণে।”

“বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তাই প্রবাসীরাও যাদে নির্ভয়ে নিজ এলাকায় বিনিয়োগে এগিয়ে যান-সেই গণজাগরণ সৃষ্টি করতে হবে সংবাদপত্রের মধ্য দিয়ে”, বলেন এই শিল্পপতির।

কমিউনিটি লিডার ও মূলধারার ব্যবসায়ী আকতার হোসেন বাদল ক্লাবের সর্বস্তরের সদস্য-কর্মকর্তাদেরকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “সাদাকে সাদা বলার ক্ষেত্রে এদেশে কোনও সমস্যা নেই। তাই গণমাধ্যমের কাছে সকলেরই প্রত্যাশা অনেক বেশি। ইতিমধ্যে এই ক্লাবের সদস্যরা বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার মাধ্যমে কমিউনিটির আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছেন। সামনে দিনে তারা আরও দায়িত্ববান ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন বলে আশা করছি।”

মূলধারার শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা এবং ‘অ্যালায়েন্স অব সাউথ এশিয়ান-অমেরিকান লেবার’ এর জাতীয় প্রেসিডেন্ট মাফ মিসবাহ উদ্দিন বলেন, “কমিউনিটির বয়স অনেক হয়েছে। কমিউনিটিভিত্তিক জনসংখ্যাও বেড়েছে। তাই এখন সময় হচ্ছে  সকলকে ঐক্যবদ্ধ হবার। প্রতিটি সিটি, স্টেট এবং জাতীয় পর্যায়ের নির্বাচনে সকলকেই সোচ্চার হতে হবে। আমেরিকান স্বপ্ন পূরণের ক্ষেত্রে মূলধারায় আরোহনের বিকল্প নেই।”

শুভেচ্ছা বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে। সেই ধারায় সকলকে একীভূত রাখতে গণমাধ্যমের ভূমিকার বিকল্প নেই। সে দায়িত্বটি পালন করছেন নিষ্ঠার সাথে এই ক্লাবের সকলে। আমি তাদেরকে অভিবাদন জানাচ্ছি।”

সমাজকর্মী ও ব্যবসায়ী এবং যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, “পেশাদারিত্বে এই ক্লাবের সদস্যগণের খ্যাতি সর্বত্র। শুধু তাই নয়, নানা সংকট ও সমস্যায় তারা দিক-নির্দেশনাও দিচ্ছেন। কমিউনিটিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে সাংবাদিকদের আরো সোচ্চার থাকা জরুরি।”

 

প্রেসক্লাবের দশকপূর্তি উৎসবে নৃত্য-নাট্য পরিবেশনা।

‘পিপলএনটেক’ এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে প্রবাসে বাংলা ভাষার পত্রিকাগুলোর প্রশংসা করেন। আবু হানিপ বলেন, “প্রত্যেকটি সংবাদপত্রই কমিউনিটিকে দিক-নির্দেশনা দিচ্ছে। কোনটি ভাল সেটিও অবহিত করছে। কোথায় গেলে প্রত্যাশিত সার্ভিস পাওয়া যাবে-সেটিও নতুন অভিবাসীরা জানতে সক্ষম হচ্ছেন নিজ ভাষার গণমাধ্যমে।”

রাষ্ট্রদূতের প্রতিনিধি ও বাংলাদেশ মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি নূরএলাহি মিনা বলেন, “বহুজাতিক এই সমাজে বাংলাদেশিদের অবস্থান আরও দৃঢ় করতে গণমাধ্যমসমূহ নিষ্ঠার সাথে কাজ করছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিতে সুদূর এই প্রবাসে গণমাধ্যমগুলো ইতিমধ্যে অনেকটা স্বাক্ষর রেখেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে প্রবাসীদের উত্থানের পথিকৃত মোর্শেদ আলমও প্রেসক্লাবের সদস্যদের অভিনন্দন জানিয়ে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।

