বেলজিয়ামের চিঠি: আমার প্রিয় শিক্ষক

১৯৯৩ সালের এক কনকনে শীতের সকাল। অনেক ভয় আর স্বপ্ন নিয়ে হাজির হই সিলেট জেলার বিশ্বনাথ উপজেলার আশুগঞ্জ আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ে। ভর্তি হয়েছি ষষ্ঠ শ্রেণিতে।

আলম হোসেন, বেলজিয়াম থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Oct 2018, 09:18 AM
Updated : 6 Oct 2018, 09:18 AM

নতুন ক্লাসে একগুচ্ছ অপরিচিত সহপাঠীর ভিড়, নতুন নতুন শিক্ষকদের হৃদয়গ্রাহী পাঠদানের ভেতর দিয়ে চলতে থাকে আমার স্কুল জীবন। ভর্তির পর থেকেই স্কুলে শুরু হলো পুরনো শিক্ষকের বিদায় আর নতুন শিক্ষকের আগমন।

নতুন একজন স্যারের কথা বারবার উচ্চারিত হচ্ছিল, কারণ স্যার নাকি খুব ভালো! অবশেষে তাঁকে শ্রেণিশিক্ষক হিসেবে পাওয়ার সৌভাগ্য হলো। সেই শিক্ষক হলেন মাওলানা হোসাইন আহমদ চৌধুরী।

আমি প্রথম দেখায় বিস্মিত হয়ে যাই স্যারের অসম্ভব সুন্দর ব্যক্তিত্বপূর্ণ গলার স্বর শুনে। চমৎকার সাবলীল ভাষায় ক্লাসে স্যারের পাঠদান আমাকে দিন দিন স্যারের প্রতি আকৃষ্ট করতে থাকে। স্যার আমাদের ধর্ম পড়াতেন।

আজ জীবনের এতগুলো বছর পেরিয়ে গেলেও স্যারের সেই কথাগুলো ভুলিনি। স্যারের এই অশেষ কষ্ট এবং অন্য শিক্ষকদের আপ্রাণ প্রচেষ্টায় আমরা ১৯৯৮ সালে এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে সক্ষম হই। স্যার আমাদের মধ্যে পরিশ্রম, সততা, দেশপ্রেম আর চারিত্রিক উৎকর্ষ বিকাশের যে বীজ বপন করেছিলেন, তার ফল আজ আমরা ভোগ করছি।

বন্ধুরা সবাই খুব ভালো আছে। মাওলানা হোসাইন স্যারের মতো সাহসী, নির্ভীক, রুচিতে নান্দনিক এবং চরিত্রে ইস্পাতকঠিন শিক্ষক আজকের এই দিনে খুবই প্রয়োজন। পরিশেষে নগরবাউল জেমসের ভাষায় বলতে ইচ্ছা করে, ‘মানুষেরও যে আকাশের মতো হৃদয় থাকতে পারে, তাকে না দেখলে হয়তো আমার জানাই হতো না।’ বিশ্ব শিক্ষক দিবসে সালাম তোমায় গুরু।

পরম শ্রদ্ধার সঙ্গে আরও স্মরণ করছি আমার প্রিয় শিক্ষক-শিক্ষিকা মহোদয়দের, যাদের পরম স্নেহ ও ভালোবাসায় গুরুজনদের কাছ থেকে আমি শিখেছি এবং এখনো শিখছি। আমি শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। যারা আমাদের মাঝে নেই তাদের আত্মার শান্তি কামনা করছি, আমিন।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!