ততক্ষণে দেখি কেউ একজন পত্রিকায় ছাপা সেই ছবি ফেসবুকে আপলোড দিয়েছেন। ফেসবুকে অনেকেই সে ছবিতে মন্তব্য করছেন। লাইক করছেন। আমি বাকি থাকব কেন? আমিও সেটিতে লাইক দিলাম।
সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের সঙ্গে বিজয়ের উল্লাসের সময় স্থানীয় পত্রিকার ক্যামেরাবন্দি হন ডজনখানেক ক্রোয়েশিয়ান। এর মধ্যে ছিলেন আমার তিন সহকর্মী। প্রতিবার বিজয়ের পর সাইরেন ও গাড়ির হর্ন বাজিয়ে নেচে-গেয়ে-পিয়ে বিজয় উদযাপন করতে দেখা গেছে তাদের। আর এতে হিংসায় জ্বলছেন যেন জার্মানরা। এর মূল কারণ হচ্ছে, জার্মানদের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেওয়া।
আমার পরিচিত যে কয়জন জার্মানকে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, বিশ্বকাপ ফাইনালে তারা কোন দেশকে সমর্থন করবেন? উত্তরে সবাই বলেছিলেন- ‘ফ্রান্স’। ফাইনালে ফ্রান্স জেতার পর জার্মানরা উল্লাসও করেছেন, তবে বাসার ভেতরে বসে।
জার্মান এক পত্রিকার তথ্য মতে, আমি জার্মানির যে ছোট শহরটিতে থাকি, সেখানে ৭১১ জন ক্রোয়েশিয়ান আর ৩৫ জন ফরাসি নাগরিক বাস করেন। ফ্রান্স বিশ্বকাপ জেতার পরেও কোনো ফরাসিদের বিজয় উদযাপন করতে দেখা যায়নি এখানে।
আমরা সবাই যেটা ভেবেছিলাম, ফ্রান্সের সঙ্গে ফাইনালে হেরে ক্রোয়েশিয়ার বিজয় উদযাপন করার বা উল্লাস করার তো আর কোনো সুযোগ রইলো না। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, ফাইনাল খেলা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই চারিদিক থেকে সাইরেনের আওয়াজ আসতে লাগল। ভাবলাম, এ সুযোগে শহরের যে কয়জন ফরাসি বাস করছেন, এদের একনজর দেখে আসা যাক।
কিন্তু গিয়ে দেখি এরা ফরাসি নয়। ক্রোয়েশিয়ানরা দলে দলে এক জায়গাতে সমবেত হচ্ছেন ও উল্লাস করে বিজয় উদযাপন করছেন। বিশ্বকাপ ফাইনালে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করার বিজয় উদযাপন করছেন সবাই।
প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠেও ফ্রান্সের কাছে হেরে বিশ্বকাপ শিরোপা বঞ্চিত হয়েছে ক্রোয়েশিয়া। তবে পারফরমেন্স দিয়ে পুরো ফুটবল বিশ্বের হৃদয় জয় করেছে তারা। বাহবা কুড়িয়েছে সারা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদের। ক্রোয়েশিয়ান সহকর্মীদের সঙ্গে আমিও মিশে গেলাম বিজয়ের আনন্দ উৎসবে।
লেখক: প্রবাসী বাংলাদেশি
ইমেইল- md.naim@aol.com
এই লেখকের আরও লেখা
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |