আউটসোর্সিং নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পিপল এন টেকের বৈঠক

প্রযুক্তিখাতে বাংলাদেশের আউটসোর্সিং কর্মবাজার কীভাবে বাড়ানো যায় সে লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রে গোলটেবিল বৈঠক করেছে বাংলাদেশি মালিকানাধীন প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান ‘পিপল এন টেক’।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Oct 2018, 09:21 AM
Updated : 30 Oct 2018, 09:21 AM

স্থানীয় সময় শুক্রবার ওয়াশিংটন ডি.সিতে ‘বাংলাদেশে প্রযুক্তি ও মেধাভিত্তিক বিনিয়োগ’ শিরোনামে এ বৈঠক আয়োজনে সহায়তা করে প্যারিসভিত্তিক সংগঠন ‘ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ অর্গানাইজেশন’।

এতে বিশেষ বক্তা ছিলেন ‘ডিপ্লোমেটিক করেসপডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’ (ডিকাব) এর সভাপতি রেজাউল করিম লোটাস ও একই সংগঠনের সাবেক সভাপতি মাইনুল আলম।

মূল বক্তব্য দেন ‘পিপল এন টেক’ এর প্রতিষ্ঠাতা ও কার্যনির্বাহী আবু বকর হানিপ।

হানিপ বলেন, “প্রযুক্তি খাতে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে প্রতিবছর ভারত আয় করছে ১০০ বিলিয়ন ডলার। তাদের লক্ষ্যমাত্রা ৩০০ বিলিয়ন ডলার। সেখানে বাংলাদেশ বছরে আয় করছে এখন ৪০০ থেকে ৫০০ মিলিয়ন ডলার। ২০২১ সালের মধ্যে সরকার ব্যাপক পরিকল্পনার মাধ্যমে এটাকে ৫ বিলিয়ন ডলারে বাড়ানোর চেষ্টা করছে। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই আউটসোর্সিংয়ের বার্ষিক বাজার প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলার। সারাবিশ্বের বাজার ৪.৭ ট্রিলিয়ন ডলার।”

প্রযুক্তিখাত সম্প্রসারণ করে চতুর্থ বিপ্লব ঘটাতে সারা বিশ্বে যে প্রচারণা প্রয়োজন সে আলোকে হানিপ চারটি বিষয় উল্লেখ করেন।

এগুলো হচ্ছে- ১. বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোতে কর্মার্সিয়াল উইং এর মাধ্যমে আইটি বিষয়ক নিয়মিত র্কাযক্রম ছাড়াও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল ও বেসিসের সহায়তায় স্থায়ীভাবে আইটি বিষয়ক বিশ্ব মার্কেটিং পরকিল্পনা ও বাস্তবায়নের র্কাযক্রম পরিচালনা করা।

২. বহির্বিশ্বে আইটি আউটর্সোসিং  মার্কেটে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিক্রি এবং পরিচিতি বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশি আইটি পার্কগুলোতে বিদেশি ক্রেতা বা বড় প্রযুক্তি উদ্যোক্তাদের সক্রিয় উপস্থিতি নিশ্চিত করা। সেই সঙ্গে তাদেরকে সরকারি যে পরিকল্পনা অর্থাৎ ২০১৮ সালের মধ্যে ১০ লাখ প্রযুক্তি পেশাজীবি তৈরির প্রকল্প ব্যাখ্যা করা জরুরি। সেই আলোচনায় নারীর ক্ষমতায়ন বা এই প্রযুক্তি উদ্যোগে নারীদের ব্যাপক অংশগ্রহণের বিষয়টি ব্যাপকভাবে উল্লেখ করা জরুরি। নারী কর্মীরা যদি ব্যাপকভাবে প্রযুক্তিখাতে সক্রিয় হয়, তাহলে একদিকে বহির্বিশ্বে যেমন ইতিবাচক প্রচার পাবে, তেমনি নারীরা কর্মক্ষেত্রেও বেশি অবদান রাখতে পারবে। যৌথ আয়ের মাধ্যমে পারিবারিক সক্ষমতা অর্জন করতে পারবে

৩. বিদেশে সব সম্ভাবনাময় বাজারে অনিয়মিত সেমিনার বা অংশগ্রহণ ছাড়াও স্থায়ীভাবে নিয়মিত প্রতিনিধির মাধ্যমে মার্কেটিং অব্যাহত রাখা।

৪. যুক্তরাষ্ট্রে আউটসোর্সিং বাজারে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মার্কেটিং কার্যক্রম পরিচালনা নিশ্চিত করা। কারণ সমগ্র বিশ্বে আউটসোর্সিং খাতের ৪.৭ ট্রিলিয়ন ডলারের বাজার রয়েছে, যার ১ ট্রিলিয়ন ডলারের বাজার কেবল যুক্তরাষ্ট্রেই।

প্রযুক্তিবিদ আলিম জানান, গত ২৬ বছর ধরে তার প্রতিষ্ঠান সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে কাজ করছে। এই অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানকে বাংলাদেশের প্রযুক্তি কর্মবাজার বিকাশের পথে কাজে লাগানোর অনেক সুযোগ রয়েছে।

ভয়েস অব আমেরিকার সাংবাদিক আনিস আহমেদ বলেন, “আমি জেনেছি, বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৭০ ভাগই তরুণ এবং যাদের বয়স ৩৫ বছরের নিচে। এই তরুণ জনগোষ্ঠীকে যদি প্রযুক্তিখাতে সঠিকভাবে সক্রিয় করা যায় তাহলে বাংলাদেশ বদলে যেতে পারে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তিখাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ‘পিপল এন টেক’ প্রশিক্ষণ আর চাকরি সরবারহের যে ভূমিকা রাখছে, সেই ভূমিকা তারা দেশেও রাখতে পারে কিনা সেটি কর্তৃপক্ষের ভেবে দেখা উচিত।” 

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন ‘টেকনাফ এলএসসি’ এর প্রেসিডেন্ট ফয়সাল কাদের, রেদোয়ান চৌধুরী, অ্যান্থনি পিউস গমেজ, জাহিদ রহমান, সীমা খান, বদরুল খান, ইকবাল চৌধুরী, আবু সাঈদ মাহফুজ, মুশতাক আহমেদ, নাজির উল্লাহ, তাহমিদ রব, শরীফ মহসিন, প্রিয়লাল কর্মকার, আব্দুল আলী, সরোজ বড়ুয়া ও মোহাম্মদ আলমগীর।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!