ছুটিতে যাওয়ার ১ সপ্তাহ আগে একদিন আমার বর বললেন যে, অফিসে ম্যানেজ করেছেন, আমরা যাবো মেলবোর্ন। সেই অনুযায়ী সাথে সাথে প্লেনের টিকেটও কেটে ফেলা হল আমাদের ৩জনের। আমাদের পারিবারিক এক বন্ধু ও তার পরিবার থাকেন মেলবোর্ন শহরে। তাদেরও জানিয়ে দিলাম আমরা আসছি। তারা সহ বেড়াবো। তারাও আমাদের মতো বেড়াতে খুব পছন্দ করেন, তাই আমরা আর এত গুগল সার্চ করলাম না।
আমাদের বেড়ানোর দায়িত্ব তাদের হাতেই দেওয়া হল। দেখতে দেখতে যাওয়ার দিন চলে আসলো। ৩১ ডিসেম্বর দুপুর ১২টায় ছিল আমাদের ফ্লাইট। দুপুরে দেড়টার দিকে পৌঁছে গেলাম মেলবোর্ন এয়ারপোর্ট। উনারা এসে আমাদের নিয়ে গেলেন। আমার কাছে সিডনি থেকে অনেকটা মডার্ন শহর মনে হল মেলবোর্ন শহর। অনেক নতুন বড় বড় বিল্ডিং দেখা গেল। অনেক গোছানো একটা শহর।
আমরা যাওয়ার পথে উঠলাম ফিলিপ আইল্যান্ড চকলেট ফ্যাক্টরি বা panny's amazing world of chocolate. দারুণ একটা জায়গা। প্রথমে ঢোকার পথে মনে হবে এটা শুধু একটা চকলেটের দোকান। কিন্তু এটার ভিতরে অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য দারুণ বিস্ময়। প্রথমে দোকানটা ঘুরে দেখলাম। পাশে আছে কফি শফ। এরপরে কাউন্টারে গিয়ে টিকেট কাটতে হয় কারখানার ভিতরে যাওয়ার জন্য। ভিতরে যে একটা চকলেট কারখানা আছে বাহির থেকে তা বোঝার উপায় নেই।
তারপর চকলেট বানানোর মেশিন সাজানো ছিল সব একসাথে। ছিল এক টন চকলেট চ্যালেঞ্জ। এক টনের চকলেট রাখা, সেটা নিচে থেকে উপরে তুলতে হবে,যা একসাথে বিশ জন অন্যদিকে দাঁড়ালেও তোলা যাবেনা। আরো ছিল চকলেট দিয়ে সাজানো ঘর (সেলফি রুম), যেখানে পরিবারের সবাই মিলে একসাথে ছবি তুলতে পারবে। এরপরে বাইরে গিয়ে নিজের ইমেইল আইডি দিয়ে সাইন ইন করলে সেই ছবি ইমেইলে চলে আসবে।
তারপর গেইম জোন। আমরা যখন টিকেট কাটি তখন টিকেট এর সাথে জন প্রতি ৪টা করে কাঠের বল দিয়েছিল। সেগুলো দিয়ে গেইমগুলো খেলতে হয়। জিতলে বলটা বেরিয়ে আসে। আর টিকেট পাঞ্চ করে খেলতে হয়। আমাদের তিন জনের বারোটা বল ছিল। আমরা সাতটা জিতলাম। সেটা অনেক আনন্দ নিয়ে খেললো আমার মেয়ে। এরপরে ছিল আরো বিস্ময়। বড় চকলেটের ঝরনা ছিল দেখার মতো। এটা হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় চকলেট এর ঝরনা। পাঁচ মিনিট পর পর চকলেট পড়ছিল বৃষ্টির মতো করে। যেন চকলেটের বৃষ্টি হচ্ছে। আরো অনেক কিছু দেখার আছে। আমাদের সময় কম বলে এসব দেখেই বেরিয়ে এলাম। বের হওয়ার পথে আমরা কাউন্টারে বল জমা দিলে আমাদের সাতটা বল চকলেট দিল।
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |