নৌকার প্রচারণায় ইউরোপের আওয়ামীপন্থি প্রকৌশলীরা

জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ইউরোপজুড়ে বাঙালি কমিউনিটিতে শুরু হয়েছে নানা তর্ক-বির্তক ও আলোচনা। নিজ দলের প্রচরাণায় নেমেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোভাবাপন্ন প্রবাসী প্রকৌশলীরাও।

সুইজারল্যান্ড প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Dec 2018, 04:00 PM
Updated : 23 Dec 2018, 04:15 PM

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষে জাতীয় নির্বাচন প্রচারণায় বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী ও বিশেষজ্ঞ পরিষদ, ইউরোপ তার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে তৃতীয় বারের জন্য নির্বাচিত করতে যুক্তি তুলে ধরছেন প্রবাসীদের কাছে।  সোশাল মিডিয়ায় বিভিন্ন পেইজ খুলে দেশবাসীকে নৌকায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারাকে সমুন্নত রাখার সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ করেছেন তারা।

সুইডেন প্রবাসী মাহফুজুর রহমান ভূঁইয়া দেশটির টেলিকম কোম্পানি টেলিয়াতে প্রধান আইসিটি আর্কিটেক্ট হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। পাশাপাশি তিনি বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী ও বিশেষজ্ঞ পরিষদ ইউরোপ শাখার সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

ভোটকে সামনে রেখে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের  জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতি আজ এক অগ্নি পরীক্ষার সম্মুখীন– একদিকে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট, অন্যদিকে স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি বিএনপি এবং দোসর জামায়াত নিয়ে ঐক্যজোট।” 

“৩০ কোটি শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধরে রাখতে  জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার তৃতীয়বারের জন্য দরকার।” গত দশ বছরে যুব সমাজ এবং নারীদের ভাগ্য উন্নয়নে এই সরকারের অবদান অপরিসীম। এই সরকার আবার ক্ষমতায় আসলেই সম্ভব হবে ২০২১ সালের মধ্যে যুবকদের জন্য ১০ মিলিয়ন নতুন কর্মসংস্থান, যা থেকে সম্ভব হবে সফটওয়ার খাতে ৫ বিলিয়ন ডলার এবং পোশাক শিল্প থেকে ৫০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় সম্ভব হবে। পাশাপাশি সম্ভব হবে ২০২৪  সালের মধ্যে একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে পূর্ণ স্বীকৃতি অর্জন।”

সুইডেনে কর্মরত আরেক প্রবাসী প্রকৌশলী হেদায়েতুল ইসলাম শেলী। যিনি ইরিকসন কোম্পানি আইটি বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী ও বিশেষজ্ঞ পরিষদ, ইউরোপ শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের রাজনীতি এবং প্রবাসীদের ভাবনা এই প্রেক্ষিতে প্রশ্নের কোনও অবকাশ নেই। বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সূচনালগ্ন থেকে প্রবাসীদের বিশেষ অবদান রয়েছে দেশিয় রাজনৈতিক মতামত বিকাশের এই সুদীর্ঘ পথে। আসছে নির্বাচনে আবারও আমরা বরাবরের মত নড়েচড়ে বসেছি আরও একটি সফল নির্বাচন দেশবাসীর সাথে সুদূর থেকে প্রত্যক্ষ করবো বলে।”

“শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ যতবার সরকার গঠন করেছে দেশবাসী বছরে এগিয়েছে এক দশকের উন্নতির সেতুর সমপরিমাণ। আবারও আমাদের ভোটে এই সরকার দেশের নেতৃত্বে আসবে ইনশাল্লাহ, এটা শুধু সময়ের ব্যাপার।”

নরওয়েতে কর্মরত প্রবাসী প্রকৌশলী এবং একই সংগঠনের ইউরোপ শাখার যুগ্ম সম্পাদক রুবায়েত বলেন, “অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য শেখ হাসিনার সরকারকে আবারও দরকার। অর্থনৈতিক মুক্তির অঙ্গিকার, শেখ হাসিনার সরকার।”

জার্মানির ইপ্রপ্লান সিভিল করসালটিংই ফার্ম এ ইন্টারন্যাশনাল প্রোজেক্ট ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত সংগঠনটির ইউরোপ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান বলেন, “গত ১০ বছর আওয়ামী লীগ সরকারের অবকাঠামো, ডিজিটালকরণ ও বিদ্যুৎ উন্নয়নসহ আরও অনেক ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা ছিল। দেশিয় প্রকৌশলী ও বিশেষজ্ঞদের সঠিকভাবে ব্যবহার করা এবং সেই সাথে প্রবাসী প্রকৌশলী ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ সরকার কাজে লাগাতে পেরেছে।

“আওয়ামী লীগ সরকার তরুণ ও অভিজ্ঞ সকল প্রকৌশলী ও বিশেষজ্ঞদের মধ্যে বাংলাদেশে নিজেদের মেধা ও মনন সঠিক ব্যবহারের বিশ্বাস স্থাপন করতে পেরেছে বলেই বলে আজ অনেক তরুণ প্রকৌশলী ও বিশেষজ্ঞরা প্রবাস থেকে দেশে ফিরতে শুরু করেছেন। একটি স্থিতিশীল রাজনৈতিক অবস্থা, একটি একটি সঠিক লক্ষ্য, একটি সঠিক নেতৃত্ব, একজন স্বপ্নদর্শী নেতা প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার নির্দেশে নিয়ে দেশ এগিয়ে চলছিল গত দশটি বছর, যেই সফলতা শহর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত সবাই ভোগ করছে।”

তিনি বলেন, “প্রবাস থেকে যখন দেখি আমাদের দেশ-মাতৃকা ভালো আছে, বিশ্বাস করুন, আমরা প্রবাসীরা শান্তিতে ঘুমাতে যেতে পারি । তবে এখনো অনেকগুলো কাজ অসমাপ্ত পড়ে আছে, যেই অসমাপ্ত কাজ কখনোই সম্পূর্ণ হবে না যদি স্বাধীনতাবিরোধীদের মদদদাতা বা দেশকে দুর্নীতির শীর্ষে নিয়ে যাওয়া কেউ যদি কোনও ষড়যন্ত্র করে আবারো রাষ্ট্রক্ষমতা আসে। একজন প্রবাসী বাংলাদেশি প্রকৌশলী হিসাবে চাই, দেশে উন্নয়নের ধারা বজায় থাকুক, দেশে শান্তি বজায় থাকুক, আর এই উন্নয়ন ও শান্তি শুধু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নৌকার বিজয়েই হতে পারে।”

সুইডেনে  সংগঠনটির প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক (আইসিটি)  মনির আহমেদ খান বলেন, “আইসিটি ক্ষেত্রের ডিজিটালাইজেশন এবং নতুন চাকরি তৈরির গতি বজায় রাখার জন্য হাসিনা সরকারকে আবারও দরকার”।

তিনি মনে করেন যে হাসিনা সরকার অব্যাহত রাখতে না পারলে খাদ্য উৎপাদনে স্বাবলম্বিতা হারাবে বাংলাদেশ।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!