কংগ্রেস সদস্য গ্রেস মেং-এর প্রতিনিধি জর্দান গল্ডেস ক্লাবের নতুন কমিটির সকলকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “অভিবাসী সমাজে বাংলাদেশীদের দিক-নির্দেশনা দিচ্ছে বাংলা ভাষার গণমাধ্যমগুলো। এই ধারা অব্যাহত থাকলে কেউই ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না বাংলাদেশিদেরকে।”

পুরো অনুষ্ঠানের উপস্থাপনায় ছিলেন প্রবাসের জনপ্রিয় উপস্থাপক ফাতেমা সাহাব রুমা।

শেষ পর্বে ছিল বাংলাদেশের খ্যাতনামা কন্ঠশিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদীকে ‘আজীবন সম্মাননা’ প্রদানের পর্ব। এটি উপস্থাপনা করেন ক্লাবের সদস্য শারমিন রেজা ইভা।

প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে পাশে নিয়ে সম্মাননা ক্রেস্ট সৈয়দ আব্দুল হাদীকে দেন প্রবাসে বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম পৃষ্ঠপোষক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। সৈয়দ আব্দুল হাদীর গানের মধ্য দিয়ে মধ্যরাতে এই উৎসবের সমাপ্তি ঘটার আগে সঙ্গীত পরিবেশন করেন কণ্ঠযোদ্ধা শহীদ হাসান এবং বাউল শিল্পী শাহ মাহবুব।

দশকপূর্তির দৃষ্টিনন্দন এ অনুষ্ঠানে বিশিষ্টজনদের মধ্যে আরও ছিলেন কংগ্রেসসদস্য আলেক্সান্দ্রিয়া ওকাসিয়ো-করটেজের ডেপুটি ডিস্ট্রিক্ট ডিরেক্টর নওরীন আকতার, ব্যবসায়ী ফজলুল হক, দেশি সিনিয়র সেন্টারের পরিচালক মিসবা আবদীন, ওয়েলকেয়ারের সিনিয়র ম্যানেজার সালেহ আহমেদ, ডেমক্র্যাটিক পার্টির তৃণমূলের সংগঠক মাজেদা এ উদ্দিন, ফখরুল আলম এবং ফাহাদ সোলায়মান, লেখক-কলামনিস্ট ফকির ইলিয়াস এবং ফারহানা ইলিয়াস তুলি, ফোবানার চেয়ারম্যান মীর এইচ চৌধরী, নির্বাহী সচিব জাকারিয়া চৌধুরী, সদস্য-সচিব আবির আলমগীর, বিএনপি নেতা মাহফুজুল মাওলা নান্নু, গোলাম ফারুক শাহীন, এম এ বাতিন, পারভেজ সাজ্জাদ, পারভেজ সাজ্জাদ, আবু তাহের, কমিউনিটি লিডার কামাল আহমেদ, কাজী নয়ন, আব্দুর রব মিয়া, রহিম হাওলাদার, জেবিবিএর সভাপতি দিদারুল ইসলাম, পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হারুন ভূইয়া, সেক্রেটারি কামরুজ্জামান কামরুল, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কামরুজ্জামান বাচ্চু, মোহাম্মদ হোসেন খান, আলী ইমাম, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাজী এনাম, মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নূরল আমিন বাবু, আওয়ামী লীগ নেতা খোরশেদ খন্দকার, আশরাফুজ্জামান, মোর্শেদা জামান, সাখাওয়াত বিশ্বাস, জ্যামাইকা ফ্রেন্ডস সোসাইটির সেক্রেটারি ইফজাল চৌধুরী, কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার শাহজাহান শেখ, মোহাম্মদ আলী, সিপিএ ইয়াকুব এ খান, নর্থ বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের আতোয়ারুল আলম, রফিকুল ইসলাম, আবুল কাশেম, রকিবুজ্জামান তনু, আলীম খান আকাশ, শুভ রায় এবং রাসেল রহমান।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!