পাশাপাশি বাঙালিদের নির্বিচারে হত্যা, নির্যাতন, সহায়-সম্পদে অগ্নিসংযোগের জন্য পাকিস্তানকে প্রকাশ্যে দু:খ প্রকাশ এবং ক্ষমা প্রার্থনা করার দাবিও জানানো হয়েছে স্মারকলিপিতে।
স্থানীয় সোমবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে স্মারকলিপিটি হস্তান্তর করেন মুক্তিযোদ্ধা দম্পতি আমিনা বেগম মিনা এবং আজিজুল হক বকুল।
স্মারকলিপিতে স্বাক্ষরকারীর সকলেই সিরাজগঞ্জের অধিবাসী। সিরাজগঞ্জ থেকেই নিউ ইয়র্কে নিজ খরচে এসেছেন এই মুক্তিযোদ্ধা দম্পতি।
স্মারকলিপিতে বীরাঙ্গনাদের সুন্দরভাবে দিনাতিপাতের জন্যে প্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণের আবেদনও করা হয়েছে। এতে বলা হয়, ‘দেশমাতৃকার মুক্তির জন্যে নিজের সর্বস্ব খুইয়েছেন যে নারীরা তারা খেয়ে, না খেয়ে সমাজে অপাঙ্ক্তেয় হিসেবে বসবাস করছেন। অথচ তারাও বীর মুক্তিযোদ্ধা। যে সময়ে এহেন জঘন্য অপকর্ম সংগঠিত হয়েছে, তখনও এ বিশ্ব সভ্য ছিল। এখনো সভ্য সমাজেই বাস করছি। এখন যদি শিশু হত্যা ও নারী ধর্ষষের বিচার হয়, সেদিনের ধর্ষণের বিচার হবে না কেন? আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতেই পাকিস্তানি হায়েনাদের বিচার করতে হবে। তাহলেই বিরঙ্গনারা শান্তি পাবেন।“
স্মারকলিপির কপি দেয়া হয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাকেও।
স্মারকলিপিতে স্বাক্ষরকারী বীরাঙ্গনারা হলেন- আছিয়া বেগম, খোদেজা বেগম, কমলা বেওয়া, আয়মনা বেগম, আয়েশা বেগম, করিমন বেগম, জয়গুন বেগম, নূরজাহান বেগম, বানু খাতুন, রাহেলা বেওয়া, সামিনা খাতুন, সুরাইয়া খাতুন, হামিদা খাতুন, হাসিনা বেগম, মাহেলা বেগম, হাজেরা খাতুন, রহিমা বেওয়া প্রমুখ।
এ সময় মুক্তিযোদ্ধা আমিনা বেগম মিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘জাতিরজনকের কন্যা শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ ফিরেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়। সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হয়েছি মুক্তিযোদ্ধারা। প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগন্য হলেও মাসিক ১০ হাজার টাকা করে ভাতা পাচ্ছি। বছরে কয়েকটি বোনাসও দেয়া হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধাদের। বীরঙ্গনাদেরকেও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। যা ক’বছর আগেও ছিল অকল্পনীয়।“
মুক্তিযোদ্ধা মিনা অবশ্য দু:খের সাথে উল্লেখ করেন, “জননেত্রী শেখ হাসিনার আমলেই মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের কোটা বাতিল করা হয়েছে। এটি মেনে নিতে পারছি না। আশা করছি বঙ্গবন্ধুর কন্যা এটি পুনর্বিবেচনা করবেন।“
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ আহমেদ, সহ-সভাপতি আবুল বাশার চুন্নু, নির্বাহী সদস্য লাবলু আনসার এবং সানাউল্লাহ।
মুক্তিযোদ্ধা মিনা বলেন, “জাতিসংঘ এক সময় বাধ্য হবে পাক হায়েনাদের বিচার করতে। সে পর্যন্ত আমরা সোচ্চার থাকবো।“
এসময় মুক্তিযোদ্ধা মিনা তার লেখা বাংলাদেশের ১০০ বীরাঙ্গনার পরিচিতি সম্বলিত “মুক্তিযুদ্ধের কালো অধ্যায়/ঠিকানা’৭১” গ্রন্থটি যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামকে উপহার দেন।
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |