হত্যার শিকার নয়, ‘আত্মহত্যা’ করেছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আলভীন

লাশ উদ্ধারের তিন সপ্তাহ পর তদন্ত করে যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ায় বাংলাদেশি তরুণ আলভীন আহমেদ হত্যার শিকার নন, বরং ‘আত্মহত্যা’ করেছেন বলে জানিয়েছে সেখানকার পুলিশ।

রুমী কবির, জর্জিয়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 August 2018, 12:43 PM
Updated : 10 August 2018, 12:43 PM

আটলান্টার অদূরে লগানভিল শহরে গত ১৬ জুলাই ২৫ বছর বয়সী বাংলাদেশি তরুণ আলভীন আহমেদ নিখোঁজ হন। এর দুইদিনের মাথায় পেশায় ফার্মাসিস্ট আলভীনের মাথায় গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে আলভীনের মৃত্যু নিয়ে নানারকমের ধোঁয়াশা তৈরি হয়। এমনকি আলভীনের কাজের জায়গায় দুই মাইল দূরের গুইনেট কাউন্টি লেইক উদ্ধারকৃত লাশটি তারই কিনা তা নিয়েও সংশয় ছিল।  বাংলাদেশি কমিউনিটির বেশিরভাগ মানুষই মনে করছিলেন তাকে হত্যা করা হয়েছে। 

বুধবার তদন্তকারী পুলিশ ক্যাপ্টেন মাইকেল পিহেরা বলেন, আলভীন তার সেলফোনের অ্যাপের ডাটাসহ এমন কিছু ক্লু রেখে গেছেন, যার মধ্য দিয়ে তার ‘আত্মহত্যা’র ব্যাপারটি আপাত দৃষ্টিতে হত্যাকাণ্ড বলে মনে হয়েছে।  কিন্তু আসলে তিনি নিজের পিস্তলের গুলিতেই আত্মহত্যা করেছে খুব বুদ্ধিমত্তার সাথে।

আত্মহত্যার আগে কেন তিনি এই রহস্যময়তা তৈরি করেছিলেন সে সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।

পিহেরা জানান, কিছুদিন আগে আলভীনের নামেই ওই পিস্তলটি ক্রয়ের রেকর্ড পাওয়া গেছে।  

এ আত্মহত্যার ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ক্যাপ্টেন পিহেরা বলেন, “আত্মহত্যার দিন কাজ থেকে ফেরার সময় আলভীন প্রথমে তার মায়ের জন্য কিছু জিনিসপত্র কেনে। তারপর সেই জিনিসপত্রের ব্যাগ নিয়েই নিজের গাড়ির দিকে যায়।  সুযোগ বুঝে তিনি তার ঘড়ি ও সেল ফোনটিকে বন্ধ করে একটি রেস্তোরাঁয় রেখে যান। এরপর গুইনেট কাউন্টি লেইকের দিকে হেঁটে যান।”

পুলিশ ওই এলাকার বিভিন্ন স্থানে থাকা সিসিটিভির ফুটেজ দেখে এটি নিশ্চিত হয়েছে বলে জানান তিনি।

মেডিকেল রিপোর্টে লেইকে পাওয়া মরদেহের মাথায় নিজ হাতে গুলি করার প্রমাণের পাশাপাশি ডিএনএ পরীক্ষায় মরদেহটি আলভীন আহমেদেরই বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে জানান পুলিশ ক্যাপ্টেন।

তিন ভাই বোনের মধ্যে আলভীন সবচেয়ে ছোট। কয়েকবছর আগে বাবা কামাল আহমেদের মৃত্যুর পর মা পারভীন রওশনই ছিলেন প্রবাসে তার অভিভাবক।

মৃত আলভীনের ভগ্নিপতি রাফী মাতবর বলেন, “চুপচাপ স্বভাবের আলভীনের মৃত্যুর আত্মহত্যার বিষয়টি এখনও বিশ্বাস হচ্ছেনা।”

বড়ভাই ক্যালভীন আহমেদ ছোট ভাইয়ের নিখোঁজ হওয়া থেকে শুরু করে তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত হওয়া পর্যন্ত পুরো সময় জুড়ে পরিবারের পাশে এসে দাঁড়ানোর কমিউনিটির সকলকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

আলভীনের পরিবার জানায়, শুক্রবার জুম্মার নামাজের লরেন্সভিলে জর্জিয়া ইসলামিক ইন্সটিটিউট মসজিদে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জর্জিয়া রাজ্যের সকল প্রবাসীদের জানাজায় অংশ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!