ফ্লোরিডায় নিহত আইয়ুবের দুই সন্তান বেঁচে গিয়েছিল স্কুলে গুলির ঘটনায়

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় গুলিতে নিহত বাংলাদেশি ব্যবসায়ী আইয়ুব আলীর দুই ছেলে মেয়ে পাঁচ মাস আগে মার্জোরি স্টোনম্যান ডগলাস হাই স্কুলে গুলির ঘটনায় প্রাণে বেঁচে গিয়েছিল।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 July 2018, 07:49 AM
Updated : 22 July 2018, 07:49 AM

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থেকে ২২ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রে আসা আইয়ুবের স্ত্রী ফারহানা এখন জানেন না, চার সন্তানকে নিয়ে প্রবাস জীবনে তিনি কীভাবে বেঁচে থাকবেন।

৬১ বছর বয়সী আইয়ুব আলী ফ্লোরিডা স্টেট যুবলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার নানুপুর গ্রামে তার পৈত্রিক বাড়ি।

গত দশ বছর ধরে ফ্লোরিডার নর্থ লডারডেল সিটির ১৬৯১ সাউথ স্টেট সড়কে ‘আন্ট মলি’জ ফুড স্টোর নামে একটি দোকান চালিয়ে আসছিলেন প্রবাসী এই বাংলাদেশি। গত মঙ্গলবার দুপুরে ওই দোকানেই মাথায় গুলি করে তাকে হত্যা করে এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবক।  

আইয়ুব আলী

মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, টাইরন ফিল্ডস জুনিয়র নামের ১৯ বছর বয়সী ওই কৃষ্ণাঙ্গ যুবক গত শুক্রবার পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। শনিবার আদালতে হাজির করা হলে বিচারক আটকাদেশ দিয়ে তাকে ব্রাউয়ার্ড কাউন্টি জেলে পাঠিয়েছেন।

টাইরন ফিল্ডস জুনিয়রের বিরুদ্ধে অদালতে হত্যা ও সশস্ত্র ডাকাতির দুটি অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে ফ্লোরিডার পুলিশ।

আইয়ুব আলীর দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ ঘাতকের সন্ধানে তিন হাজার ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। টাইরন ফিল্ডস জুনিয়রের ছবি এবং ওই ভিডিও প্রচার করে তাকে ধরিয়ে দিতে জনসাধারণের সহযোগিতাও চাওয়া হয়েছিল।

শুক্রবার দুপুরে দক্ষিণ ফ্লোরিডার একটি মসজিদে জানাজার পর আইয়ুব আলীকে স্থানীয় মুসলিম গোরস্তানে দাফন করা হয়। এর পরপরই টাইরন ফিল্ডস জুনিয়রের আত্মসমর্পণের খবর দেয় পুলিশ বিভাগ।

টাইরন ফিল্ডস

গত বছর পার্কল্যান্ড এলাকায় একটি বাড়ি কিনে তিন মেয়ে, এক ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে সেখানেই থাকছিলেন আইয়ুব। ওই বাড়িতে এখন কেবলই শোকের মাতম।

আইয়ুব আলীর বন্ধু কাজী হায়দার বলেন, আমেরিকায় থিতু হওয়ার স্বপ্ন পূরণের জন্য কঠোর শ্রম দিয়েছেন আইয়ুব। বড় মেয়ে ইলামা (১৭) ও ছেলে রাহাতকে (১৫) তিনি পড়াচ্ছিলেন পার্কল্যান্ডের মার্জোরি স্টোনম্যান ডগলাস হাই স্কুলে।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি সাবেক এক ছাত্র অ্যাসল্ট রাইফেল নিয়ে স্কুলে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ১৭ জনকে হত্যা করে। ইলামা আর রাহাত সেদিন কোনোক্রমে প্রাণে বেঁচে যায়।

এই পরিবারের বন্ধু মির্জা মোস্তাক বলেন, “মাত্র পাঁচ মাসের মাথায় ঘাতকের গুলিতে বাবার মৃত্যু তারা মেনে নিতে পারছে না। তারা দুজনেই যেন শোকে পাথর হয়ে গেছে। ফারহানা আর ছোট দুই সন্তান কেবলই কাঁদছে।”

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!