নিউ ইয়র্ক কন্সুলেটের বর্ষবরণে বাঙালি সাজে মার্কিন অ্যাসেম্বলি সদস্য

যুক্তরাষ্ট্রে নিউ ইয়র্ক কন্সুলেট আয়োজিত বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠানে আবহমান বাংলার সংস্কৃতির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করতেই মার্কিন রাজনীতিক এবং নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের অ্যাসেম্বলি সদস্য ক্যাটলিনা ক্রুজ এসেছিলেন শাড়ি পরে।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 April 2019, 03:29 PM
Updated : 27 April 2019, 03:29 PM

স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ দূতাবাসের ওই বর্ষবরণ আয়োজনে আরও কয়েকটি দেশের শীর্ষ কূটনীতিকরাও এসেছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশিদের সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ করে।

বর্ষ বরণ অনুষ্ঠান উপলক্ষে কন্সুলেটের মিলনায়তনটি আবহমান বাঙালি সংস্কৃতির নানা উপাদান- পাল তোলা নৌকা, ঢাক-ঢোল, একতারা, নকশী কাঁথা, ডালা-কুলা, তাল পাতার পাখা, মাটির পুতুল ইত্যাদি দিয়ে সাজানো হয়।

বাংলা নতুন বছর ২০২৬ সনকে বরণের ব্যতিক্রমী এ আয়োজনে বাঙালিদের সাথে সংহতি প্রকাশের জন্যে কলম্বিয়ান-আমেরিকান ক্যাটালিনা ক্রুজের এ উপস্থিতির মধ্য দিয়ে কন্সাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসার বহুমাত্রিক কূটনৈতিক তৎপরতারই বহির্প্রকাশ ঘটেছে বলে অনুষ্ঠানে আগতরা উল্লেখ করেছেন।

নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের অ্যাসেম্বলি সদস্য ক্যাটালিনা ক্রুজ বক্তব্য দিচ্ছেন। পাশে রাষ্ট্রদূত ও কন্সাল জেনারেল।

এর আগে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্য গভর্নর কর্তৃক ২৬ মার্চকে নিউ ইয়র্কে ‘বাংলাদেশ ডে’ হিসেবে পালন করার ঘোষণাপত্র সংগ্রহ করেন এই কন্সাল জেনারেল। এর পাশাপাশি কুইন্স বরো প্রেসিডেন্ট মেলিন্ডা কার্টজের দেওয়া একটি বিশেষ সম্মাননা পত্রও পেয়েছেন সাদিয়া ফয়জুননেসা।

কন্সুলেটের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারির কণ্ঠে ‘এসো হে বৈশাখ’ গানের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠানে শ্রীলংকায় সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের আত্মার শান্তি, আহতদের দ্রুত আরোগ্য এবং সন্ত্রাসীদের প্রতি ধিক্কার জানিয়ে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করা হয়।

স্বাগত বক্তব্যে কন্সাল জেনারেল সাদিয়া বাংলা নতুন বছরের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট উপস্থাপন  এবং বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্য, বর্ষবরণের মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ইউনেস্কোর  ‘মানবজাতির বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য’ হিসেবে স্বীকৃতি দানের কথা উল্লেখ করে বলেন, এটি বাংলাদেশের নববর্ষ উদযাপনে একটি নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম কনসুলেট জেনারেলকে একখণ্ড বাংলাদেশ হিসেবে উল্লেখ করেন।

বৈশাখী উৎসবে সঙ্গীত পরিবেশন করেন তাজুল ইমাম।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ ধারণ করে ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।“

এছাড়াও শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য দেন নিউ ইয়র্ক স্টেট সিনেটর জন ল্যু এবং সিটি কাউন্সিলম্যান কস্তা কনস্টাটিনিডেস।

অনুষ্ঠানে বাঙালি আমেজে নৃত্য-গীতের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা-চিত্রশিল্পী তাজুল ইমামের পরিবেশনা সকলকে মুগ্ধ করেছে। দিনভর বৃষ্টি সত্ত্বেও বিপুলসংখ্যক প্রবাসীর সমাগম ঘটায় সকলের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানান কন্সাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা।

বাঙালি রসনায় পূর্ণ বিভিন্ন আইটেমের ডিনার পরিবেশনের মধ্য দিয়ে চমৎকার এ অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!