ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অফিস ও বাসায় নিয়োজিত সরকারি কর্মীদের সঙ্গে অসদাচরণের পাশাপাশি স্ত্রী ও শাশুড়ির সঙ্গে তার আচরণ নিয়েও অভিযোগ উঠেছে।
এক যুগ আগে বাংলাদেশে ব্রিটিশ হাই কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাওয়া আনোয়ার চৌধুরী যুক্তরাজ্যের ওভারসিজ টেরিটরি কেইম্যান আইল্যান্ডসের গভর্নর হিসেবে গত মার্চে দায়িত্ব পালন শুরু করেছিলেন। তার বিরুদ্ধে কয়েকটি অভিযোগ তদন্তের কথা জানিয়ে সপ্তাহ দুয়েক আগে তাকে সাময়িকভাবে ওই দায়িত্ব থেকে সরানোর কথা জানায় যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সূত্রের বরাত দিয়ে ডেইলি মেইল বলছে, আনোয়ার চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তার সরকারি ভবনে নিয়োজিত কর্মীদের সঙ্গে চিৎকার করার পাশাপাশি তাদের ভয়-ভীতি দেখান। এক নারী কর্মীকে তিনি তার খোলা পিঠ ম্যাসাজ করে দিতে বলেছিলেন, যা তার কাছে ঠিক মনে হয়নি। তিনি বাসার কর্মীদের তার শিশু মেয়েকে দেখভাল করতে বলেছিলেন, তবে তাদের দায়িত্ব শুধু বাসা পরিষ্কার করা বলে এড়িয়ে যান তারা।
এছাড়া আনোয়ার চৌধুরী তার স্ত্রীর সঙ্গে ‘দুর্ব্যবহার’ করেছিলেন এবং মদ খাওয়া নিয়ে বৃদ্ধা শাশুড়ির সঙ্গে ঝগড়া করেছিলেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
কেইম্যান আইল্যান্ডস বিষয়ক ব্রিটেনের অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের সদস্যরা জানিয়েছেন, এই কূটনীতিকের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ সম্পর্কে তারা অবহিত।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আনোয়ার চৌধুরী ২০০৪ থেকে চার বছর ঢাকায় ব্রিটিশ হাই কমিশনার ছিলেন। ওই সময় সিলেটে হযরত শাহজালালের মাজার প্রাঙ্গণে তাকে হত্যা করতে গ্রেনেড হামলা হয়।
ওই ঘটনায় তিনজন নিহত হন, আনোয়ার চৌধুরীসহ ৪০জন আহত হন। সম্প্রতি ওই হামলার মূল আসামি হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নানসহ তিন জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
বাংলাদেশ থেকে ২০০৮ সালে ফিরে গিয়ে আনোয়ার চৌধুরী ২০১১ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ অফিসের ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউশন বিভাগের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে ওই দপ্তরের আরও কয়েকটি পদে কাজ করেন তিনি। ২০১৩ সালে তাকে রাষ্ট্রদূত করে পেরুতে পাঠানো হয়।
পেরুতে দায়িত্ব পালন শেষে কেইম্যান আইল্যান্ডসে গিয়েছিলেন আনোয়ার চৌধুরী।
কেইমেন আইল্যান্ডসের আয়তন মাত্র ২৬৪ বর্গকিলোমিটার। এর রাজধানী জর্জটাউন; লোকসংখ্যা ৬০ হাজার।
প্রশাসনিক কাঠামো অনুযায়ী, গভর্নরই এ দ্বীপের প্রধান। ব্রিটিশ সরকারের পরামর্শে রানি নিয়োগ দেন গভর্নরকে। আর গভর্নর দ্বীপের প্রশাসন চালাতে নিয়োগ দেন একজন প্রিমিয়ার ও একটি কেবিনেট।
বিশ্বের অন্যতম ফাইনানসিয়াল সেন্টার হিসেবে পরিচিত কেইম্যান আইল্যান্ডসের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড আবর্তিত হয়- ব্যাংকিং, হেজ ফান্ড, বিনিয়োগ এবং ক্যাপ্টিভ ইন্সুরেন্স ও সাধারণ কর্পোরেট কার্যক্রম ঘিরে।
কেইম্যান আইল্যান্ডস হল বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম ব্যাংকিং সেন্টার যেখানে ২৭৯টি ব্যাংক রয়েছে এবং এরমধ্যে ২৬০টি আন্তর্জাতিক ব্যবসার জন্য অনুমোদিত।
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |